অরবিন্দ কেজরীবালদের অভিযোগই সত্যি প্রমাণিত হল কন্ট্রোলার অব অডিটর জেনারেলের রিপোর্টে। দিল্লির বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলি তথা ডিসকম-এর হিসেবপত্র খতিয়ে দেখে সিএজি জানিয়েছে, ভুয়ো ক্ষতি দেখিয়ে আম দিল্লিবাসীর পকেট থেকে ইতিমধ্যেই ৮ হাজার কোটি টাকা লুঠ করেছে ওই সংস্থাগুলি। এই রিপোর্ট প্রকাশ করে অবিলম্বে পদক্ষেপ করার সুপারিশও করেছে সিএজি। যা করার জন্য মুখিয়েই রয়েছেন কেজরীবালরা।
দিল্লিতে প্রথম বার ক্ষমতায় এসেই ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর বিল অর্ধেক করে দিয়েছে আম আদমি পার্টির সরকার। মূলত নিম্নবিত্তরাই শুধু এই সুরাহা পাচ্ছেন। এ বার সিএজি-র রিপোর্টকে হাতিয়ার করে তামাম দিল্লিবাসীর জন্য বিদ্যুতের বিল কমানোর আন্দোলনে ঝাঁপাতে চলেছে কেজরীবালের দল।
দিল্লির বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থাগুলি গ্রাহকদের কাছ থেকে বাড়তি অর্থ নিচ্ছে এই অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই সরব রয়েছে আপ। তাই প্রথম বার মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েই সিএজিকে দিয়ে ওই অভিযোগ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এর পরে একই দাবি ওঠে মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব-সহ অনেক রাজ্যেই। দিল্লিতে এখন দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফিরেছে আপ। প্রথম আপ সরকারের নির্দেশে তদন্ত করে সিএজি এখন তার রিপোর্টে জানাচ্ছে, বেসরকারি বিদ্যুৎ বন্টনকারী সংস্থাগুলি প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার ভুয়ো ক্ষতি দেখিয়েছে। বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে একই গোষ্ঠীর অন্য সংস্থাকে সস্তায় সেই বিদ্যুৎ বেচে দেওয়া, লাভের অঙ্ক চেপে যাওয়া, গ্রাহকের প্রকৃত সংখ্যা লুকিয়ে যাওয়া— এই ধরনের নানা রকম অনৈতিক পথে খাতায়-কলমে ওই বিপুল ক্ষতি হয়েছে বলে দেখিয়েছিল ডিসকম। এবং আদৌ যে ক্ষতি হয়নি সেই ক্ষতির টাকাই মেটাতে হচ্ছে গ্রাহকদের।
সিএজির তাই সুপারিশ, অবিলম্বে গ্রাহকদের বর্ধিত বিদ্যুতের বিল কমানো হোক। এবং এ পর্যন্ত সংস্থাগুলি যে বাড়তি টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে নিয়েছে, গ্রাহকদের তা ফিরিয়ে দেওয়া হোক। বিষয়টির সঙ্গে সাধারণ মানুষের স্বার্থ জড়িত থাকায়, সিএজি-র রিপোর্টকে হাতিয়ার করে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার ইঙ্গিত দিয়েছে দল। আন্দোলন কেন? সিএজি-র অডিটে অনিয়ম ধরা পড়ার পরে দিল্লির সরকার প্রশাসনিক ভাবেই তো পদক্ষেপ করতে পারে!
এই প্রশ্নের মুখে আপ সূত্রে বলা হচ্ছে, সেটা অবশ্যই করা হবে। বিষয়টি নিয়ে খুব দ্রুত এক দিনের জন্য বিশেষ বিধানসভা অধিবেশন ডাকার সিদ্ধান্তও নিয়েছে দল। সেখানেই পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে। তবে বিদ্যুৎ বণ্টনকারী সংস্থাগুলি যে সহজে সিএজি সুপারিশ মেনে নেবে না, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন আপ নেতৃত্ব। দলের নেতা সঞ্জয় সিংহের কথায়, ‘‘ডিসকম ফের আদালতের দ্বারস্থ হবে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ারও হুমকি দিতে পারে। কিন্তু সরকারও এই ধরনের সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত। আর এই লড়াইয়ে আমাদের সব থেকে বড় ভরসা হল সিএজি রিপোর্ট।’’ এরই পাশাপাশি মানুষের দরবারেও বিষয়টিকে নিয়ে যেতে চায় আপ, তৈরি করতে চায় জনমতের চাপ। দিল্লিতে আম আদমির স্বার্থে তাদের লড়াই সফল হলে গোটা দেশের কাছেই তা দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে। তাতে আপের রাজনৈতিক ভিতও প্রসারিত ও মজবুত হবে বলে মনে করছেন কেজরীবালরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy