এ বছরেই পুজোর উপহার হিসেবে সব থেকে বিপুল পরিমাণে ইলিশ পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছিল শেখ হাসিনার সরকার। ফাইল চিত্র।
ঢাকার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তরফে ফের ইলিশ পাঠানোর আশ্বাস মিলেছে। অতএব কালীপুজোর পরে বাঙালির ভাইফোঁটার ভূরিভোজে অন্তত কব্জি ডুবিয়ে ইলিশ আস্বাদের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। এ ভাবেই ফের ইলিশ-সম্প্রীতি অটুট রাখার বার্তা দিল ঢাকা। ২০১২-এ দেশের বাজারে পদ্মার ইলিশ ঢোকা বন্ধ করার পরে এ বছরেই পুজোর উপহার হিসেবে সব থেকে বিপুল পরিমাণে ইলিশ পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছিল শেখ হাসিনার সরকার। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টেনেটুনে তার সিকিভাগও পাঠানো যায়নি। তাই পরে ফের যাতে ঢাকা ইলিশ পাঠায় বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী মুনশী টিপুর কাছে টানা দরবার করছিলেন ইলিশ-কারবারিরা।
বাংলাদেশের উপসচিব পর্যায়ের আধিকারিক তানিয়া ইসলামের স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশ ঢাকার সচিবালয় থেকে মঙ্গলবারেই প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ইলিশের প্রজননের মরসুম পড়ায় ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশে ইলিশ ধরা, অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া, বাজারজাত করে ইলিশ বিক্রি করা, সবই পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে ১১৫ জন ইলিশ রফতানিকারীকে ৪০ মেট্রিক টন করে ইলিশ ভারতে পাঠানোর ছাড়পত্র দিয়েছিল ঢাকা। সেই ৪৬০০ মেট্রিক টন ইলিশের মাত্র ১০৮০ মেট্রিক টন গত ৪ অক্টোবরের মধ্যে এসে পৌঁছেছে। প্রধানত পেট্রাপোল সীমান্ত ছাড়া ত্রিপুরা দিয়েও অল্প কিছু ইলিশ এ দেশে ঢুকেছিল। এর পরই বাংলাদেশে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ হয়।
পুজোর আগের ইলিশের জোগান আপাতত ফুরিয়েছে। পুজোর পরে ফের ঢাকা ইলিশ পাঠাতে রাজি হবে কি না, তা নিয়েও সংশয় ছিল। গত তিন বছর ধরেই হাসিনা সরকার এ দেশে ইলিশ পাঠাচ্ছে। এই তিন বছরে নানা ঘটনায় ঢাকা ও নয়াদিল্লির সম্পর্ক ওঠানামা করেছে। তবে পুজোর আগে এবং পরে এই ইলিশ পাঠানোর আশ্বাসটুকুর মধ্যে শেখ হাসিনার সরকার এ দেশের উদ্দেশে একটি সদর্থক কূটনৈতিক বার্তা দিল বলেও মনে করা হচ্ছে।
এ রাজ্যে ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সচিব সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদের সঙ্গে এই পর্বে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রী মুনশী টিপুর যোগাযোগ ছিল। মন্ত্রীমশাইকে আরও ইলিশ পাঠাতে অনুরোধ করেন আনোয়ার। তবে আনোয়ার মাকসুদের ধারণা, ৫ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকার পক্ষে আগের আশ্বাসমাফিক সবটা ইলিশ পাঠানো অসম্ভব। বড়জোর আরও ১০০০ টন মতো ইলিশ ঢুকবে। বাংলাদেশের ইলিশ কারবারিদের একাংশেরও মত, বাংলাদেশে যা ইলিশ মেলে তার কিছুটা ভারতে পাঠালেই বরং ইলিশ কারবার ভাল হবে বাংলাদেশে। আর ভারতের যা বাজার, তাতে ৩০-৪০ মেট্রিক টনের মতো ইলিশ ঢোকাই রোজকার চাহিদার মাপে জুতসই। আজ, বুধবার পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ইলিশ ঢোকার কথা পশ্চিমবঙ্গে। এর পরে কাল, বৃহস্পতিবার কলকাতা, শিলিগুড়ির বাজারে সেই রজতকান্তি মৎস্য কুলতিলকের দেখা মেলার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy