গীতা মুখোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
সাতাশ বছর আগে সংসদে প্রথম লোকসভা-বিধানসভায় এক-তৃতীয়াংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের পক্ষে বিল পেশ হয়েছিল। না, কোনও সরকার নয়। সাংসদ হিসেবে ব্যক্তিগত স্তরে সেই বিল পেশ করেছিলেন পাঁশকুড়ার সাত বারের সাংসদ, সিপিআই নেত্রী গীতা মুখোপাধ্যায়।
সাতাশ বছর পরে লোকসভায় যখন সেই মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হল, তখন বার বার সেই গীতা মুখোপাধ্যায়ের নামই সকলের মুখে ঘুরে ফিরে এল। মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে লোকসভায় বিতর্কে বিজেপির প্রথম বক্তা নিশিকান্ত দুবে বাংলার গীতা মুখোপাধ্যায়ের নাম স্মরণ করলেন। শুধু তা-ই নয়। সনিয়া গান্ধী কেন গীতা মুখোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করলেন না, তা নিয়ে প্রশ্নও তুললেন।
১৯৯৬ সালেই এইচ ডি দেবগৌড়ার সরকার সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল পেশ করে। সেই বিল পাঠানো হয় সংসদীয় যৌথ কমিটির কাছে। কমিটির চেয়ারপার্সন নিযুক্ত হন গীতা মুখোপাধ্যায়। শোনা যায়, মহিলা সংরক্ষণের লড়াইয়ের ব্যস্ত থাকবেন বলে ইন্দ্রকুমার গুজরাল সরকারে মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাবও ফিরিয়ে দেন গীতা। আজ লোকসভায় বিতর্কের সময় তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারও গীতা মুখোপাধ্যায়ের নাম স্মরণ করে বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই যৌথ কমিটির সদস্য ছিলেন।
গীতা মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন যৌথ সংসদীয় কমিটি মূলত সাতটি সুপারিশ করেছিল। তার মধ্যে পাঁচটিই ইউপিএ সরকার ২০০৮-এর মহিলা সংরক্ষণ বিলে গ্রহণ করেছিল। ১৫ বছরের জন্য মহিলাদের সংরক্ষণ, দিল্লির বিধানসভাতেও সংরক্ষণ, এক-তৃতীয়াংশের কাছাকাছি না করে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ সংরক্ষণ, সবই ইউপিএ বিলে ছিল। মনমোহন সরকার শুধু ওবিসি মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের সুপারিশটি বিলে রাখেনি। কালের নিয়মে এখন কংগ্রেস নিজেই সেই দাবি তুলছে।
সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার মতে, “গীতা মুখোপাধ্যায় মহিলা সংরক্ষণের জন্য সংসদের ভিতরে-বাইরে জনমত গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। এই লড়াইয়ের সঙ্গে তাঁর নাম অঙ্গাঙ্গী ভাবে জুড়ে গিয়েছে।” আজ বিজেপি, তৃণমূল সাংসদদের পাশাপাশি এনসিপি নেত্রী সুপ্রিয়া সুলেও গীতা মুখোপাধ্যায়ের কথা স্মরণ করেছেন। তিনি লোকসভায় বলেছেন, গীতা মুখোপাধ্যায় থেকে মার্গারেট আলভা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে উমা ভারতী, সুষমা স্বরাজ থেকে বৃন্দা কারাটেরা মহিলা সংরক্ষণ বিলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন।
সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হওয়ার পরে সিপিএমের সংগঠন গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি বিবৃতি জারি করে। তাতে অবশ্য গীতা মুখোপাধ্যায়ের উল্লেখ ছিল না। সিপিআইয়ের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পল্লব সেনগুপ্ত বলেন, “দুঃখের কথা হল, অন্য দলের সাংসদরা স্মরণ করলেও অনেক বামপন্থী সংগঠনই গীতা মুখোপাধ্যায়ের কথা ভুলে গিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy