দীপাবলির পরের দিন দিল্লির আকাশে ধোঁয়ার চাদর। পিটিআই
আয়োজনের খামতি ছিল না। বাজি পোড়ানো কমাতে লেজ়ার শো, একান্তই পোড়াতে হলে পরিবেশ বান্ধব বাজির ব্যবস্থা, জনসচেতনতার প্রসার, পুলিশের কড়া নজরদারি...।
এত কিছুর পরেও আজ সকাল থেকেই দিল্লির আকাশ ঢাকা রইল দূষণের চাদরে। দিনভর দেখা গেল না সূর্যের মুখ। ফিরে এল নাক-গলা জ্বলার উপসর্গ। সব মিলিয়ে দিল্লিতে দীপাবলির পরের দিন সকালে বায়ুর গুণগত সূচক পৌঁছে যায় ৫০৭-এ। যা তীব্র (সিভিয়ার) মাত্রার হলেও, গত বারের চেয়ে পরিস্থিতি সামান্য ভাল বলেই দাবি করেছে দিল্লি প্রশাসন। তবে ওই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ আগামী ক’দিন বহাল থাকলে ৩ নভেম্বর দিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশের টি ২০ ম্যাচের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
পরিবেশ মন্ত্রকের সূত্রের দাবি, গত এক সপ্তাহ ধরে রাজধানীর আশপাশে ফসলের গোড়া পোড়ানোর অনেক ঘটনা সামনে এসেছে। এর ফলে দূষণের মাত্রা বেড়েছে। তবে সচেতনতা বাড়ায় এ বার গোটা দেশেই বাজি পোড়ানো আগের চেয়ে অনেক কমেছে। দিল্লি পুলিশের মতে, এ বার রাজধানীতে কয়েক বছরের তুলনায় শব্দবাজির উপদ্রব ছিল অনেক কম। সার্বিক ভাবে বাজি ফেটেছেও কম। তবে বাজি পোড়ানোর দূষণ যে একেবারে বন্ধ করা যায়নি, আজ তা মেনে নিয়েছে কেজরীবাল প্রশাসন। দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী কৈলাস গহলৌত বলেন, ‘‘দূষণের প্রভাব রয়েছে পরিবেশ। তবে এ বছর পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে।’’ দিনভর বায়ুপ্রবাহ না থাকায় আজ সন্ধেয় ফের দূষণ সূচক বেড়ে যায় রাজধানী সংলগ্ন এলাকাতে। সন্ধেয় দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নর্থ ক্যাম্পাসের কাছে বায়ুর গুণগত সূচক পৌঁছয় ৭৪০-এ। যা স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত সাড়ে সাতগুণ বেশি। তবে বাজি কম পোড়ায় বাতাসে ভাসমান ক্ষতিকর কণা আগের চেয়ে কমেছে বলে দাবি করেছে দিল্লি দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটি। তাদের দাবি, গতবারের চেয়ে এখন বাতাসে প্রায় ৩০ শতাংশ কম ক্ষতিকর কণা রয়েছে। বাতাসে সালফার ডাই অক্সাইড ও কার্বন মনো অক্সাইডের পরিমাণও কমেছে।
এরই মধ্যে দিল্লি প্রশাসনকে চিন্তায় রেখেছে আগামী ৩ নভেম্বর রাজধানীতে হতে যাওয়া ভারত-বাংলাদেশ টি ২০ ম্যাচ। ২০১৭ সালের নভেম্বরে দিল্লিতে ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ চলাকালীন দূষণের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন শ্রীলঙ্কার কয়েকজন খেলোয়াড়। আজ কেজরীবাল বলেন, ‘‘আশা করছি, ক্রিকেট ম্যাচে দূষণ সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে না।’’ পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, পশ্চিম হাওয়া বইতে শুরু করলে দূষণের চাদর সরবে দেবে দিল্লির আকাশ থেকে। আগামী সাত দিনে পরিস্থিতি উন্নতি হবে বলে আশা করছে দিল্লি সরকার।
দূষণ ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনীতিও। দিল্লিতে বাজি থেকে হওয়া দূষণের পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে বলে সরব হয়েছেন আপের রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় সিংহ। গত কাল দিল্লি বিজেপির সভাপতি মনোজ তিওয়ারি শব্দ বাজি ফাটানোর একটি ভিডিয়ো টুইটারে পোস্ট করেছিলেন। সঞ্জয় বলেন, ‘‘যেখানে বাজি ফাটানোর বিরুদ্ধে প্রচার চলছে, সেখানে বিজেপির এক নেতা কী ভাবে সেই কাজকে উৎসাহ দেন! আসলে কেজরীবাল সরকারের ভাল কাজ আটকানোই বিজেপির উদ্দেশ্য। তা করতে গিয়ে অন্যায়কে প্রশ্রয় দিচ্ছেন ওই বিজেপি নেতা।’’ পাল্টা মুখ খুলেছেন বিজেপি নেতা বিজেন্দ্র গুপ্ত। তাঁর মন্তব্য, ‘‘দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সারা বছর কাজ করতে হয়। আপ সরকার তা করেনি। এখন অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy