ছবি: পিটিআই।
পর পর তিন বার! আগের দু’বারের মতো এ বারও সীতারাম ইয়েচুরির রাজ্যসভায় প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব খারিজ করে দিল সিপিএমের পলিটব্যুরো। দলের সাধারণ সম্পাদককে কোনও ভাবেই আর সংসদীয় দায়িত্বে ফেরানো যাবে না, এই যুক্তিতেই আপত্তি তুলেছেন প্রকাশ কারাটেরা। ইয়েচুরির নামের সুপারিশ খারিজ করার পরে বাংলা থেকে রাজ্যসভায় বামেদের অন্য কেউ প্রার্থী হবেন, নাকি কংগ্রেসের প্রার্থীকে সমর্থন করা হবে, তা ঠিক করার ভার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের উপরেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যসভা নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে, কিন্তু বিরোধী শিবিরের প্রার্থীর নাম ঠিক হয়নি— এই অচলাবস্থা কাটাতে সক্রিয় হয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীও। তাঁকে শুক্রবার সন্ধ্যায় চিঠি দিয়ে এই পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তার পরেই সনিয়ার নির্দেশে বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা গৌরব গগৈ কথা বলেছেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র এবং মান্নানের সঙ্গে। রাজ্যসভার পঞ্চম আসনে বাম-কংগ্রেস জোট বেঁধেই প্রার্থী দিক, এ বিষয়ে একমত সোমেন-অধীর। তাঁরা কেউই চান না অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির মতো তৃণমূলের বাড়তি ভোট নিয়ে কংগ্রেসের কাউকে জেতাতে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এআইসিসি-ই নেবে।
এই অবস্থায় জটিলতা কাটাতে বিরোধী শিবিরের সম্মিলিত প্রার্থী হিসাবে এক জন আইনজীবী এবং এক জন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতির নাম নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। এই দু’জনের যে কেউ প্রার্থী হলে কংগ্রেস এবং বামেদের তরফে কারওরই কোনও আপত্তি নেই। সিপিএমের পলিটব্যুরো এবং এআইসিসি চায়, বাংলার বাম ও কংগ্রেস নেতারা নিজেদের মধ্যে আগে কথা বলে কোনও নাম সুপারিশ করে দিল্লির কাছে পাঠান। সিপিএমের পলিটব্যুরোর এক সদস্যের কথায়, ‘‘বাংলা থেকে সংসদের দুই কক্ষেই এই মুহূর্তে বামেদের কোনও প্রতিনিধি নেই। রাজ্যসভায় সুযোগ আছে কোনও বাম কণ্ঠস্বরকে তুলে ধরার। সীতারামই তার জন্য উপযুক্ত প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু দলের ব্যাকরণ মেনে তিনি যখন প্রার্থী হচ্ছেন না, তখন বিকল্প নামই ভাবতে হবে।’’
আরও পড়ুন: বিস্ফোরণ হয়নি মোদী জমানায়: জাভড়েকর
দিল্লিতে শনিবার সকালে সিপিএমের উপস্থিত পলিটব্যুরো সদস্যদের বৈঠকে রাজ্যসভার প্রার্থী বাছাইয়ের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। হান্নান মোল্লা ছাড়া বাংলার কোনও নেতা সেখানে ছিলেন না। দেখা যায়, সাধারণ সম্পাদককে প্রার্থী করা যাবে না, এই মতের পক্ষেই পাল্লা ভারী। অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টিতে জ্যোতি বসু যে একই সঙ্গে রাজ্য সম্পাদক এবং বিরোধী দলনেতা ছিলেন, সাম্প্রতিক অতীতে সূর্যকান্ত মিশ্রও একই ভূমিকা পালন করেছেন, এই সব যুক্তি কারাট-শিবির গ্রাহ্য করেনি। তবে একই সঙ্গে ইয়েচুরি-শিবির বাংলার নেতাদের ‘গা ছাড়া মনোভাবে’ ক্ষুব্ধ। কেন তাঁরা শুধু নাম প্রস্তাব করে কলকাতায় বসে থাকলেন, তার কোনও সদুত্তর নেই!
কংগ্রেস সূত্রের খবর, সনিয়াকে পাঠানো চিঠিতে মান্নান সওয়াল করেছেন, জয়ের অঙ্ক নিশ্চিত করেই যেন বিরোধীদের প্রার্থী দেওয়া হয়। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, কয়েক বছর আগে সৈয়দ আহমেদ মালিহাবাদীকে নির্দল প্রার্থী করে কংগ্রেস সমর্থন দেওয়া সত্ত্বেও তিনি হেরে গিয়েছিলেন। এ বার মান্নানের প্রস্তাব— রাজ্যসভায় একটি আসনে জেতার জন্য প্রথম পছন্দ অবশ্যই বামেদের সঙ্গে জোট। অন্যথায় তৃণমূলের সমর্থন নেওয়া হবে কি না, সেটাও এআইসিসি-ই ঠিক করুক। কয়েক মাস আগে খড়্গপুরের উপ নির্বাচনেও তৃণমূলকে আসন ছেড়ে দিতে তিনি এআইসিসি-কে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। এ বারে অবশ্য এআইসিসি যাতে তৃণমূলের হাত ধরতে উদ্যোগী না হয়, তার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন অধীরবাবু এবং সোমেনবাবু। এ ব্যাপারে অধীরবাবু তাঁর স্পষ্ট মতামত গৌরবকে জানিয়ে দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy