—প্রতীকী চিত্র।
সে দিন ছিল ১৯ জানুয়ারি। দিল্লি পুলিশের কাশ্মীরি গেট থানায় একটা ফোন এসেছিল। ফোনে জানানো হয়, ডিডিএ পার্কের মরি গেট এলাকায় এক যুবকের মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। তার মুখ এমন ভাবে বিকৃত করে দেওয়া হয়েছে যে চেনাই যাচ্ছে না! চোখের উপর একটা বড় কাটা দাগ, দেহ এবং তার আশেপাশের এলাকা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। শুনেই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। ১০ দিন ধরে তদন্ত চালিয়ে শেষমেশ খুনের কিনারা করা সম্ভব হল। জানা গিয়েছে, ২০ বছরের ওই যুবককে খুন করেছেন তাঁরই এক বন্ধু। কারণ, তিনি ওই বন্ধুকে তাঁর সঙ্গে ‘অস্বাভাবিক’ যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন!
অকুস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে দিল্লি পুলিশের ফরেন্সিক দল। তার পর দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। মৃতের পরিচয় জানতে পুলিশ কাশ্মীর গেট থানার খোয়া মান্ডি, মরি গেটের কাছে ৫০টিরও বেশি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখে। কিন্তু কোনও সূত্র পাওয়া যায়নি। এর পর ওই এলাকার ১০০ জনেরও বেশি লোকের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। তাতেই জানা যায়, মৃত যুবকের নাম প্রমোদকুমার শুক্ল, যিনি উত্তরপ্রদেশের জালোন জেলার রুদ্রপুরা গ্রামের বাসিন্দা। দিল্লির খোয়া মান্ডিতে রাকেশ তোমর নামে এক ব্যক্তির দোকানে কাজ করতেন তিনি। খোয়া মান্ডির কাছেই মরি গেটের রেইন বসেরায় থাকতেন। প্রমোদের মোবাইলের আইএমইআই নম্বর দেখে তদন্ত শুরু করা হয়। তাতেই জানা যায়, বিহারের মাধেপুরার ঘোসাই চৌসার বাসিন্দা রাজেশ নামে এক যুবকের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই কথা হত প্রমোদের।
তদন্তে আরও জানা যায়, প্রমোদকুমার শুক্ল এবং রাজেশ বন্ধু ছিলেন এবং দিল্লির মরি গেটে খোয়া মান্ডির কাছে রেইন বসেরায় একসঙ্গেই থাকতেন দু’জনে। প্রমোদকে শেষ বার রাজেশের সঙ্গেই দেখা গিয়েছিল। ডিডিএ পার্কে গত ১৭ জানুয়ারি রাজেশ এবং প্রমোদ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিল। এর পরে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় রাজেশ।
রাজেশের মোবাইল নম্বরের লোকেশন খতিয়ে দেখে জানা যায়, তিনি বিহারের পটনায় রয়েছেন। সেখান থেকেই গ্রেফতার করে কাশ্মীরি গেটে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় প্রমোদকে খুন করার কথা স্বীকার করেন রাজেশ। তিনি জানান, প্রমোদ রোজ তাঁর সঙ্গে ‘অস্বাভাবিক’ যৌনতায় লিপ্ত হতে চাইতেন। এমনকি, তা নিয়ে তাঁকে চাপ দিচ্ছিলেন বন্ধু!
১৭ জানুয়ারি তিনি প্রমোদের সঙ্গে ডিডিএ পার্কের একটি নির্জন জায়গায় বসে বিয়ার পান করছিলেন। তখন প্রমোদ ফের তাকে যৌন সম্পর্কের জন্য চাপ দিতে শুরু করেন। পার্কে সেই সময় আর কেউ ছিল না। রাজেশ প্রমোদের প্রস্তাবে রাজি হননি। সেই নিয়েই দু’জনের মারামারি হয়। তখনই প্রমোদকে খুন করেন তিনি।
এর পর, প্রমোদের পকেট থেকে ১৮ হাজার ৫০০ টাকা এবং মোবাইল ফোনটি নিয়ে পালান রাজেশ। পুরাতন দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে সে মোবাইলটি ৪০০ টাকায় বিক্রি করে দেন। গ্রেফতারি এড়াতে ট্রেনে চেপে পাঞ্জাবের অমৃতসরে পালিয়ে যান অভিযুক্ত। সেখানে পৌঁছে ১০ হাজার টাকায় একটি মোবাইল ফোন কেনেন তিনি। সেই ফোনের ক্যাশ মেমো স্লিপ সহ ওই ১০ হাজার টাকা মোবাইল ডিলারের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। রাজেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy