ছত্তীসগঢ়ে ভোটপ্রচারে গিয়ে আরও এক বার দুর্নীতি নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছত্তীসগঢ়ের শাসকদলকে কটাক্ষ করে মোদীর অভিযোগ, মহাদেবের নামে লুট করতেও ছাড়ছে না কংগ্রেস। প্রসঙ্গত, ‘মহাদেব বেটিং অ্যাপ’ সংক্রান্ত তদন্তে জড়িয়ে গিয়েছে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা ভূপেশ বঘেলের নামও। ভোটমুখী ছত্তীসগঢ়ে বিষয়টিকে হাতিয়ার করে কংগ্রেসকে আক্রমণ করার কোনও সুযোগই হাতছাড়া করতে চাইছে না বিজেপি।
শনিবার ছত্তীসগঢ়ের দুর্গ এলাকার একটি প্রচারসভায় মোদী উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, “এই রাজ্যের কংগ্রেস সরকার আপনাদের লুট করতে কোনও সুযোগই ছাড়ছে না। এমনকি মহাদেবের নামে লুট করতেও ছাড়ছে না তারা।” এর পাশাপাশি, দুর্নীতিগ্রস্তদের হুঁশিয়ারি দিয়ে মোদী বলেন, “যাঁরা ছত্তীসগঢ়কে লুট করেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতি পয়সার হিসাব তাঁদের থেকে বুঝে নেওয়া হবে।” প্রধানমন্ত্রী এ-ও জানান যে, বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে এই ধরনের দুর্নীতির উপযুক্ত তদন্ত হবে এবং অপরাধীদের জেলে পাঠানো হবে। ভোট পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, দুর্নীতি নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করার পাশাপাশি ‘মহাদেবকে ব্যবহার করা’র অভিযোগ তুলে হিন্দুত্বের অস্ত্রেও শান দিতে চেয়েছেন মোদী।
অনলাইনে বেআইনি জুয়া চালানোর অভিযোগ ওঠে ‘মহাদেব বেটিং অ্যাপে’র বিরুদ্ধে। অ্যাপের প্রচারে জড়িত থাকায় বলিউডের কয়েক জন অভিনেতাকে সমন পাঠায় ইডি। সম্প্রতি ইডি-র তরফে দাবি করা হয়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ছত্তীসগঢ়ের ভিলাই থেকে অসীম দাস নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে তারা। ইডি-র দাবি, কংগ্রেসের নির্বাচনের খরচ জোগাতে ওই ব্যক্তিকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে পাঠিয়েছিলেন ‘মহাদেব অ্যাপে’র মালিকেরা। ইডি-র আরও দাবি, ‘বঘেল’ নামে এক রাজনীতিককে দেওয়ার জন্য অসীম ৫.৩৯ কোটি টাকা নিয়ে এসেছিল। এর পরেই বিজেপি নেতা অমিত মালবীয় দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী বঘেলের জন্য ওই টাকা পাঠানো হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত ‘মহাদেব’ অ্যাপের মালিকেরা বঘেলকে ৫০৮ কোটি টাকা দিয়েছেন বলে দাবি মালবীয়ের।
আরও পড়ুন:
এর পরেই সমাজমাধ্যমে এক দীর্ঘ বার্তায় জবাব দেন বঘেল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি ইডি, আয়কর, রাজস্ব গোয়েন্দা দফতর এবং সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থার সাহায্যে ছত্তীসগঢ়ে ভোটে লড়তে চাইছে। ভোটের ঠিক আগে ইডি আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য জঘন্যতম অভিযোগ এনেছে। জনপ্রিয় কংগ্রেস সরকারের অবমাননা করতে ইডি-র মাধ্যমে রাজনৈতিক চেষ্টা চালানো হয়েছে।’’ বঘেলের সংযোজন, ‘‘মহাদেব অ্যাপ নিয়ে তদন্তের নামে ইডি প্রথমে আমার ঘনিষ্ঠদের বাড়িতে তল্লাশি চালাল। পরে এক অপরিচিত ব্যক্তির বক্তব্যের ভিত্তিতে তারা আমার নামে ৫০৮ কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলছে।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘এর চেয়ে বড় রসিকতা আর কী হতে পারে? কাল আমি যদি কোনও ব্যক্তিকে ধরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম করতে বলি তা হলে কি মোদীর বিরুদ্ধে তদন্ত হবে?’’