Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Supreme Court

পৈতৃক সম্পত্তি মেয়েদেরও, পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের

১৯৫৬ সালের হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে পৈতৃক সম্পত্তিতে মেয়েদের সমানাধিকার দেওয়া হয়নি।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২০ ০৪:৫৪
Share: Save:

কন্যা মানে সারা জীবনই কন্যা। হিন্দু অবিভক্ত পরিবারে পৈতৃক সম্পত্তিতে মেয়েদের সমানাধিকার সম্পর্কে রায় দিতে গিয়ে আজ এই পর্যবেক্ষণ করেছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা রায় দিয়েছেন, ‘‘অবিভক্ত যৌথ পরিবারের সম্পত্তিতে মেয়েদের সারা জীবন সমান অধিকার রয়েছে।’’

১৯৫৬ সালের হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে পৈতৃক সম্পত্তিতে মেয়েদের সমানাধিকার দেওয়া হয়নি। এর প্রায় ৫০ বছর পরে, ২০০৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সেই আইন সংশোধন করা হয় এবং ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে পৈতৃক সম্পত্তিতে সমানাধিকারের কথা বলা হয়। কিন্তু সেই সংশোধনীর ‘রেট্রোস্পেক্টিভ এফেক্ট’ নিয়ে এত দিন ধোঁয়াশা ছিল। অর্থাৎ, সংশোধনী ঘোষণার আগের সময়কালেও সংশোধনীর নিয়ম কার্যকর হবে কি না, তা স্পষ্ট হচ্ছিল না। ২০০৫-এর পরে সুপ্রিম কোর্টেই করা একাধিক মামলার রায়ে সেই ধোঁয়াশা আরও বাড়ে। যেমন, ২০১৬ সালে ফুলবতী বনাম প্রকাশের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, সংশোধনীর ‘রেট্রোস্পেক্টিভ এফেক্ট’ নেই। কিন্তু, তার দু’বছর পরে, ২০১৮ সালের আরও একটি মামলায় (দামান্না বনাম অমর) শীর্ষ আদালতের আরও একটি বেঞ্চ রায় দিয়েছিল, ২০০৫-এর সংশোধনীর ‘রেট্রোস্পেক্টিভ এফেক্ট’ আছে।

২০০৫-এর আগে কারও বাবা মারা গেলে এই আইন প্রয়োগ করা যাবে কি না, সেই প্রশ্ন তুলে দেশের বিভিন্ন আদালতে গত কয়েক বছরে একাধিক মামলা করা হয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম ছিল বিনীতা শর্মা বনাম রাকেশ শর্মা মামলা। সেই সব মামলার একসঙ্গে শুনানি হচ্ছিল বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চে। বেঞ্চের বাকি সদস্যরা হলেন বিচারপতি এস আব্দুল নাজ়ির এবং এম আর শাহ। সেই বেঞ্চ আজ রায় দিয়েছে, ২০০৫ সালের আগেও কারও বাবা মারা গিেয় থাকলে তাঁর সম্পত্তিতে তাঁর ছেলে ও মেয়ের সমান অধিকার রয়েছে। বিচারপতি মিশ্রের কথায়, ‘‘মেয়েরা সারা জীবনই মেয়ে থেকে যায়। ছেলেরা শুধু বিয়ে হওয়া পর্যন্ত ছেলে থাকে।’’ এর পরে ২০০৫-এর সংশোধনীর ‘রেট্রোস্পেক্টিভ এফেক্ট’ নিয়ে সব বিতর্কের অবসান হল বলেই মনে করা হচ্ছে।

বিনীতা শর্মার আইনজীবী, প্রাক্তন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘এটা হল ভারতবর্ষে সব লিঙ্গের সমানাধিকার বিষয়ে অন্যতম প্রধান রায়। আমাদের সংবিধানে ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে তফাৎ করা হয় না। কিন্তু এত দিন সম্পত্তি ভাগ করার সময়ে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ফারাক করা হত। সেই বৈষম্যের অবসান হল।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE