গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
গরু আর ‘হাম্বা’ বলে ডাকবে না। হুঙ্কার দিতে সিংহ বা বাঘ আর গর্জন করবে না। বা ধরুন যে বাঁদরের দল আপনাকে জ্বালাতন করে, এ বার লাঠি হাতে তাদের তাড়াতে গেলে সতর্ক করতে দাঁত খিচিয়ে আর ভয় দেখাবে না আপনাকে। উল্টে শুদ্ধ সংস্কৃতে গড়গড় করে বলে দিতে পারে, ‘নিষেধঃ, একঃ পাদঃ আগতঃ তু ন ফ’...। যার বাংলা তর্জমা দাঁড়ায়, ‘সাবধান, আর এক পা এগোলে কিন্ত ফল ভাল হবে না’! বা এমনও হতে পারে, আপনার প্রিয় পশুটা হয়তো আপনার সঙ্গে খোশ মেজাজে গল্পই জুড়ে দিল!
গরুতে-বাঘেতে-বাঁদরে মানুষের মতো কথা বলবে, এও আবার হয় নাকি! অবাক হচ্ছেন? আসলে এমন একটি যন্ত্র নাকি আবিষ্কার হয়েছে, যে যন্ত্রটিগরু-বাঘ-সিংহ-বাদরের মধ্যে আস্তে আস্তে মানুষের স্বরযন্ত্র তৈরি করে ফেলবে। আর তাতেই মানুষের মতো কথা বলতে পারবে ওরাও!এই দাবি অবশ্য কোনও বিজ্ঞানীর নয়, যিনি এই দাবি করেছেন তিনি একজন স্বঘোষিত গডম্যান। বাবা নিত্যানন্দ।তামিলনাড়ুর মাদুরাই আধীনাম মঠের সন্ন্যাসী।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় বাবা নিত্যানন্দের একটি ভিডিয়ো নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে। ওই ভিডিয়োতেই নিত্যানন্দকে এমন দাবি করতে শোনা গিয়েছে। ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, কপালে তিলক কাটা, গায়ে গেরুয়া কাপড় পরে রাজকীয় একটি সিংহাসনে বসে রয়েছেন তিনি। সামনে তাঁর শিষ্যকূল। ইংরাজিতে শিষ্যদের উদ্দেশে তিনি যা বললেন, তার বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘আমি প্রমাণ করে দেব... বাঁদর এবং অন্য কিছু প্রাণীরা যাদের আমাদের মতো অনেক অঙ্গই নেই, একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে সে সব অঙ্গ তাদের মধ্যে তৈরি করা সম্ভব। গতকালই আমি এই সফটওয়্যার পরীক্ষা করে দেখেছি। খুব ভাল কাজ করছে। বুঝেছেন, লিখে রাখুন, আগামী এক বছরের মধ্যে আমি এটা প্রমাণও করে দেব।’
দেখুন ভিডিয়ো:
কিন্তু কী প্রমাণ করার কথা বলছেন বাবা নিত্যানন্দ? তাঁর আবিষ্কৃত সফটওয়্যার দিয়ে প্রাণীকূলের মধ্যে ঠিক কী পরিবর্তন করতে চাইছেন তিনি? ওই ভিডিয়োয় তিনি নিজেই তা খোলসা করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘বাঁদর, বাঘ, সিংহের মধ্যে ভাষাগত জ্ঞান সম্বৃদ্ধ ভোকাল কর্ড তৈরি করব। এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে গরু এবং ষাঁড়ের উপরেও। এরা পরিষ্কার সংস্কৃত বা তামিল ভাষাতে আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে পারবে।’’
আরও পড়ুন: সুইচ দিতেই ভুলে গেলেন বিমানকর্মী! যাত্রীদের নাক-কান দিয়ে রক্ত, জরুরি অবতরণে রক্ষা
শুধু এমন এক অত্যাশ্চর্যকর আবিষ্কারের কথা সামনে এনেই নয়, বাবা নিত্যানন্দ আগে থেকেই বিতর্কিত। ধর্ষণের অভিযোগে ২০১০ সালে তিনি গ্রেফতার হন। এমনকি, যে মঠের দায়িত্বপ্রাপ্ত তিনি, তাঁর দাবি, সেখানকার প্রধান হিসাবে তাঁর প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে কোর্টের। ২০১২ সালে ওই মঠের অস্থায়ী দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। কিন্তু পরে তিনি তা মানতে চাননি। এই নিয়ে মঠের একাংশ সদস্য কোর্টে মামলা করেন। সেই মামলা এখনও চলছে। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি কেবলমাত্র সাধারণ মানুষ হিসেবেই ওই মঠে থাকতে পারবেন, এমনই নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy