পরেশ বরুয়া। —ফাইল চিত্র।
এক বছরে হয়েছে ১১টি শান্তি চুক্তি। কিন্তু তার পরেও অসমের প্রধান মাথাব্যথার কারণ পরেশ বরুয়া ও আলফা স্বাধীন ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকল। নববর্ষের বৈঠকে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বললেন, “আমার বিশ্বাস একটি বার বর্তমান অসমে ঘুরে গেলেই পরেশ তাঁর মত ও দাবিদাওয়া বদলে ফেলবেন। আগামী ৬-৭ দিনের মধ্যে আমি নিজে পরেশ বরুয়ার সঙ্গে কথা বলব। পরেশ অসম ঘুরে যেতে চাইলে তাঁকে সেফ প্যাসেজ দেওয়া হবে।”
আলোচনাপন্থী আলফার সঙ্গে ২৯ ডিসেম্বর দিল্লিতে ত্রিপাক্ষিক শান্তি চুক্তি হলেও পরেশ চুক্তির তীব্র সমালোচনা করে জানান, এ ভাবে আলফা ভারত সরকারের চাপের সামনে আপস করায় তিনি ওই চুক্তি নিয়ে লজ্জিত। হিমন্ত সে প্রসঙ্গে বলেন, “আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রী পরেশ বরুয়ার সঙ্গে সরাসরি কথা বলতেন না। কিন্তু আমি ৩-৬ মাস পর পর তাঁর সঙ্গে সরাসরি কথা বলি। তাঁর মতামত শুনি। অসমের জন্য পরেশ বরুয়ার ভালবাসা নিখাদ।
কিন্তু আমি মনে করি, তিনি ৩০ বছর পরের এই অসমে সরেজমিনে ঘুরে গেলে তাঁর মনোভাব বদলে যাবে। যে সব দাবিতে অনড় থাকায় তিনি শান্তি আলোচনায় আসছেন না সেই সব দাবিও বদলে যাবে।” তাঁর মতে, “আলফার দাবি সনদে কোথাও বাংলাদেশের অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গ সমস্যা হিসেবে তুলে ধরা হয়নি। কিন্তু সেটাই ছিল সবচেয়ে বড় সমস্যা। সেই স্বাধীন অসমের দাবি করে কী লাভ যেখানে এক জন অসমিয়া মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না? তাই আমরা অনুপ্রবেশমুক্ত অসম গড়ার চেষ্টা করেছি যেখানে ভূমিপুত্রদের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে।”
হিমন্ত জানান, এ বছর আলফা-সহ মোট ১১টি সংগঠনের সঙ্গে শান্তি চুক্তি হয়েছে। যা রাজ্যের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে। ফলে রাজ্যে সন্ত্রাস ৯০ শতাংশই শেষ। অসমের মাটিতে আর কোনও জঙ্গি সংগঠন নেই। অধিকাংশ অসম আফস্পামুক্ত হয়ে গিয়েছে। তিনি আলফার সঙ্গে হওয়া শান্তি চুক্তিতে ভূমিপুত্রদের রাজনৈতিক অধিকার সুরক্ষিত করার শর্ত প্রসঙ্গে বলেন, বিধানসভা কেন্দ্রের সীমানা পুনর্বিন্যাসের ফলে ইতিমধ্যেই ১২৬টির মধ্যে ৯৭টি আসনে অসমিয়াদের রাজনৈতিক অধিকার সুরক্ষিত হয়েছে। বরাক উপত্যকায় বিশেষ ভাবে ভূমিপুত্রদের জন্য ৮টি আসন সংরক্ষিত হয়েছে। আলফার চুক্তি ভবিষ্যতে সীমানা পুনর্বিন্যাসের ভিত মজবুত করবে। চুক্তির দু’টি শর্ত উল্লেখ করে তিনি ব্যাখ্যা করেন, এ বার থেকে নাগরিকেরা ইচ্ছেমতো জেলা বা বিধানসভা কেন্দ্র বদলাতে পারবেন না। নিজের কেন্দ্রে জমির মালিকানা-সহ স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে এবং প্রার্থীরাও শুধুমাত্র নিজের আসল আবাস কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী হতে পারবেন, কেন্দ্র বদল করে অন্য জায়গা থেকে লড়তে পারবেন না। এই শর্তগুলি ভূমিপুত্রদের সুরক্ষায় সর্বোচ্চ মাত্রা যোগ করতে চলেছে।
পাশাপাশি আজ ২০০টি বিদ্যুৎচালিত বাসের উদ্বোধন করে ও গুয়াহাটিতে সাড়ে চার কিলোমিটার লম্বা অসমের দীর্ঘতম উড়ালপুলের শিলান্যাস করে হিমন্ত ঘোষণা করেন, ২০২৫ সালের মধ্যে গুয়াহাটি দেশের প্রথম সম্পূর্ণ সবুজ গণপরিবহণ থাকা শহরে পরিণত হবে। ৮৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হতে চলা দীঘলিপুখুরি থেকে নুনমাটি পর্যন্ত বিস্তৃত ওই চার লেনের উড়ালপুল দেশের দ্বিতীয় সবচেয়ে লম্বা উড়ালপুল হতে চলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy