ফাইল চিত্র।
কী ভাবে দলের সদস্যদের গুণগত মান বাড়ানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতে। এরই মধ্যে সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির মোবাইলে মেসেজ ঢুকল— ‘অভিনন্দন। আপনি আপ আদমি পার্টির সদস্য হলেন। আপনার সদস্যপদ সংখ্যা…’’।
কিছু দিন আগে একই ভাবে বিজেপি-রও ‘সদস্য’ হয়েছেন ইয়েচুরি! বিজেপি-ও তাঁকে মেসেজ পাঠিয়ে সদস্যপদ গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছে!
বৈঠক শেষে ইয়েচুরি বলেন, ‘‘আমাদের দলে এ ভাবে যাকে-তাকে সদস্য করা হয় না। বেশ কয়েক ধাপ পেরিয়ে তবে সদস্য হওয়া যায়।’’ কিন্তু সে তো খাতায়-কলমে। সংগঠনকে চাঙ্গা করতে বেনোজল রোখার পাশাপাশি নেতৃত্বে তাজা রক্ত আমদানি করার কথা ফের বলছে সিপিএম। তার জন্য ইয়েচুরি ‘বাংলা মডেল’ অনুসরণ করতে চান।
চার বছর আগে সিপিএমের কলকাতা প্লেনামের সিদ্ধান্ত মেনে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সিদ্ধান্ত নেয়, রাজ্য কমিটিতে নতুন করে কোনও ষাটোর্ধ্ব নেতাকে নেওয়া হবে না। ৭৫ পেরিয়ে গেলে রাজ্য কমিটি থেকে সরতে হবে বলেও ঘরোয়া ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে। পলিটবুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে অন্য সব রাজ্য কমিটিতেও একই নীতি রূপায়ণ করা প্রয়োজন বলে কেন্দ্রীয় কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। পলিটবুরোর এক নেতা বলেন, ‘‘অভিজ্ঞতারও মূল্য রয়েছে। সেই কারণে বাংলায় বিমান বসুর মতো নেতাদের বয়স ৭৫ পেরিয়ে গেলেও রাজ্য কমিটিতে রাখতে হয়েছে।’’
২০১৯-এর লোকসভা ভোটে মাত্র তিনটি আসনে জিতেছে সিপিএম। একটি কেরলে। বাকি দু’টি তামিলনাড়ুতে, ডিএমকে-র বদান্যতায়। ইয়েচুরি আজ মেনে নেন, দলের নিজস্ব সাংগঠনিক শক্তি এবং সরকারি নীতিকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা কমে যাওয়া সিপিএমের খারাপ ফলের অন্যতম কারণ। কিন্তু সংগঠনের এই অবক্ষয় ২০০৯ থেকে, অর্থাৎ প্রকাশ কারাটের জমানায় শুরু বলেও বোঝান ইয়েচুরি।
হাল শোধরাতে ইয়েচুরির দাওয়াই, ২০১৫-র প্লেনামের সিদ্ধান্ত রূপায়ণে যে সব ফাঁক থেকে গিয়েছে, তা পূরণ করতে হবে। সদস্যদের গুণগত মান বাড়ানো-সহ একগুচ্ছ পদক্ষেপ করার পাশাপাশি দিল্লিতে নতুন তৈরি পার্টি স্কুলে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠ্যক্রম তৈরি হবে। সেই সঙ্গে নেতৃত্বে তাজা রক্ত আনতে হবে।
বিজেপিতে ৭৫ পেরনো নেতাদের ঠান্ডা ঘরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা। সিপিএম নেতাদের মতে, তাঁদের পক্ষে বাংলা-কেরল-ত্রিপুরা বাদে অন্যত্র এই নীতি রূপায়ণ করা মুশকিল। ইয়েচুরির মতে, তিনি নিজে চল্লিশে পৌঁছনোর আগেই কেন্দ্রীয় কমিটি হয়ে পলিটবুরোয় ঢুকেছিলেন। এখন ফের প্রবীণদের সরিয়ে নতুনদের তুলে আনা দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy