Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

কাজ হারিয়ে ৪৮ হাজার কর্মীর দেওয়ালি আঁধারেই 

লাড্ডুতে উৎসাহ নেই, নতুন পোশাক চান না ওঁরা, চোখ ধাঁধানো আতসবাজিও ওঁদের জন্য নয়। তেলঙ্গানা সড়ক পরিবহণ নিগমের ৪৮ হাজার কর্মীর এখন একটাই চাওয়া— তাঁদের চাকরিটা ফিরিয়ে দিন মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর)।

—নিজস্ব চিত্র।

—নিজস্ব চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:১২
Share: Save:

ঝলমলে আলোয় গোটা দেশে যখন দীপাবলি পালিত হল, ওঁদের ঘরে তখন দলা পাকানো অন্ধকার। কেউ লাড্ডু নিয়ে যাননি ওঁদের কাছে। দশেরা গিয়েছে পুরনো জামা পরে, দেওয়ালিও কাটল সে ভাবেই।

লাড্ডুতে উৎসাহ নেই, নতুন পোশাক চান না ওঁরা, চোখ ধাঁধানো আতসবাজিও ওঁদের জন্য নয়। তেলঙ্গানা সড়ক পরিবহণ নিগমের ৪৮ হাজার কর্মীর এখন একটাই চাওয়া— তাঁদের চাকরিটা ফিরিয়ে দিন মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর)। দেড় মাস কেটে গিয়েছে, বেতন পাননি। নিগমকে পুরোপুরি সরকারি অধিগ্রহণের দাবিতে আন্দোলনে নামায় পরিবহণ নিগমের সব কর্মীকেই ছাঁটাই করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর থেকেই সপরিবার তাঁরা রাস্তায়।

বাস কনডাক্টরের মেয়ে ছোট্ট নেহা বলছে, ‘‘বাজি বা নতুন পোশাক আমাদের দরকার নেই। মাইনে না-পাওয়ায় স্কুলে ফি জমা দিতে পারেননি বাবা। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের পরীক্ষায়ই বসতে দিচ্ছেন না!’’ তাঁর মা সৌভাগ্যলক্ষ্মী বলছেন, ‘‘উৎসবের কথা আমরা ভাবতেই পারছি না। ছোটরা তো অত বোঝে না, তারা আনন্দ করতে চায়। কিন্তু জামাকাপড় কিনে দেব কোথা থেকে, হাতে তো টাকাকড়িই নেই। সরকারের উচিত বকেয়া মাইনেটা অন্তত দিয়ে দেওয়া!’’

মুখ্যমন্ত্রী সকলকে ছাঁটাই করে দিয়ে ঘোষণা করেছেন, ‘‘ওদের দায় রাজ্য সরকার নেবে না।’’ তার পর থেকে এ পর্যন্ত তিন জন পরিবহণ কর্মী আত্মঘাতী হয়েছেন। শেষ ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার, নিজেকে শেষ করে দিয়েছেন নালগোন্ডার ৫৩ বছরের বাস চালক বেঙ্কটেশ্বরালু। তাতেও নরম হননি মুখ্যমন্ত্রী।

রাজ্যের দুই বিরোধী দল বিজেপি আর কংগ্রেস কেসিআর-এর এই আচরণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। তিন পরিবহণ কর্মীর মৃত্যুর জন্য তারা মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করেছে। কেসিআর তাও বলে চলেছেন, ‘‘আমার কোনও দায়িত্বই নেই!’’

এর আগেও পরিবহণ কর্মীরা দাবি-দাওয়া জানানোয় মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সাফ বলে দিয়েছিলেন, ‘‘নিগম বছরে ১২ হাজার কোটি টাকা লোকসান করে। আন্দোলন না করে আপনারা বরং মন দিয়ে কাজ করে নিগমকে শক্তিশালী ও লাভজনক করে তুলুন।’’ এর পরেও কর্মীরা আন্দোলনে অনড় থাকলে সবাইকে ছাঁটাই করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘আমি নই, তাঁরা নিজেরাই নিজেদের ছাঁটাই করেছেন। কাজ করার অধিকারই নেই এই কর্মীদের।’’

পরিবহণ সমস্যার সমাধান খুঁজতে গত সপ্তাহে ৬ সদস্যের একটি দল তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। তার পর থেকে কয়েক বার আলোচনা হলেও জট কাটেনি। সেপ্টেম্বর মাসের মাইনেও এই কর্মীদের দেয়নি সরকার।

কবে এ সমস্যা মেটে, সকলেই তাকিয়ে সে দিকে। তত দিন রাস্তাতেই থাকছেন তেলঙ্গানার ৪৮ হাজার পরিবহণ কর্মী ও তাঁদের পরিবার।

অন্য বিষয়গুলি:

Telengala Telengana Transport Strike
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy