সংসদে দুই অনুপ্রবেশকারীর প্রবেশের পর শুরু হয় উত্তেজনা। ছবি: সংগৃহীত।
তাঁরা কারা? সংসদে এ ভাবে স্লোগান দিতে ঢোকা ঢোকার উদ্দেশ্য কী? পিছনে কোনও সংগঠন যুক্ত রয়েছে? বুধবার সংসদে হানার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া চার জনকে নিয়ে এমনই সব প্রশ্ন ভাবাচ্ছে দিল্লি পুলিশকে। তবে এখনও পর্যন্ত পুলিশ যে তথ্য পেয়েছে, তাতে জানা গিয়েছে বুধবার সংসদের গ্যালারি থেকে ভবনে ঝাঁপ এবং ‘রং বোমা’ দেখানোর নেপথ্যে রয়েছে মোট ছ’জনের মাথা। দিল্লি পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ধৃত চার জন দাবি করেছেন তাঁরা কোনও সংগঠনের সদস্য নন। কোনও সংগঠনের সক্রিয় সমর্থকও নন।
বুধবার দুপুরে সংসদে আচমকা দুই যুবক লাফ দিয়ে পড়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দু’জনের নাম সাগর শর্মা এবং মনোরঞ্জন ডি। বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহার অতিথি হিসাবে প্রবেশ করেন সাগররা। দুই যুবকের সঙ্গে ছিলেন আরও দু’জন। এক মহিলা এবং এক যুবক। তাঁরা সংসদের নতুন ভবনের সামনে ‘তানাশাহি নেহি চলেগা’ বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দু’জনের নাম আনমল এবং নীলম।
বুধবারের ঘটনায় নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। এখনও পর্যন্ত যে তথ্য মিলছে, তাতে জানা যাচ্ছে, ওই দুই ব্যক্তির সঙ্গে ছিল ‘স্মোক গ্রেনেড’। বস্তুত, বুধবারই সংসদে হামলার ২২ বছর পূর্তি। ওই দিনই এই হামলার ফলে দুইয়ের মধ্যে কোনও যোগ আছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যদিও বুধবার ওই অনুপ্রবেশকারীরা হিংসার আশ্রয় নেননি। তাঁদের গ্রেফতারির পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ যে তথ্য পেয়েছে, সেখান থেকে এটা স্পষ্ট যে চার জনই পরস্পরের পূর্বপরিচিত। তবে তাঁদের পরিচয় হয় সমাজমাধ্যমে।
এখনও পর্যন্ত দিল্লি পুলিশের তদন্তে যে তথ্য মিলছে, সেখান থেকে জানা যাচ্ছে, বুধবারের ঘটনার পিছনে আরও দু’জন রয়েছেন। বস্তুত, তাঁদের পুরো পরিকল্পনাই হয়েছিল সমাজমাধ্যমে যোগাযোগের মাধ্যমে। পুলিশের দাবি, ছ’জন আলোচনা করে ঠিক করেন যে, সংসদের ভিতরে ঢুকে দু’জন ‘বিশৃঙ্খলা’ সৃষ্টি করবেন। দু’জন থাকবেন সংসদের বাইরে। তবে আরও দু’জনের গতিবিধি জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে এটুকু জানা যাচ্ছে, ছ’জনের কেউই দিল্লি শহরের বাসিন্দা নন। কেউ কর্নাটকের বাসিন্দা তো কেউ মহারাষ্ট্রের। তাঁরা সবাই দেখা করেন গুরুগ্রামে। সেখানে ললিত ঝা নামে এক জনের বাড়িতে আশ্রয় নেন।
পুলিশ এখনও পর্যন্ত ধৃতদের সম্পর্কে খণ্ড খণ্ড কিছু তথ্য জোগাড় করতে পেরেছে। যেমন, সাগর নামে যে যুবক মাইসুরুর বিজেপি সাংসদের অতিথি হিসাবে সংসদে ঢুকেছিলেন তাঁর বাবার নাম শঙ্করলাল শর্মা। আবার সাগরের লখনউয়ে ই-রিকশা চালান বলে খবর। ছেলের কাণ্ড শুনে সাগরের মা বলেন, ‘‘আমার কোনও ধারণাই নেই। আমি এ সব দেখে অবাক হয়ে গিয়েছি। ও বন্ধুদের সঙ্গে কোথায় একটা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছে। বলেছিল, দু’দিনের মধ্যে ফিরবে।’’
মনোরঞ্জনের বাড়ি কর্নাটকের মাইসুরুতে। ৩৫ বছরের ওই যুবক কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে বিটেক করেছেন বেঙ্গালুরুর বিবেকানন্দ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। মনোরঞ্জনের বাবা দেবরাজ গৌড়া একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তাঁর ছেলে সৎ এবং সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত। চ্যালেঞ্জের সুরে তিনি বলেন, ‘‘যদি সত্যিও ও কোনও ভুল করে থাকে, তাহলে শাস্তি হোক। সংসদ আমাদের সবার। মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহরুর মতো মহান মানুষদের পরিশ্রম রয়েছে। আমার ছেলে কোনও ভুল করে থাকলে ওকে ফাঁসি দেওয়া হোক।’’ উল্লেখ্য, সাগর এবং মনোরঞ্জনকে দুই সাংসদ ধরে ফেলেন। নীলম নামে যে মহিলা গ্রেফতার হয়েছেন, তিনি হরিয়ানার হিসরে একটি হস্টেলে থাকেন। হরিয়ানার সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বছর চল্লিশের ওই মহিলা। আনমল শিন্ডে নামে ২৫ বছরের যুবকটির বাড়ি মহারাষ্ট্রের লাতুর জেলায়।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে নীলম বা আনমল, কারও কাছে মোবাইল ফোন ছিল না। এমনকি, তাঁদের কাছে কোনও ব্যাগপত্রও ছিল না। নেই কোনও পরিচয়পত্রও। দিল্লি পুলিশের এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমকে জানাচ্ছে, তদন্ত চলছে। বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy