শ্মশানে হচ্ছে দেহ সৎকার। ফাইল ছবি।
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর শেষ কয়েক সপ্তাহে বিভিন্ন রাজ্যে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা হু হু করে বেড়েছে। এই মৃত্যু বৃদ্ধির জেরে শ্মশান, কবরস্থানে দেহ সৎকারের জন্য পড়ছে দীর্ঘ লাইন। মধ্যপ্রদেশের ভোপালের শ্মশানের কী অবস্থা হয়েছে তার ভিডিয়ো বুধবার বারবার ভেসে উঠেছে নেটমাধ্যমে। একই অবস্থা দিল্লিতেও। সেখানেও দৈনিক মৃত্যু বাড়ার ফলে শ্মশান, কবরস্থানে লাইন পড়ছে বিশাল। শুধু তাই নয়, এই পরিমাণ মৃত রোজ এলে সুষ্ঠভাবে সৎকার সম্পন্ন করা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে।
দিল্লির সবথেকে বড় শ্মশান নিগম্বোধ ঘাট। সৎকারের জন্য গত ক’দিন ধরে সেখানে দেখা যাচ্ছে দীর্ঘ লাইন। কোভিডে মৃত দাদুর দেহ সৎকার করতে নিগম্বোধ ঘাটে এসেছিলেন ২৭ বছরের গৌতম। তাঁর দাদু মারা গিয়েছেন মঙ্গলবার রাতে। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ দাদুর দেহ সৎকার করার জন্য নিয়ে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু ৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও সৎকারের সুযোগ হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। গৌতম এক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘সকাল সাড়ে ৮টায় এখানে এসেছি। ছ’ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও আমাদের সুযোগ আসেনি। পরিস্থিতি খুব খারাপ। কিছু ক্ষণ অন্তরই দেখছি অ্যাম্বুল্যান্সে ২-৩টে করে দেহ আসছে।’’
একই পরিস্থিতি কবরস্থানেও। কোভিড রোগীর দেহ এই পরিমাণে এলে আর কিছ দিন পরই কবর দেওয়ার জায়গা শেষ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দিল্লির এক কবরস্থানের রক্ষণাবেক্ষক। মহম্মদ শামিম নামের ওই ব্যক্তি বলেছেন, ‘‘আগে দিনে ১-২টো করে দেহ আসত। এখন দিনে ১৭-১৮টা করে দেহ আসছে। শেষ ৫ দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এখানে আর ৯০ জনকে কবর দেওয়ার মতো জায়গা পড়ে রয়েছে।’’
শুধু দেহ সৎকার নয়। মর্গেও দেহ রাখার জায়গা হচ্ছে না বিভিন্ন রাজ্যের হাসপাতালে। ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরের একটি সরকারি হাসপাতালের ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছিল নেটমাধ্যমে। সেখানে দেখা গিয়েছিল, কী ভাবে প্রকাশ্যে মাটিতে ফেলে রাখা হয়েছে দেহ। সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে হাসপাতালে শয্যা পেতে কালঘাম ছুটছে আক্রান্তদের। যেমন দিল্লির জয়প্রকাশ নারায়ণ। দিল্লির এই ব্যক্তি জানিয়েছেন, তাঁর শ্যালক সম্প্রতি আক্রান্ত হয়েছেন কোভিডে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে প্রবল হয়রানির শিকার হতে হয়েছে বলে দাবি তাঁর। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভেন্টিলেটরের সুবিধাযুক্ত আইসিইউ শয্যার ৮৫ শতাংশ ভর্তি হয়েছে গিয়েছে দিল্লিতে। বিভিন্ন রাজ্যের প্রশাসনও অস্থায়ী কোভিড পরিষেবা কেন্দ্র খুলে সক্রিয় রোগীদের চিকিৎসা বন্দোবস্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু যে ভাবে সংক্রমণ বাড়ছে তার জেরে এই চেষ্টা কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে চিন্তায় আধিকারিকরা।
বুধবার দিল্লিতে নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৪৬৮ জন। একদিনে আক্রান্তের নিরিখে যা এখনও অবধি রাজধানীতে সর্বোচ্চ। বুধবার সেখানে মৃত্যুও হয়েছে ৮০ জনের। বুধবারের পরিসংখ্যান অ্নুসারে দেশে কোভিডে একদিনে মৃত্য হয়েছে ১ হাজার ২৭ জনের। আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৮৪ হাজারেরও বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy