ফাইল ছবি
দু’বছর আগে দিল্লিতে সংঘর্ষের সময়ে পুলিশি নিগ্রহের পরে আহতদের অনেককেই জোর করে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনার ভিডিয়োও ছড়িয়ে পড়েছিল সমাজমাধ্যমে। পরে জানা যায় যে, দিল্লির ভজনপুরা অঞ্চলে ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ওই ঘটনা ঘটেছিল। ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছিল, ফৈজ়ান নামে ২৩ বছরের এক যুবককেও। গুলিতে আহত ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছিল ঘটনার চার দিন পরেই। তার পরে দু’বছর কেটে গিয়েছে। চলতি বছরে দিল্লি হাই কোর্টের নির্দেশের পরে নড়েচড়ে বসেছে দিল্লি পুলিশের অপরাধদমন শাখা। দোষী পুলিশকর্মীকে খুঁজে বার করতে তৎপর হয়েছে পুলিশ মহল। সেই জন্য বিশেষ ঘোষণাও করা হয়েছে। বলা হয়েছে, দোষী পুলিশকর্মীর খোঁজ দিলে এক লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
ফৈজ়ানের মা প্রথম থেকেই ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন পুলিশকে। তাঁর দাবি, পুলিশি নিগ্রহের জেরেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর সন্তানের।
সূত্রের খবর, দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখা এখনও পর্যন্ত প্রায় ২৫০ জন পুলিশকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ফৈজ়ানের মৃত্যুর কিনারার জন্য। ঘটনার দিন কোন কোন পুলিশকর্মী সংঘর্ষস্থলে কর্মরত ছিলেন, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি বহু নথিও পরীক্ষা করে দেখেছে অপরাধ দমন শাখা।
পুলিশ সূত্রের খবর, সন্দেহভাজন পুলিশকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদের পরে দিল্লি পুলিশের এক হেড কনস্টেবলকে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্ত বিষয়টি মানতে চাননি। পরে তাঁর পলিগ্রাফ পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু সেটিও ব্যর্থ হয়। এর পরে একটি ভিডিয়ো থেকে ওই পুলিশকর্মীর ‘ভয়েস স্যাম্পল’ নিয়ে রোহিনীর ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। সূত্রের খবর, অপরাধদমন শাখার পদস্থ আধিকারিকেরা বিশেষ তদন্তকারী দলকে জানিয়েছে, দিল্লি সংঘর্ষের যে সমস্ত অভিযোগের সমাধান এখনও হয়নি, সেখানে তদন্তকারী অফিসার যেন বদল করা হয়। যাতে নতুন তদন্তকারী অফিসার এসে নতুন করে তদন্ত করতে পারেন। গতি আসে তদন্ত প্রক্রিয়ায়। সেই সিদ্ধান্ত অনুসারেই সম্প্রতি ফৈজ়ানের মৃত্যুর তদন্তকারী অফিসারও বদল করা হয়েছে। নতুন অফিসার দায়িত্ব নেওয়ার পরেই অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর সন্ধানে ১ লক্ষ পুরস্কার ঘোষণা করেন।
২০২০ সালের জুনে একটি সংবাদমাধ্যমের তরফেও অভিযোগ করা হয় যে, ওই বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি ভজনপুরা থানায় যে এফআইআর দায়ের করা হয়, সেখানে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ এড়ানো হয়েছিল। পরে সেই মামলার তদন্তভার হাতে নেয় অপরাধদমন শাখা।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে সুবিচারের জন্য দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় ফৈজ়ানের পরিবার। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এই মামলায় হাই কোর্ট দিল্লি পুলিশকে তদন্তে দেরির অভিযোগ তুলে ভর্ৎসনা করে। এর পাশাপাশি নির্দেশ দেয় যে, ফৈজ়ান ও আরও চার জনকে নিগ্রহে যে পুলিশকর্মীরা জড়িত রয়েছেন, তাঁদের যেন অবিলম্বে শণাক্ত করা হয়। এর পরেই সক্রিয় হয় অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশ।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy