প্রতীকী ছবি।
করোনা রোগীকে নয়, রোগকে দূরে সরিয়ে রাখার বার্তা দিনরাত দিচ্ছে সরকার। বাস্তবে কিন্তু রোগী ও তাঁর পরিজনদের হেনস্থা কমছে না। এমনকি সংক্রমিত না হয়েও, স্রেফ করোনা-আতঙ্কের জেরে হয়রানির ঘটনা রোজই বাড়ছে দেশে।
কোথাও রোদে-তাপে অসুস্থ হয়ে পড়া তরুণীকে করোনা রোগী সন্দেহে বাস থেকে গলাধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রাস্তায় মৃত্যু হয়েছে সেই তরুণীর। কোথাও অ্যাম্বুল্যান্সের অপেক্ষায় থেকে মৃত্যু হয়েছে প্রৌঢ়ের। লোক না-মেলায় রাস্তায় দেহ ফেলে রাখতে বাধ্য হয়েছেন পরিজনেরা। কোথাও আবার শয্যা, অক্সিজেনের অভাবে রোগীকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা যায়নি। গোটা দিন অ্যাম্বুল্যান্সে রেখে পরের দিন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করতে বাধ্য হয়েছে বাড়ির লোক।
সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে ৫৫ বছরের এক প্রৌঢ়ের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। বেশ কয়েক দিন ধরে ভুগছিলেন। শুক্রবার তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটে। বেগতিক দেখে হাসপাতালে ফোন করে অ্যাম্বুল্যান্স ডাকেন তাঁর স্ত্রী। কিন্তু বেশ কিছু সময় গড়িয়ে যাওয়ার পরেও অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছয়নি। শেষে অটোয় করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হয়। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু ঘটে। ঘণ্টা দু’য়েক বাদে পৌঁছয় অ্যাম্বুল্যান্স। রাস্তায় করোনা রোগীর দেহ রেখে অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য আত্মীয়দের অপেক্ষার সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। শনিবার বেঙ্গালুরুর কমিশনার বি এইচ অনিল কুমার ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করে নিঃশর্ত ক্ষমা চান।
আরও পড়ুন: সেরে ওঠার ২৮ দিনের আগে প্লাজ়মা দেওয়া নয়
নবি মুম্বইয়ে এক করোনা-রোগীর মৃত্যুতে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল দশাকেই দায়ী করছে তাঁর পরিবার। তাঁদের দাবি, বৃদ্ধের শ্বাসকষ্ট ছিল। কিন্তু শয্যার অভাবে নবি মুম্বইয়ের মিউনিসিপ্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা যায়নি। ৬৪ বছরের বৃদ্ধকে গোটা রাত অ্যাম্বুল্যান্সেই রাখতে হয়। পরের দিন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ডাক্তাররা রোগীকে ৩২ হাজার টাকার ইঞ্জেকশন দিতে বলেন। তা কেনার সামর্থ্য ছিল না পরিবারের। দিন সাতেক আগে মারা যান বৃদ্ধ। অভিযোগ, মৃত্যুর পরেও হেনস্থা কমেনি পরিবারের। শবযান মিললেও কর্মী মেলেনি। পিপিই পরে পরিবারের লোকই দেহ নিয়ে যান।
শয্যা না মেলায় হেনস্থার ঘটনা ঘটেছে কর্নাটকেও। একের পর এক সরকারি হাসপাতালে ফোন করেও শয্যা বা অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে পারেনি এক করোনা রোগীর পরিবার। গুরুতর অসুস্থ ওই রোগীকে পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টার পরে হাসপাতালে ভর্তি করা যায়। আবার করোনা-পরীক্ষার ফল দু’বার নেগেটিভ এলেও করোনার সমস্ত উপসর্গ ছিল দিল্লির তরুণ চিকিৎসক অভিষেক ভায়ানার। দিন দশেক ধরে চরম শ্বাসকষ্টেও ভুগছিলেন তিনি। শনিবার মারা গিয়েছেন ২৭ বছরের অভিষেক।
মথুরায় করোনা সন্দেহে এক তরুণীকে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। গত মাসের ঘটনা। ১৯ বছরের ওই তরুণীর নাম অংশিকা। বাসে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। করোনা সন্দেহে জোর করে মাঝপথে নামিয়ে দেয় বাসচালক। সেখানেই মৃত্যু হয় মেয়েটির। ময়নাতদন্তে মৃত্যুর কারণ হৃদ্রোগ বলে জানায় চিকিৎসকেরা। পরিবারের দাবি, হেনস্থা সহ্য করতে না-পেরেই মৃত্যু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy