প্রতীকী ছবি।
মরুরাজ্য রাজস্থানে মর্মান্তিক ঘটনা। জয়পুরের কাছে একটি গ্রামের কুয়ো থেকে উদ্ধার হল তিন গৃহবধূ ও দুই শিশুর মৃতদেহ। তিন মহিলার মধ্যে দু’জন সন্তানসম্ভবা ছিলেন। পরিবারের অত্যাচার, লাঞ্ছনা, মারধরে অতিষ্ঠ হয়েই তাঁরা চরম পথ বেছে নিয়েছেন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। যদিও তাঁদের জোর করে কুয়োয় ফেলা হয়ে থাকতে পারে, এই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। গ্রেফতার তিন মহিলার তিন স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি।
২৫ বছরের কালু মিনা, ২৩ বছরের মমতা মিনা এবং ২০ বছরের কমলেশ মিনা। ২০০৩-য়ে তিন জনেরই বাল্যবিবাহ হয় জয়পুরের কাছে ডুডু নামে একটি গ্রামে। মহিলাদের স্বামীরাও তিন ভাই। কালুর দুই সন্তান। একজনের বয়স চার বছর। অন্যজনের ২৭ দিন। মমতা ও কমলেশ— দু’জনেই ছিলেন সন্তানসম্ভবা।
অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই কালু, মমতা ও কমলেশের উপর অত্যাচার শুরু হয়। ক’দিন আগেই শ্বশুরবাড়ির লোকেদের মারধরে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এক বোন। তাঁদের কাছে নিত্য পণের টাকা আনার জন্য চাপ দেওয়া হত। শত অত্যাচার সহ্য করেও হাল ছাড়েননি তিন বোন। কারণ, তাঁরা জানতেন, এই অপমানের জবাব দেওয়া যাবে কেবল নিজের পায়ে দাঁড়ালে। সেই মতো সবার অলক্ষ্যে পড়াশোনা চালিয়ে যেতেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, মমতা পুলিশ কনস্টেবলের চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, কালু স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষে পড়তেন, আর কমলেশ একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন।
বুধবার থেকে তিন বোনের কোনও খোঁজ মিলছিল না। স্থানীয় থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও হয়েছিল। বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে একটি কুয়োয় পাঁচটি দেহ ভেসে ওঠে। পুলিশ মহিলাদের স্বামী ও শ্বশুর, শাশুড়ির বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেছে। সবাই গ্রেফতার হয়েছেন।
মৃত মহিলাদের বোন হেমরাজ মিনা বলেন, ‘‘ক’দিন আগেই কালুকে এমন মার মেরেছিল ওর স্বামী যে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। আমরা সবাই জানি, আমার বোনেদের খুন করা হয়েছে। বিয়ের পর থেকেই ওদের উপর পণের দাবিতে অত্যাচার করা হত। ওরা পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াক, সেটা স্বামীর বাড়ির লোকেরা চাইত না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy