ঝালদায় রাস্তা পেরোচ্ছে হায়না। ছবি: মৃন্ময় দাস।
করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধের জেরে জেরা রাস্তায় যান চলাচল কমেছে। কমেছে মানুষের আনাগোনা। এই পরিস্থিতিতে পুরুলিয়ার জঙ্গল-ঘেঁষা লোকালয়গুলির কাছে যাতায়াত বেড়েছে বন্যপ্রাণীদের। অতিমারি পরিস্থিতিতে, মহকুমা সদর ঝালদার কাছে ক্যামেরাবন্দি হয়েছে হায়না, ময়ূর এবং বেশ কিছু অল্পচেনা পাখি ও সরীসৃপ। অদূরের তুলিন এলাকায় উদ্ধার হয়েছে লোকালয়ে ঢুকে পড়া চিতল হরিণ।
নেটমাধ্যমে ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে ঝালদার স্কুল শিক্ষক মৃন্ময় দাসের তোলা হায়নার ভিডিয়ো। গত মঙ্গলবার বিকেলে ঝালদার দুই অরণ্যপ্রেমী তাপস কর্মকার এবং বিনয় রুংটার সঙ্গে অদূরে শিকরা পাহাড়ের কাছে গিয়েছিলেন মৃন্ময়। সেখানেই হায়নার মুখোমুখি হন তাঁরা। মৃন্ময় বলেন, ‘‘আমি চাকরি সূত্রে কয়েক বছর আগে ঝালদায় এসেছি। অঞ্চলে কিছু বন্যপ্রাণ এখনও টিকে আছে বলে শুনেছিলাম। কিন্তু আগে কখনও চোখে দেখিনি। সম্প্রতি লকডাউনের মতো পরিস্থিতির কারণে বিকেলের পর এলাকা নির্জন হয়ে পড়ে। তাই সেগুলি দেখতে পাচ্ছি। ছবিতে তুলতে পারছি।’’
তাপস জানালেন, শুধু হায়না নয়, করোনা পরিস্থিতিতে তাঁরা ক্যামেরা-বন্দি করেছেন শিয়াল, খেঁকশিয়াল এবং ময়ূর, ভারতীয় ধূসর ধনেশ, পেইন্টেড স্পার ফাউল, শিরকির মালকোহার মত নানা পাখি। পাহাড়ের খাঁজে অজগরের পাশাপাশি পেয়েছেন গ্রিন পিট ভাইপারের মতো দক্ষিণবঙ্গে বিরল সাপও। বিনয়ের কথায়, ‘‘বন ও বন্যপ্রাণ দেখা ও ছবি তোলার নেশা থাকায় আমরা প্রতিদিন ঝালদা সংলগ্ন পাহাড়-জঙ্গলে ঘুরি। অতিমারি সংক্রান্ত বিধিনিষেধ জারি হওয়ার ফলে নানা দুর্লভ দৃশ্য দেখতে পাচ্ছি, যা আমাদের কাছে খুবই আনন্দের।’’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পুরুলিয়ার একাধিক বনাঞ্চলে ভারতীয় প্রাণী সর্বেক্ষণ (জেডএসআই)-এর গবেষকদের বসানো ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল হায়না এবং ধূসর নেকড়ের ছবি। বন্যপ্রাণ সমীক্ষক সংস্থা ‘হিউম্যান অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট অ্যালায়্যান্স লিগ’ (হিল)-এর সম্প্রতি পুরুলিয়ার ঝালদা ও বাঘমুন্ডি ব্লকের জঙ্গল-ঘেঁষা অসংরক্ষিত এলাকাগুলিতে হায়নার উপস্থিতির খোঁজ শুরু করেছে। পাশাপাশি, হায়না ও মানুষের সঙ্ঘাতের কারণগুলিও অনুসন্ধান করছে তারা। সংগঠনের সম্পাদক শুভ্রজ্যেতি চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘ঝালদা ও বাঘমুন্ডি ব্লকের বেশ কয়েকটি এলাকায় আমরা ইতিমধ্যেই হায়নার খোঁজ পেয়েছি। ছবিও তুলতে পেরেছি।’’
বন দফতরের ঝালদার রেঞ্জার বিশ্বজিৎ দে বলেন, ‘‘হায়নার ভিডিয়োটি আমিও দেখেছি। যে এলাকায় এটি দেখা গিয়েছে, সেখানে আমাদের কর্মীরা নজর রাখছেন। সরকারি বনসৃজন প্রকল্পের কারণে এই অঞ্চলে জঙ্গল যেমন বেড়েছে, ঠিক তেমনভাবে বন্যপ্রাণও বেড়েছে।’’ তিনি জানান, কয়েকদিন দিন আগেও তুলিন এলাকা থেকে চিতল হরিণ উদ্ধার করে পুলিশ এবং বন দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy