৭৫ কি কোনও ভাবে ‘তারুণ্যে’র প্রতীক?
চিনের কমিউনিস্ট পার্টি আগেই করে দেখিয়েছে। এ বার দলের সর্বোচ্চ স্তরে নেতাদের বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিতে চাইছে সিপিএম। সাংগঠনিক পুনর্বিন্যাসের জন্য তৈরি খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, এ বার থেকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি ও পলিটব্যুরোর সদস্যদের বয়স ৭৫-এর বেশি হলে চলবে না। বয়সের এই নীতি ঠিকমতো কার্যকর হলে বাংলার বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, দক্ষিণেরই নেতা এস রামচন্দ্রন পিল্লাইদের সরে দাঁড়াতে হবে সিপিএমের সর্বোচ্চ কমিটি থেকে।
অবসরের নীতি ঘিরে সিপিএমে বিতর্ক বহু দিনের। এর আগে বাংলার প্রাক্তন দুই মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু বা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য যেমন বয়স ও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পলিটব্যুরো, কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়েছেন, তেমনই আবার কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং দলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ইএমএস নাম্বুদিরিপাদ আজীবন সর্বোচ্চ কমিটিতে থেকেছেন। কিন্তু এ বার আর নেতাদের ‘সদিচ্ছা’র উপরে না ছেড়ে রেখে বয়সের সীমা বেঁধে ফেলতে চাইছেন সীতারাম ইয়েচুরিরা। তাঁদের যুক্তি, দেশের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই বয়সে তরুণ। তাদের ভাবনা-চিন্তার সঙ্গে শুধু তাল রাখাই নয়, টিকে থাকতে গেলে সিপিএমকে কমিটি বিন্যাসেও দেখাতে হবে যে, তারা তারুণ্যের দিকে এগোতে চায়।
কিন্তু ৭৫ কি কোনও ভাবে ‘তারুণ্যে’র প্রতীক? চিনের কমিউনিস্ট পার্টি ঊর্ধ্বসীমা ৬৫ করেছে। সিপিএম শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, যান্ত্রিক ভাবে বয়ঃসীমা চাপিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। তা ছাড়া, সংগঠনের নানা ধাপ পেরিয়ে কমিউনিস্ট পার্টিতে সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটিতে পৌঁছতে বেশির ভাগ নেতারই যথেষ্ট সময় লাগে। বয়সের নির্দিষ্ট সীমা ঠিক করে দিলে বাধ্যতামূলক ভাবে উপর তলায় কিছু জায়গা ফাঁকা হবে এবং সেখানে নতুন অন্তর্ভুক্তির সুযোগ মিলবে। বস্তুত, সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরি নিজে ওই বয়সের সীমা ৭০ বছর করার পক্ষপাতী ছিলেন। কিন্তু দলের মধ্যে নানা মতের টানাপড়েনের জেরে পলিটব্যুরো শেষ পর্যন্ত বয়সের প্রস্তাবিত সীমা ৭৫ ধরেছে।
আরও পড়ুন: ছ’বছরের শিশুকে ধর্ষণ, ইউনিফর্মের বেল্ট দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন, এ বার রাজস্থানে
সিপিএম সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় কমিটিতে সাংগঠনিক পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব পাশ হওয়ার পরে নীতি হিসেবে তা পাকাপাকি ভাবে গ্রহণ করা হবে ২০২১ সালে আগামী পার্টি কংগ্রেসে। বিমানবাবু বা এস আর পিল্লাইয়েরা এখনই ৭৫-এর ঊর্ধ্বে, পার্টি কংগ্রেসের সময় ধরলে বিজয়নও সেই তালিকায় পড়বেন। পলিটব্যুরোর এক সদস্যের কথায়, ‘‘এখন কেন্দ্রীয় কমিটিতে কোনও বয়সের সীমা নির্দিষ্ট নেই। সাধারণ ভাবে আশির ঊর্ধ্বে কাউকে না রাখার চেষ্টা হয়। এখন বয়সের দিকটা একটা কাঠামোয় আনার পরিকল্পনা হচ্ছে।’’
বাংলায় এর আগে রাজ্য কমিটিতে নতুন অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স ৬০ এবং রাজ্যে উপর তলার কমিটিতে থাকার ক্ষেত্রে ৭২ বছরের গণ্ডি ঠিক করা হয়েছে। তার বেশি বয়সের নেতাদের কমিটিতে রাখতে গেলে সচরাচর ‘আমন্ত্রিত’ সদস্য করা হয়। সব দিক থেকে সচল থাকার কারণে বিমানবাবু অবশ্য এত দিন সেখানে ‘ব্যতিক্রম’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy