প্রতীকী ছবি।
উচ্চ কক্ষে রঙ্গরাজন। নিম্ন কক্ষে নটরাজন। এই দুই রাজনের ভরসায় থাকতে গিয়ে এখন পদে পদে ভাবনায় পড়তে হচ্ছে সিপিএমকে! বিশেষত, বঙ্গ ব্রিগেডকে।
বাংলা থেকে এখন রাজ্যসভা ও লোকসভা— সংসেদর দুই কক্ষেই বামেদের কোনও প্রতিনিধি নেই। লোকসভায় সিপিএমের সাংসদ সাকুল্যে তিন। তার মধ্যে তামিলনাড়ুর দু’জন, কেরল থেকে এক জন। তার মধ্যে কোয়ম্বত্তূরের সিপিএম সাংসদ পি আর নটরাজনই অভিজ্ঞতার নিরিখে লোকসভায় দলের সমন্বয়ের দায়িত্বে। আবার রাজ্যসভাতেও সিপিএমের মুখ বলতে তামিলনাড়ুর টি কে রঙ্গরাজন। বঙ্গ রাজনীতির নানা ওঠাপড়ার সঙ্গে এঁরা কেউই নিয়মিত সড়গড় নন। জাতীয় স্তরে কোন উদ্যোগে সামিল হওয়া উচিত, কোনটায় নয়, তাঁদের হাতে এই বিবেচনার ভার থাকায় উদ্বেগে থাকতে হচ্ছে সিপিএমকে।
নরেন্দ্র মোদী জমানার প্রথম পাঁচ বছরেও সংসদে বামেদের অস্তিত্ব ছিল ক্ষীণ। কিন্তু লোকসভায় তখন বাংলা থেকে মহম্মদ সেলিম ছিলেন। মোদী সরকারের প্রথম তিন বছর রাজ্যসভায় ছিলেন স্বয়ং সীতারাম ইয়েচুরি। বাংলার রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে তাঁদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল। এখন রঙ্গরাজন, নটরাজনদের হাতে পড়ে বাংলায় তাঁদের বাধ্যবাধকতা যাতে একেবারে উপেক্ষিত না হয়, দলের সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরিকেই তা নজরে রাখতে অনুরোধ করেছেন আলিমুদ্দিনের নেতারা।
বাংলার নেতাদের বক্তব্য, বিজেপি-বিরোধিতার নামে যে কোনও বিষয়েই সিপিএম সংসদে তৃণমূলের সঙ্গে সামিল হয়ে গেলে এ রাজ্যে তাতে ভুল বার্তা যায়। তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বিগত লোকসভা থাকার সময়ে সংসদ ভবন চত্বরে দুর্নীতি-বিরোধী ধর্নায় তৃণমূলের সঙ্গেই যেতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন সিপিএমের তৎকালীন সাংসদ, কেরলের পি করুণাকরন। খবর পেয়ে প্রায় মধ্যরাতে সক্রিয় হয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দলকে সে যাত্রায় নিরস্ত করেছিলেন। ইয়েচুরি বাংলার নেতাদের বলেছেন, দলের কাজে নানা জায়গায় ব্যস্ত থাকতে হয় বলে সংসদের খুঁটিনাটি খবর প্রতিনিয়ত তিনি রাখতে পারেন না। তবে বিড়ম্বনা এড়াতে এর পর থেকে তিনি নজর রাখার চেষ্টা করবেন।
তামিলনাড়ু, কেরলের সিপিএম এবং সিপিআই সাংসদেরা মিলে এর মধ্যে বারদুয়েক সংসদ ভবন চত্বরে ধর্না-বিক্ষোভের কর্মসূচি নিয়েছেন। বাংলার নেতাদের আরও অনুরোধ, এ রাজ্যের উল্লেখযোগ্য কোনও ঘটনা থাকলেও জাতীয় স্তরে তা যেন তুলে ধরা হয়। এখন এমনিতেই বাংলা থেকে বিজেপির জোর সংসদে বেড়েছে। উল্টো দিকে তৃণমূল বা কংগ্রেস সাংসদেরা বাংলার বিষয়ে সরব হলেও সিপিএমের তাতে লাভ নেই। তা ছাড়া, কংগ্রেসের আবার জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে কিছু বাধ্যবাধকতাও আছে।
সিপিএমের এক পলিটব্যুরো সদস্যের কথায়, ‘‘রাজ্যসভায় ইএসআই কমিটির ভোটাভুটি ঘিরে যা হয়েছে, তার প্রাথমিক বিষয়টা সাধারণ সম্পাদক জানতেন। কিন্তু কৌশল তৈরির আগে সংসদীয় দল যাতে দলের সঙ্গে যোগাযোগ করে নেয়, সেটা দেখতে হবে। প্রয়োজনে একটা সমন্বয় কমিটি করে দিতে হবে।’’ সাংসদ নটরাজনের অবশ্য বক্তব্য, দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি এবং জাতীয় স্বার্থ মাথায় রেখেই তাঁরা কাজ করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy