Advertisement
E-Paper

Elephants Death in Assam: ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেশ হলেও অসমে ১৮টি হাতির ‘বজ্রপাতে’ মৃত্যু ঘিরে কাটেনি সন্দেহ

ময়নাতদন্তে মৃত হাতিগুলির দেহে বিষের উপস্থিতি মেলেনি বলেও জানানো হয়েছে বন দফতরের রিপোর্টে।

বামুনি পাহাড়ে মৃত হাতি।

বামুনি পাহাড়ে মৃত হাতি। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২১ ১৪:৫৭
Share
Save

বন্যপ্রাণপ্রেমী সংগঠনগুলির দাবি মেনে অসমের বামুনি পাহাড়ে এক সঙ্গে মৃত ১৮টি হাতির ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেশ করেছে অসম বন দফতর। তাতে সন্তুষ্ট নন বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ এবং বন্যপ্রেমীদের অনেকেই। শনিবার,বিশ্ব পরিবেশ দিবসে ফের বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন তাঁরা।

বন্যপ্রাণ বিশারদ তথা বলে ‘নেচারস বেকন’ সংগঠনের কর্ণধার সৌম্যদীপ দত্ত শনিবার বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে আমরা দেখেছি ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিকে সোমবার এ বিষয়ে আমরা আমাদের পর্যবেক্ষণ জানাব।’’

অসম সরকারের দাবি, গত ১২ মে নগাঁও জেলার বামুনিপাহাড়ে প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে বজ্রপাতের কারণেই হাতিগুলির মৃত্যু হয়েছিল। দেহগুলির ময়নাতদন্তের পরে নগাঁওয়ের বিভাগীয় বনাধিকারিকের তরফে প্রাথমিক ভাবে একটি ‘হিস্টো প্যাথোলজিক্যাল রিপোর্ট’ প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে বহু তথ্য অমিল বলে ‘নেচারস বেকন’-সহ অসমের কয়েকটি বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ সংগঠন অভিযোগ তোলে। তারা রাজ্যের বনমন্ত্রী পরিমল শুক্ল বৈদ্যের কাছে ৫ জুনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশের দাবি জানায়। পাশাপাশি, সৌম্যজিৎ-সহ একাধিক বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ সন্দেহ প্রকাশ করেন, হাতিগুলিকে বিষপ্রয়োগে বা বিদ্যুতের বেড়ার ফাঁদে ফেলে খুন করা হয়ে থাকতে পারে।

বৃহস্পতিবার বন দফতর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ করে। রাজ্যের উপ-মুখ্যবনপাল কেকে দেওরির নেতৃত্বে ৬ জন পশুচিকিৎসক দলের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বজ্রপাতের কারণেই হাতিগুলির মৃত্যু হয়েছিল। ময়নাতদন্তে মৃত হাতিগুলির দেহে বিষের উপস্থিতি মেলেনি বলেও জানানো হয়েছে রিপোর্টে। যদিও তাতে সন্দেহ দূর হয়নি অসমের বন্যপ্রেমী এবং বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের।

ঘটনার পরেই ‘নেচারস বেকন’-সহ কয়েকটি সংগঠনের পর্যবেক্ষক দল বামুনি পাহাড়ে গিয়েছিল। তাদের অভিযোগ, বন দফতরের তদন্তকারী দলে কোনও ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার এবং ভূ-বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। যা অতি প্রয়োজনীয় ছিল। নগাঁওয়ের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আন্দোলনের কর্মী তথা ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার ভাস্কর বড়ুয়ার কথায়, ‘‘বামুনি পাহাড়ে হাতিগুলির দেহে বিভিন্ন অবস্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে ছিল। সে ক্ষেত্রে এক বার বজ্রপাতে একসঙ্গে ১৮টি হাতি মারা যাওয়া সম্ভব নয়। তা ছাড়া পাহাড়ের ঢালে একটি সেগুন গাছের উপর বাজ পড়েছিল বলা হচ্ছে। সবচেয়ে নীচে যে হাতির দেহটি পাওয়া গিয়েছে, তার অবস্থান সেগুন গাছটি থেকে ১২ ফুটেরও বেশি উপরে। অন্য হাতিগুলির দেহ আরও উপরে পড়ে ছিল। কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতা বলছে, পাহাড়ের ঢালে বজ্রপাত স্থলের নীচের দিকে থাকা মানুষ বা প্রাণীরা মারা পড়ে।’’

সৌম্যদীপ বলেন, ‘‘হাতিগুলির দেহ যেখানে পড়েছিল তার আশপাশে ঝোপঝাড় বা মাটিতে বজ্রপাতের তেমন কোনও চিহ্ন মেলেনি। বরং আশপাশে মাটিতে প্রচুর নুনের চিহ্ন পেয়েছি।’’ নুন হাতিদের খুবই প্রিয়। তাই নুনের লোভ দেখিয়ে হাতিদের টেনে এনে খুন করা হয়ে থাকতে পারে বলে তাঁর অভিযোগ। বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ তথা রসায়নবিদ মানসলোচন দাস বলেন, ‘‘আমরা দেখেছি বসা অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকটি হাতির। অর্থাৎ মৃত্যুর আগে তারা বসে পড়ার সময়টুকু পেয়েছিল। কিন্তু অতি শক্তিশালী বজ্রপাতের শিকার হলে দাঁড়ানো অবস্থাতেই তৎক্ষণাৎ তাদের মারা যাওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে পাহাড়ের ঢাল দিয়ে দেহগুলি অনেকটা গড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি।’’ তিনসুকিয়ার বাসিন্দা, বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আন্দোলনের কর্মী স্নিগ্ধা মুখোপাধ্যায় বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশিত হলেও কিছু ক্ষেত্রে এখনও সংশয় রয়েছে। আমরা চাইব, দ্রুত রাজ্য বন দফতর সেগুলি দূর করুক।

Assam elephant Nagaon Elephant Death

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}