লাভজনক পদে থাকার অভিযোগে ২০ জন আপ বিধায়কের বিধায়ক পদ বাতিল করেছিল নির্বাচন কমিশন। অনুমোদন করেন খোদ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। দিল্লি হাইকোর্ট আজ কমিশনের ওই সিদ্ধান্ত খারিজ করে দিয়েছে। যুক্তি, ন্যায়বিচারের শর্ত মানা হয়নি। অভিযুক্ত বিধায়কদের বক্তব্য শোনা হয়নি। প্রয়োজনীয় তথ্য জানানো হয়নি তাদের। ফলে বিষয়টি কমিশনকে নতুন করে পর্যালোচনা করতে হবে। শুনতে হবে আপ বিধায়কদের বক্তব্য।
কমিশনের কর্তারা এতে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে। চুপ বিজেপি। কিন্তু হাল ছাড়ছে না কংগ্রেস। তারা বলছে, বিধায়ক থাকা কালেই ওই ২০ জন যে পরিষদীয় সচিব হিসেবে প্রাপ্য সুবিধাগুলি নিয়েছেন, সেটা হাইকোর্ট খারিজ করেনি। কংগ্রেস তাই কমিশনে লড়ে যাবে এ নিয়ে। আড়াই বছরের লড়াইয়ে জিতে স্বাভাবিক ভাবেই খুশির হাওয়া আপ শিবিরে। রায় শুনে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল টুইট করেন, ‘সত্যের জয় হল।’ দিল্লি বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন চলছে। স্পিকারের অনুমতি পেয়ে ওই বিধায়কেরা আজই সেই অধিবেশনে অংশ নেন।
আপের এখন দাবি, নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমা চাইতে হবে, নয়তো পদত্যাগ করতে হবে নির্বাচন কমিশনারদের। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও পি রাবত অবশ্য একে বড় ধাক্কা বলে মানতে চাননি। তিনি বলেছেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনা আগেও হয়েছে। আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে তা মেনে চলা হবে।’’
বিতর্কটা কী নিয়ে?
দিল্লিতে এই দফায় মুখ্যমন্ত্রী হয়ে কেজরীবাল মন্ত্রী করেন ৬ জনকে। মন্ত্রী করা যায়নি, এমন ২১ জনকে বিভিন্ন দফতরের পরিষদীয় সচিব করে দেন। এতে অভিযোগ ওঠে, এটা বিধায়কদের বাংলো, গাড়ি ও অন্যান্য সরকারি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার ফিকির। এক জন মাঝে ইস্তফা দেওয়ার পরে বাকি ২০ জনের বিধায়ক পদের বৈধতার প্রশ্নটি গড়ায় নির্বাচন কমিশনে। তারা অভিযুক্তদের মৌখিক বক্তব্যও না শুনে বিধায়কপদ খারিজের সুপারিশ পাঠিয়ে দেয় রাষ্ট্রপতির কাছে। আপের যুক্তি শোনার অপেক্ষায় না থেকে রাষ্ট্রপতিও তড়িঘড়ি কমিশনের সুপারিশে সিলমোহর বসান। দিল্লিতে ২০টি আসনে উপনির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দেয় বিজেপি। আর আপ দ্বারস্থ হয় দিল্লি হাইকোর্টের।
আজ মামলার রায় বেরোতেই দলের সদর দফতরের সামনে ড্রাম পিটিয়ে নাচগান শুরু করেন উৎসাহী সমর্থকেরা। উচ্ছ্বসিত কেজরীবাল টুইট করেন, ‘দিল্লির মানুষের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অন্যায় পথে বরখাস্ত করা হয়েছিল। দিল্লি হাইকোর্ট দিল্লিবাসীকে ন্যায় দিল। দিল্লিবাসীর বড় জয়। দিল্লিবাসীদের অভিনন্দন।’
এই দফায় জিতলেও আপের লড়াই শেষ হচ্ছে না। এ বার নির্বাচন কমিশনে গিয়ে তাদের প্রমাণ করতে হবে, পরিষদীয় সচিব হওয়াটা আদৌ লাভজনক পদে থাকা নয়। কবে তাদের বক্তব্য শোনা হবে? মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাবত বলেছেন, ‘‘আদালতের প্রতিলিপি হাতে পেলেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy