হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার নীতি নিয়ে লোকসভায় এবং আসন পুনর্বিন্যাসে তামিলনাড়ুর প্রতিনিধিত্ব কমে যাওয়ার আশঙ্কা নিয়ে রাজ্যসভায় সরব হলেন ডিএমকে নেতৃত্ব। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, রাজ্যের স্বার্থে ডিএমকে-র পাশে দাঁড়িয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী এডিএমকে। যা অস্বস্তি বাড়িয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের।
আজ বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বের প্রথম দিনে শিক্ষা সংক্রান্ত আলোচনায় ডিএমকে সাংসদ টি সুমথি অভিযোগ করেন, হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ করায় পিএমশ্রী প্রকল্পে রাজ্যের পাওনা দু’হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। এর প্রতিবাদে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখায় ডিএমকে। স্পিকার ওম বিড়লার বিরুদ্ধে সাংসদ দয়ানিধি মারান পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনেন। ক্ষুব্ধ স্পিকার তাঁকে সতর্ক করে বলেন, ডিএমকে সাংসদ যদি নিজের আসন থেকে ওই মন্তব্য করতেন, তা হলে তিনি ব্যবস্থা নিতেন। এর পরেই সংসদীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, স্পিকারের বিরুদ্ধে কটূক্তির জন্য দয়ানিধির বিরুদ্ধে সংসদীয় নিয়ম মেনে পদক্ষেপ করা হবে।
পাল্টা আক্রমণে শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান জানান, ‘‘কেন্দ্র আদৌ হিন্দি চাপিয়ে দিচ্ছে না। পিএমশ্রী স্কুলে শিক্ষার মাধ্যম হবে তামিলই।’’ নিজের বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী দাবি করেন, ‘‘তামিলনাড়ু সরকার জাতীয় শিক্ষা নীতিতে রাজি হলেও, শেষ মুহূর্তে স্বাক্ষর না করে পিছিয়ে আসে।’’ যদিও সাংসদ দয়ানিধি এবং তামিলনাড়ুতে মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন দু’জনেই দাবি করেছেন, ধর্মেন্দ্রর দাবি মিথ্যা। গত বছরেই তামিলনাড়ু সরকার জানিয়ে দিয়েছে, কোনও ভাবেই নতুন শিক্ষানীতি মানবে না রাজ্য। ডিএমকে-র দাবি, সংসদে ভুল তথ্য দিয়েছেন ধর্মেন্দ্র। তাঁর বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব জমা দেন সাংসদ কানিমোঝি। জবাব দিতে গিয়ে কিছুটা সংযম হারিয়ে ফেলেন ধর্মেন্দ্র। ডিএমকে নেতৃত্বকে অসৎ বলে কটূক্তি করেন। পরে ক্ষমা চান শিক্ষামন্ত্রী।
অন্য দিকে, রাজ্যসভায় আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে আলোচনার দাবিতে সকালেই নোটিস দেয় ডিএমকে। যা খারিজ করে দেন ডেপুটি চেয়ারম্যান। ক্ষুব্ধ সাংসদেরা এর পরে ওয়াকআউট করেন। অধিবেশন ‘ভন্ডুল করে দেওয়ার এই প্রচেষ্টা’র সমালোচনা করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নড্ডা বলেন, ‘‘মুলতুবি প্রস্তাব দেওয়ার নিয়ম আগে ভাল করে পড়ে নেওয়া উচিত। সকলের সংসদীয় নিয়মগুলি ঝালিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)