১৯ বছর পর আবার দুই ভাই এক হতে পারেন! জোর জল্পনা মরাঠাভূমে। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উদ্ধব এবং রাজ ঠাকরে। দুই ভাইয়ের মেলবন্ধন হলেও মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে তা তেমন কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না, এমনটাই মনে করছে বিজেপি। যদিও উদ্ধব এবং রাজের মিলন হলে ‘খুশিই’ হবেন বলেই জানান মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস। একই সুর শোনা গিয়েছে উদ্ধবগোষ্ঠীর বন্ধু কংগ্রেসের কণ্ঠেও। অন্য দিকে, সাংবাদিকদের এই সংক্রান্ত প্রশ্নে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন ‘শিবসৈনিক’ একনাথ শিন্দে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সরকারের ভাল কাজ নিয়ে কথা বলুন’’।
চলতি বছরের শেষেই বৃহন্মুম্বই পুরসভা নির্বাচন। অনেকের মতে, সেই নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে একজোট হচ্ছে উদ্ধব এবং রাজ। যদি দুই ভাইয়ের পুনর্মিলন হয়, তবে কতটা ক্ষতি হবে এনডিএর? ফডণবীসের কথায়, ‘‘ ঠাকরে ভাইবোনেরা একত্রিত হলে বিজেপি খুশি। তাঁদের বিরোধের অবসান হওয়া ভাল ব্যাপার। তবে আসন্ন বিএমসি নির্বাচনে তাঁরা এনডিএ-কে হারাতে পারবে না।’’
বিভেদ ভুলে বৃহত্তর স্বার্থে একজোট হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন উদ্ধব এবং রাজ। দূরত্ব ঘুচিয়ে ফেলার ইঙ্গিতটা প্রথমে এসেছিল রাজের তরফ থেকেই। খুড়তুতো ভাইয়ের সেই ইঙ্গিতে সাড়া দিয়েছেন উদ্ধবও। জানিয়েছেন, তিনিও মহারাষ্ট্র এবং মরাঠাদের স্বার্থে মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে রাখতে চান। মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস)-র প্রতিষ্ঠাতা রাজ সম্প্রতি দাদা উদ্ধব প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের মধ্যে মতপার্থক্যের বিষয়টি গৌণ, বিশেষত যদি আমরা বৃহত্তর বিষয়গুলিকে মাথায় রাখি। তা ছাড়া মরাঠি আত্মপরিচয়কে বাঁচিয়ে রাখার লড়াইয়ে এই বিষয়গুলির কোনও গুরুত্বই নেই।” একই সঙ্গে রাজের সংযোজন, “একসঙ্গে কাজ করা কঠিন কোনও বিষয় নয়। এটা কেবল ইচ্ছার ব্যাপার।’’ রাজের হাত মেলানোর ডাকে সাড়া দিতে দেরি করেননি শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা উদ্ধবও। মহরাষ্ট্রের দাদরে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের একটি সম্মলনে বালাসাহেব-পুত্র রাজের সুরেই বলেন, “মহারাষ্ট্র এবং মরাঠিদের স্বার্থে ছোটখাটো মতপার্থক্যকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাই।”
আরও পড়ুন:
১৯ বছর আগে দুই ভাইয়ের পথ আলাদা হয়ে যায়। ২০০৫ সালে বালাসাহেবের জীবদ্দশাতেই শিবসেনা ছাড়েন রাজ। পরের বছর তৈরি করেন নিজের নতুন দল এমএনএস। শিবসেনা প্রধান হন উদ্ধব। কিন্তু এই ১৯ বছরে মরাঠা রাজনীতিতে অনেক কিছু পাল্টেছে। ২০২২ সালে উদ্ধবের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করে দল ছেড়েছেন শিন্দে। অবিভক্ত শিবসেনার সিংহভাগ সাংসদ এবং বিধায়ককে ভাঙিয়ে আনার পর পরিষদীয় শক্তির বিচারে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে ‘আসল’ শিবসেনার তকমা পেয়েছে শিন্দের নেতৃত্বাধীন সেনাই। দলের পুরনো তির-ধনুক প্রতীকও পেয়েছে তারা।