গাঁধীর মৃত্যুদিনে মুম্বইয়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ। পিটিআই
বিড়লা হাউসের পিছনের লনে সিঁড়ির মাথায় পৌঁছে গিয়েছিলেন মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী। বেদির দিকে এগোচ্ছেন, পথ আগলে দাঁড়াল বন্দুকধারী নাথুরাম গডসে। পর পর তিনটি বুলেট। লুটিয়ে পড়লেন রক্তাক্ত গাঁধী। বাহাত্তর বছর আগে আজকের দিনটিতেই।
সেই ‘বিড়লা হাউস’ আজ পরিচিত ‘গাঁধী স্মৃতি’ নামে। সেই বাড়ি গোটা দিন জনসাধারণের জন্য বন্ধ রেখে বিকালে সেখানে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। গলা মেলালেন ‘বৈষ্ণব জন তো...’-র সঙ্গে। আর সেখান থেকে ঠিক ১০ কিলোমিটার দূরে রাজধানী দিল্লির পথে আজ ফের চলল গুলি। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ‘রামভক্তে’র গুলি হাত ফুঁড়ে দিল এক ছাত্রের।
১৯৪৮ সালের সঙ্গে ২০২০ সালের অনেকটা মিল খুঁজে পাচ্ছেন বিরোধীরা। সকালেই কেরলে নিজের কেন্দ্রে কতকটা ভবিষ্যৎবাণীর মতো রাহুল গাঁধী বলেছিলেন, ‘‘গাঁধীকে গুলি করেন নাথুরাম গডসে। গডসে কাউকে ভালবাসেননি, বিশ্বাস করেননি, কারও খেয়াল রাখেননি। ঠিক একই রকম আমাদের প্রধানমন্ত্রী। তিনি শুধু নিজেকে ভালবাসেন, নিজেকে বিশ্বাস করেন। কোটি কোটি মানুষের কথা শুনতে চান না। যে ভাবে আমরা গডসের আদর্শের বিরুদ্ধে লড়াই করছি, এঁর বিরুদ্ধেও করব। আর আমি নিশ্চিত, এই লড়াইয়ে জয় আমাদেরই হবে।’’
আর ঘটনার পর প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা টুইট করলেন: ‘বিজেপি সরকারের মন্ত্রী ও নেতারাই যখন গুলি মারার জন্য উস্কানি দেবেন, তখন এ ধরনের ঘটনা হওয়া তো স্বাভাবিক। প্রধানমন্ত্রীর জবাব দেওয়া উচিত, তিনি কেমন দিল্লি চান? তিনি কী হিংসার পাশে না অহিংসার পাশে? উন্নয়নের পাশে না অরাজকতার পাশে?’
মোহনদাস গাঁধীর প্রপৌত্র তুষার গাঁধীও নিশানা করেন মোদীকে। সকালে তিনি বলেছিলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী রাজঘাটে গিয়ে যখন ফুল দেবেন, তিনি নাথুরাম গডসেকেই স্মরণ করবেন। কারণ, আরএসএস থেকে শুরু করে তাঁর সরকার ও সংসদের সতীর্থরা এই হত্যাকারীরই বন্দনা করেন।’’ দুপুরে মোদী রাজঘাটে যাওয়ার পর তুষারের বক্তব্য: ‘‘বাপুর হত্যার জন্য তিনি (মোদী) নাথুরামকে সম্মান জানালেন।’’ বিরোধীদেরও অনেকের বক্তব্য, দিন বেছে গুলি চালিয়ে গেরুয়া শিবির বোঝাতে চাইল, তারা গডসের আদর্শেই চলছে।
অভিযুক্তের সঙ্গে মোদীর যোগ খুঁজে বার করার দাবি করছে বিরোধীদের সোশ্যাল মিডিয়া টিম। তাদের মতে, ফেসবুকে অভিযুক্তের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে দীপক মিশ্র নামে এক জনকে, যার সঙ্গে ছবি রয়েছে মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের। দীপকের সঙ্গে হিন্দুত্ববাদী বহু নেতার ছবি আছে, যাঁরা মোদীর সঙ্গেও ছবি তুলেছে। আপ নেতা সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘‘দিল্লিতে অশান্তি ছড়াতে চাইছেন অমিত শাহ। ভোটে হার দেখতে পেয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর চক্রান্ত হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভোট পিছনোর মতলবে আছেন।’’
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তড়িঘড়ি টুইট করেন শাহ, ‘পুলিশ কমিশনারকে কঠোর পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছি। সরকার এমন ঘটনা বরদাস্ত করবে না। দোষীকে রেয়াত করা হবে না।’’ কিন্তু এটাই কি মনের কথা বিজেপির, প্রশ্ন বিরোধীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy