সব কিছু ঠিক থাকলে নভেম্বরেই ট্রেনে ফের অসংরক্ষিত কামরা চালু হয়ে যেতে পারে বলে রেল সূত্রের খবর। প্রতীকী ছবি।
শহরতলির লোকাল ট্রেন চালু হওয়ায় আমজনতার দাবি অনেকাংশে মিটতে চলেছে। বিভিন্ন মেল, এক্সপ্রেস এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেনে অসংরক্ষিত কামরা ফিরিয়ে আনার দাবিও ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। শুধু যাত্রিসাধারণ নয়, সেই দাবি উঠছে রেলের অন্দরমহলেও।
কিন্তু অসংরক্ষিত কামরা চালু হলে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে মনে করছেন চিকিৎসক এবং যাত্রীদের একাংশ। তবে রেল-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, টিকাকরণের গতির দিকে তাকিয়ে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। সব কিছু ঠিক থাকলে নভেম্বরেই ট্রেনে ফের অসংরক্ষিত কামরা চালু হয়ে যেতে পারে বলে রেল সূত্রের খবর। মাঝারি দূরত্বের ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস ও প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলিকেও প্রাক্-করোনাকালের চেহারায় ফিরিয়ে আনার জোরালো দাবি উঠেছে রেলের অভ্যন্তরে।
রেল সূত্রের খবর, করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী হওয়ায় পূর্ব রেল ছাড়াও পশ্চিম এবং দক্ষিণ-মধ্য রেল তাদের অধীন বিভিন্ন ইন্টারসিটি, মেল, এক্সপ্রেস ও প্যাসেঞ্জার ট্রেনে অসংরক্ষিত কামরা ফিরিয়ে আনার অনুমতি চেয়েছে রেল বোর্ডের কাছে। রাজ্যে লোকাল ট্রেন চালু করার অনুমতি মেলায় সেই উদ্যোগ গতি পাবে বলে আশা করছেন রেলকর্তারা। করোনা-পূর্ব কালে সারা দেশে যত দূরপাল্লার মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন চলত, ইতিমধ্যেই তার ৯৬ শতাংশ চালু হয়েছে। তবে ওই সব ট্রেন এখনও সংরক্ষিত আসনের যাত্রী নিয়েই চলছে। অতিমারির তীব্রতা কমে আসার পরে দূরপাল্লার যে-সব প্যাসেঞ্জার ট্রেন চলাচল করছে, সেগুলিতেও যাত্রীদের আগে থেকে টিকিট সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। সংরক্ষিত আসনের ওই সব ট্রেনের টিকিটের মূল্যও অনেকটা বেশি।
পূর্ব রেলের অধীনে শান্তিনিকেতন, ব্ল্যাক ডায়মন্ড, কোলফিল্ডের মতো যে-সব ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস চলছে, সেগুলিরও সব কামরার আসনই এখন সংরক্ষিত। ফলে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বহু যাত্রী অগ্রিম আসন সংরক্ষণ করতে না-পারায় ওই সব ট্রেনে উঠতে পারছেন না। বিহার, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরবঙ্গগামী সব ট্রেনেই পুজোর পর থেকে টিকিটের চাহিদা তুঙ্গে। ফলে টিকিট কাটার পরেও ‘ওয়েটিং লিস্ট’ বা প্রতীক্ষার তালিকায় থাকা যাত্রীর সংখ্যা কম নয়। পর্যটনের মরসুম এসে পড়ায় উত্তরবঙ্গগামী সব ট্রেনই ভর্তি। নানান অসুবিধায় বহু যাত্রী যাতায়াতের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে রেলকর্তাদের একাংশের অভিযোগ। অসংরক্ষিত কামরা চালু হলে যাত্রীদের সমস্যা কিছুটা কমতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, বিভিন্ন প্যাসেঞ্জার ট্রেন এবং ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে ফের অসংরক্ষিত কামরা চালু হয়ে গেলে শহরতলির ট্রেনের ভিড়ও সামান্য কমতে পারে।
চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে যাত্রী পরিবহণ থেকে রেলের আয় হয়েছে প্রায় ৪৯২১ কোটি টাকা। পরের ত্রৈমাসিকে ওই আয় বেড়ে হয়েছে ১০,৫১৩ কোটি। পুজো এবং দীপাবলির পর থেকে সারা দেশেই রেলে যাত্রী বাড়ে। দূরপাল্লার ট্রেনে টিকিটের চাহিদা তুঙ্গে ওঠে। স্বাভাবিক ভাবেই রেল-কর্তৃপক্ষও যাত্রী পরিবহণ খাতে আয় বাড়াতে মরিয়া।
পূর্ব রেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘বছরের এই সময়ে ট্রেনে বর্ধিত চাহিদার কথা মাথায় রেখে কী ভাবে বেশির ভাগ যাত্রীকে যাতায়াতের সুযোগ দেওয়া যায়, সেটা দেখা জরুরি। তাই অসংরক্ষিত কামরা চালু করার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy