—ফাইল চিত্র।
দিল্লি হাইকোর্টে ফের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় সরকার। ফোনের কলারটিউনে করোনা প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য বার্তা দেওয়া হচ্ছে, অথচ দেশে প্রতিষেধকই নেই! এই অবস্থা তৈরি হতে দেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার কেন্দ্রকে তিরস্কার করেছে হাই কোর্ট। বিচারপতি বিপিন সাঙ্ঘি এবং বিচারপতি রেখা পাল্লির বেঞ্চ বলেছে, ‘‘যখনই ফোন করা হচ্ছে, আপনারা বিরক্তিকর মেসেজ শুনিয়ে যাচ্ছেন কে জানে কত ক্ষণ ধরে! অথচ প্রতিষেধক নেই! টিকা দিচ্ছেন না, কিন্তু লোককে বলছেন টিকা নিতে! টিকা না থাকলে নেবেটা কে?’’
অক্সিজেন সঙ্কট, হাসপাতালের শয্যা সঙ্কট, ওষুধের সঙ্কট এবং প্রতিষেধকের সঙ্কট— কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সব দিক থেকেই নাজেহাল সরকার। নাগরিক সমাজ, সংবাদমাধ্যম, বিরোধী শিবির থেকে আদালত— সর্বত্র রোজ মুখ পুড়ছে। দিল্লি হাই কোর্টের বক্তব্য, সকলকে টিকা দিক কেন্দ্র। প্রয়োজনে পয়সা নিক, কিন্তু সকলকে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করুক। আর ফোনের একঘেয়ে মেসেজ বদলাক। ‘‘দশ বছর ধরে একই মেসেজ বাজাবেন না কি?’’ সরকারকে প্রশ্ন করেছে আদালত।
চার দিক থেকে ছুটে আসা সমালোচনার মধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সদানন্দ গৌড়া আজ মেজাজ হারিয়ে বলেছেন, ‘‘আদালত টিকা দিতে বলছে, সদুদ্দেশ্যেই বলছে। আদালত যদি কাল বলে এতগুলো টিকা দিতে হবে, আর সেই টিকা যদি না-থাকে আমাদের হাতে, কী করব আমরা? প্রতিষেধক পাওয়া যাচ্ছে না বলে গলায় দড়ি দেব? বাস্তব হল, কিছু কিছু জিনিস আমাদেরও নিয়ন্ত্রণে নেই।’’ তাঁর এই বক্তব্য অবশ্য নাগরিক সমাজের ক্রোধই বাড়িয়েছে। ‘‘আর কিছু না পারলে অন্তত পদত্যাগ করুন!’’ টুইটারে লিখেছেন অনেকেই।
১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের জন্য প্রয়োজনীয় টিকা রাজ্যগুলিকেই সংগ্রহ করে নিতে বলেছে কেন্দ্র। কিন্তু টিকা অমিল। মহারাষ্ট্র এবং কর্নাটক তাই আজ থেকে ওই টিকাকরণ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই দুই রাজ্য এবং অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, তামিলনাড়ু, দিল্লি এবং হরিয়ানা প্রতিষেধক কেনার জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্রও আহ্বান করতে চলেছে। যদিও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের মতে, ‘‘এই ভাবে টিকার জন্য রাজ্যগুলিকে একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে ভারতের ভাবমূর্তিই খারাপ হচ্ছে। কেন্দ্রের উচিত, টিকা সংগ্রহ করে রাজ্যগুলির মধ্যে বণ্টন করা।’’
প্রতিষেধকের জন্য হাপিত্যেশ করে থাকা রাজ্যগুলি যখন নিয়মিত ভাবে কেন্দ্রের কাছে দরবার জানাচ্ছে, তখন আগামী ছয় মাসে দেশের প্রতিষেধক-চিত্র উজ্জ্বল হয়ে উঠবে বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য কর্তারা। নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ভি কে পল আজ দাবি করেছেন, প্রতিষেধকের জোগান নিয়ে সাময়িক সমস্যা হলেও অগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের বাজারে প্রায় ২১৬ কোটি প্রতিষেধকের জোগান দেওয়া সম্ভব হবে।
তাঁর কথায়, এ দেশের ৯৫ কোটি মানুষ যদি দু’দফায় প্রতিষেধকের ডোজ় নেন তা হলে যে পরিমাণ প্রতিষেধক প্রয়োজন হবে, বিভিন্ন দেশীয় সংস্থাই ডিসেম্বরের মধ্যে সেই চাহিদা মেটাতে সক্ষম। এ বাদে দেশীয় সংস্থা ছাড়াও বিদেশি সংস্থার জন্য এ দেশে প্রতিষেধক উৎপাদন করার ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে কেন্দ্র। ভি কে পল জানান, এফডিএ বা হু অনুমোদিত যে কোনও টিকাই স্বাগত। আবেদন করলে দু’এক দিনের মধ্যে আমদানি লাইসেন্স দেওয়া হবে। বিদেশি সংস্থা ভারতে এসে কোভ্যাক্সিন বানাতে চাইলেও স্বাগত। আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সদানন্দও একই সুরে জানান, কোভ্যাক্সিনের মেধাস্বত্ব তাঁরা বিদেশি সংস্থাকে দিতে প্রস্তুত। পলের আশা, বিদেশি সংস্থাগুলি উৎপাদনে এগিয়ে এলে ডিসেম্বরের অনেক আগেই গোটা দেশকে প্রতিষেধকের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy