প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।—ছবি পিটিআই।
বুধবার বেলা আড়াইটেয় বাংলায় ঘূর্ণিঝড় আমপান আছড়ে পড়েছিল। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রথম প্রতিক্রিয়া এল।
তৃণমূলের এক শীর্ষনেতা নেতা ফোন করে মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর তৎপরতা দেখার মতো। ঠিক ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তিনি টুইট করেছেন। গুজরাত বা উত্তরপ্রদেশে পথ দুর্ঘটনা হলেও এক ঘণ্টার মধ্যে প্রতিক্রিয়া চলে আসত।’’
প্রধানমন্ত্রী আজ টুইট করে জানান, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় আমপানের দৃশ্য দেখছি। এই চ্যালেঞ্জের সময় গোটা দেশ পশ্চিমবঙ্গের পাশে রয়েছে। রাজ্যের মানুষের মঙ্গল কামনা করছি। স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। কেন্দ্রের শীর্ষ আধিকারিকেরা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করছেন।’’
সেই টুইট
Have been seeing visuals from West Bengal on the devastation caused by Cyclone Amphan. In this challenging hour, the entire nation stands in solidarity with West Bengal. Praying for the well-being of the people of the state. Efforts are on to ensure normalcy.
— Narendra Modi (@narendramodi) May 21, 2020
প্রধানমন্ত্রীর টুইটের মিনিট চারেক আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-ও পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে টুইট করেন। কেন্দ্রীয় সরকারের দুই শীর্ষ ব্যক্তির পশ্চিমবঙ্গের দুর্যোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে কেন প্রায় সাড়ে ২৩ ঘণ্টা লাগল, তা নিয়ে রাজনৈতিক শিবিরের সঙ্গে আমজনতার মধ্যেও প্রশ্ন উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষের মনে আরও একটি প্রশ্ন, অধিকাংশ জাতীয় সংবাদমাধ্যমে বাংলায় আমপানের তাণ্ডব নিয়ে খবর নেই কেন? তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের মন্তব্য, ‘‘আমরা মানুষের বিবেচনার উপরেই ছাড়ছি।’’
আজ পরপর তিনটি টুইটের শেষে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, দুর্গতদের সাহায্যে কোনও প্রচেষ্টাই বাকি থাকবে না। কিন্তু সত্যিই আর্থিক সাহায্য করা হবে তো? এ বিষয়ে যেমন নবান্ন থেকে তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্বের মনে প্রশ্ন রয়েছে, তেমনই রাজ্যের কংগ্রেস, সিপিএমের মতো বিরোধী দলের নেতারাও মনে করছেন, মোদী জমানায় সাহায্যের আশ্বাস মুখের কথা হয়েই থেকে যেতে পারে। সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘রাজ্যের জন্যে কেন্দ্রীয় সাহায্য প্রয়োজন। তবে সেটা সাহায্যই হতে হবে। লকডাউনে কেন্দ্রের সাম্প্রতিক আর্থিক প্যাকেজের মতো হলে চলবে না!’’ কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীরও দাবি, কেন্দ্রের এখন রাজনীতি না করে আর্থিক সাহায্য করা উচিত।
কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বাংলার বিজেপি নেতৃত্ব কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের জন্য আর্থিক সাহায্যের দাবি তোলেনি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের যুক্তি, ‘‘এখনও তো কতখানি ক্ষয়ক্ষতি, বোঝা যাচ্ছে না।’’ কিন্তু কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতারা যুক্তি দিচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রী তৎপর না হলে তিনি নিজেই রাজ্যের পরিস্থিতি দেখতে যেতেন না। অমিত শাহের যুক্তি, ‘‘নরেন্দ্র মোদী সরকার দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তার জন্য দায়বদ্ধ। আমি নিজে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি।’’ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় জানিয়েছেন, মোদী-শাহ দু’জনেই নজর রাখছেন। তাঁর পরিবেশ মন্ত্রকেও তিনি সুন্দরবনের পুনর্বাসন পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠক করেছেন।
বাংলার রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়েছে, বিজেপি এত দিন করোনা-সঙ্কট, পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যাকে মমতার সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে। এ বার আমপানের মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার ইতিবাচক ভূমিকা নিয়ে সব কৃতিত্ব একাই নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। তৃণমূল নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগেই এ নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না। কারণ দলের নেত্রী নিজেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি এখনই ঝগড়া চান না। কিন্তু বিজেপি যে এর থেকে যে কোনও প্রকারে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করবে, তাতে কারও সন্দেহ নেই। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় যে ভাবে বিভিন্ন এজেন্সির দায়িত্ববোধের ফলে (তিনি যাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন) রাজ্যে ন্যূনতম ক্ষতি হয়েছে বলে টুইট করেছেন, তাতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় যথেষ্ট চর্চা হয়েছে। এক জনের মন্তব্য, ‘ন্যূনতম ক্ষতি? এ বার যে আমরাও একটু আধটু অপমানিত হতে শুরু করেছি, স্যর!’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy