Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Delhi Violence

পুলিশ নিষ্ক্রিয়ই, ফের পথে কপিল

দিল্লিতে গোষ্ঠী সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকেই কপিল মিশ্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন বিরোধীরা।

যন্তর-মন্তরে এক শান্তি মিছিলে কপিল মিশ্র। শনিবার। পিটিআই

যন্তর-মন্তরে এক শান্তি মিছিলে কপিল মিশ্র। শনিবার। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২০ ০৩:৩৩
Share: Save:

গত রবিবার জাফরাবাদে বক্তৃতা দিতে গিয়ে সিএএ-এনআরসির বিরোধীদের হুমকি দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। অভিযোগ, ওই বক্তব্যের পরেই সন্ধ্যা থেকেই গোষ্ঠী সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে গোটা উত্তর-পূর্ব দিল্লি জুড়ে। যাতে মারা যান ৪২ জন। কিন্তু তার পরে প্রায় এক সপ্তাহ কেটে গেলেও কপিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে ব্যর্থ দিল্লি পুলিশ। এ দিকে, দিল্লিতে সংঘর্ষ থামাতে ব্যর্থতার অভিযোগ মাথায় নিয়েই আজ দায়িত্ব থেকে অবসর নিলেন দিল্লি পুলিশের কমিশনার অমূল্য পট্টনায়ক। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ওই পদের কার্যভার গ্রহণ করলেন বিশেষ কমিশনার (আইন-শৃঙ্খলা) এস এন শ্রীবাস্তব।

দিল্লিতে গোষ্ঠী সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকেই কপিল মিশ্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন বিরোধীরা। অভিযোগ, শাসক দলের নেতা হওয়ার কারণেই কপিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ। আজ কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘কার্যত একতরফা তদন্ত চলছে। কেন্দ্র বা কেজরীবাল সরকার কারও উপরেই আমাদের ভরসা নেই। একমাত্র আদালত হস্তক্ষেপ করলে কিছু হতে পারে।’’ এরই মধ্যে আজ দিল্লির যন্তর-মন্তর থেকে একটি অসরকারি সংগঠনের উদ্যোগে শান্তি মিছিল বার হয়। যায় কনট প্লেস পর্যন্ত। তাতে উপস্থিত ছিলেন কপিল মিশ্রও। তবে তিনি কোনও বক্তৃতা করেননি। যদিও বিরোধীদের প্রশ্ন, উত্তর-পূর্ব দিল্লির সংঘর্ষের ক্ষত যেখানে টাটকা, সেখানে পুলিশ কী ভাবে মিছিলের অনুমতি দিল?

আরও অভিযোগ, ওই মিছিল থেকে ফের উস্কানিমূলক স্লোগান দেওয়া হয়। আজ দিল্লির রাজীব চক মেট্রো স্টেশনে ‘গোলি মারো’ স্লোগান দেওয়ার জন্য ছ’জনকে আটক করেছে পুলিশ। সূত্রের মতে, ওই যুবকেরা মিছিলে যোগ দেওয়ার জন্যই ওই স্টেশনে নেমেছিল।

তবে পুলিশ ‘নিষ্ক্রিয়’ হলেও উত্তর-পূর্ব দিল্লির হিংসার ঘটনা নিয়ে আজ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ জন্য দু’টি তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে।

কী করল দিল্লি পুলিশ

• সংঘর্ষে উত্তাল রাজধানী: ২৩-২৬ ফেব্রুয়ারি

• নিহত: ৪২

• আহত: ২০০-র বেশি

• ১২৩টি এফআইআর

• আটক: ৬৩০

নীরব কেন পুলিশ


• পুলিশের কন্ট্রোল রুমের লগ অনুযায়ী

• ২৩ ফেব্রুয়ারি: সন্ধ্যায় ৭০০ ফোন

• ২৪ ফেব্রুয়ারি: ৩ হাজার ৫০০ ফোন

• ২৫ ফেব্রুয়ারি: ৭ হাজার ৫০০ ফোন

(রাতে এলাকা পরিদর্শনে অজিত ডোভাল)

• ২৬ ফেব্রুয়ারি: ১ হাজার ৫০০টি ফোন

(শুধু যমুনা বিহার থেকেই ভজনপুরা থানায় ২৪-২৬ ফেব্রুয়ারি ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার ফোন)


• গুলি, আগুন লাগানোর অভিযোগ করে ফোন

• কিন্তু কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, লেখা নেই লগে

গত তিন দিনের মতোই আজও দিল্লির উপদ্রুত এলাকাগুলিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। নতুন কোনও সংঘর্ষের খবর আসেনি। আজ দিনভর ওই সব এলাকায় টহল দেয় পুলিশ ও আধাসেনা। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১৬৭টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার বা আটক করা হয়েছে ৮৮৫ জনকে। আজ দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও। পরে তিনিও জানান, ‘‘কোনও এলাকা থেকে সংঘর্ষের খবর আসেনি।’’ পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভাল হলেও, উত্তর-পূর্ব দিল্লির সমস্ত স্কুল ৭ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। বন্ধ থাকছে সিবিএসই-র সমস্ত পরীক্ষা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি ভিত্তিতে ২৫ হাজার টাকা সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সংঘর্ষের সময়ে খজুরী খাস এলাকায় মহম্মদ আনিস নামে এক বিএসএফ জওয়ানের বাড়ি পুড়িয়ে দেয় উন্মত্ত জনতা। আজ বিএসএফের দল তাঁর বাড়ি যায়। বাহিনীর ডিআইজি পুষ্পেন্দ্র রাঠৌর বলেন, ‘‘আনিসের বিয়ের উপহার হিসেবে আমরা বাড়িটি নতুন করে বানিয়ে দেব।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy