Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

নীতি আয়োগের জলের রিপোর্ট জল মেশানো!

নীতি আয়োগের ওই তথ্যের উৎস নিয়েই এ বারে প্রশ্ন উঠে গেল। নীতি আয়োগের অবশ্য দাবি, তারা সব দিক খতিয়ে দেখেই রিপোর্ট তৈরি করেছে।

জলের জন্য হাহাকার। ছবি: পিটিআই।

জলের জন্য হাহাকার। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৯ ০০:৪৯
Share: Save:

আর মাত্র এক বছর। তার পরেই দিল্লি, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু-সহ দেশের ২১টি বড় শহরে ভূগর্ভস্থ জল প্রায় শেষ হয়ে যাবে বলে গত বছর জুনে এক রিপোর্টে জানিয়েছিল নীতি আয়োগ। আশঙ্কা, এর ফলে দেশের অন্তত ১০ কোটি মানুষ তীব্র জলসঙ্কটে পড়বেন। কিন্তু নীতি আয়োগের ওই তথ্যের উৎস নিয়েই এ বারে প্রশ্ন উঠে গেল। নীতি আয়োগের অবশ্য দাবি, তারা সব দিক খতিয়ে দেখেই রিপোর্ট তৈরি করেছে।
এক মার্কিন সংবাদপত্রের সাংবাদিকের দাবি অনুযায়ী, গত জুনে প্রকাশিত ওই রিপোর্টে নীতি আয়োগ তথ্যসূত্র হিসেবে বিশ্ব ব্যাঙ্ক, ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট এবং বিভিন্ন সংবাদপত্রের রিপোর্টকে তুলে ধরেছে। কিন্তু বিশ্ব ব্যাঙ্ক বা ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট কারও দেওয়া তথ্যেই এক বছরের মধ্যে জল শেষ হয়ে যাওয়ার কথা বলা নেই! এ নিয়ে খোঁজখবর করলে নীতি আয়োগ জানায়, ওই তথ্য মিলেছে কেন্দ্রীয় জল সম্পদ মন্ত্রকের অধীন ভূগর্ভস্থ জল পর্ষদ (সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ড) থেকে। কিন্তু ভূগর্ভস্থ জল পর্ষদ জানিয়েছে, তাদের কাছে ঠিক এই রকম কোনও তথ্য নেই!
ফলে সংশয় বাড়ছে। দেখা যাচ্ছে, নীতি আয়োগ ভূগর্ভস্থ জল পর্ষদের যে রিপোর্টের সাহায্য নিয়েছে, তা আসলে ২০১৩-র ২০টি জেলা শহরের ভূগর্ভস্থ জল নিয়ে রিপোর্ট। এই ২০টি জেলা শহরের মধ্যে ১২টি গুরুত্বপূর্ণ শহরও রয়েছে। সে সময় পর্ষদ জানিয়েছিল, এই শহরগুলিতে যে পরিমাণ ভূগর্ভস্থ জল তুলে নেওয়া হচ্ছে, সেই পরিমাণ জল মাটির তলায় জমছে না।
বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, পর্ষদের ওই রিপোর্ট থেকে কী ভাবে বলা হল, ২০২০-তে জল ফুরিয়ে যাবে? তা ছাড়া পর্ষদের রিপোর্টে মাটির উপরের জল, যেমন, পুকুর, হ্রদ, জলাধারগুলিকে হিসেবের মধ্যে ধরা হয়নি। চেন্নাইয়ের মতো শহরে জলের সমস্যা যে রয়েছে, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু সমস্যা ঠিক মতো না বোঝানো গেলে, সমাধানের পথ বাছতেও ভুল হতে পারে।
প্রশ্নের মুখে আজ নীতি আয়োগে‌র দাবি, তিনটি রিপোর্টের ভিত্তিতে তারা ওই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিল। এক, বিশ্ব ব্যাঙ্ক ২০০৫-এর রিপোর্টে বলেছিল, ২০২০-র মধ্যে দেশে জলের চাহিদা সব জোগানকে ছাপিয়ে যাবে। ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট ২০১৫-য় জানিয়েছিল, ভারতের সিংহভাগ এলাকা তীব্র জলসঙ্কটে পড়বে। তিন, ভূগর্ভস্থ জল পর্ষদের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ২০২০-র মধ্যে বড় জেলা শহরগুলিতে যে পরিমাণ ভূগর্ভস্থ জল তুলে নেওয়া হবে, তার তুলনায় পূরণ কম হবে। ফলে সঙ্কটের আশঙ্কা থাকছেই।

অন্য বিষয়গুলি:

NITI Aayog Water Crisis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy