ফাইল চিত্র।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার প্রভাব শুধুমাত্র ফুসফুসের উপর পড়ে না, তার প্রভাবে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে বলেও দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। রক্ত জমাট বাঁধলে তা দ্রুত শরীর থেকে বের না করতে পারলে তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে বলেও দাবি করা হয়েছে চিকিৎসকদের তরফে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কোভিড আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ১৪ থেকে ২৮ শতাংশের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধছে, যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস। এ ছাড়া ২ থেকে ৫ শতাংশের শরীরে আর্টারিয়াল থ্রম্বোসিস দেখা যাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। অর্থাৎ মানুষের শরীরের মধ্যে ধমনী ও শিরায় রক্ত জমাট বাঁধছে।
এই প্রসঙ্গে দিল্লির স্যার গঙ্গারাম হাসপাতালের ভাসকুলার অ্যান্ড এন্ডোভাসকুলার সার্জেন অম্বরীশ সাত্ত্বিক জানিয়েছেন, প্রতি সপ্তাহে গড়ে এই ধরনের ৫-৬ জন রোগী তাঁরা দেখছেন, যাঁদের শরীরে রক্ত জমাট বেঁধেছে। ডায়াবেটিস ও অন্যান্য কো-মর্বিডিটি যাঁদের রয়েছে, তাঁদের শরীরে এই ধরনের সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অম্বরীশ বলেছেন, ‘‘ধমনী ও শিরায় রক্ত জমাট বাঁধলে মানুষের হৃদরোগের আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া শরীরে একাধিক অঙ্গ অসাড়ও হয়ে যেতে পারে। তাই রক্ত জমাট বাঁধলে আমরা চেষ্টা করছি সঙ্গে সঙ্গে সেটা শরীর থেকে বের করে দেওয়ার। গত সপ্তাহেই এক রোগীকে এ ভাবে আমরা বাঁচিয়েছি।’’
এই প্রসঙ্গে হৃদরোগের চিকিৎসক রবিন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ভাইরাস ঘটিত রোগ হলেও এটি শরীরের রক্ত চলাচলে প্রভাবে ফেলে। ধমনী ও শিরায় থ্রম্বোসিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এবং এই আশঙ্কা কোভিড সেরে যাওয়া পরও থেকে যায়। প্রায় ৩ থেকে ৬ মাস সময় লাগে এটা কমতে। তাই কোভিড রোগীদের অন্যান্য ওযুধের পাশাপাশি সামান্য পরিমাণে অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট দেওয়াও আবশ্যিক।’’ তিনি এ-ও জানান, কোভি়ডে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ মৃত্যু ঘটছে পালমোনারি এম্বোলাইজেশনের জন্যই।
গত বছর নভেম্বর মাসে ল্যানসেট পত্রিকায় প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছিল, কোভিড আক্রান্ত হলে ধমনী ও শিরায় রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। এই ধরনের সমস্যা হলে মৃত্যুর আশঙ্কাও অনেক বেড়ে যায় বলে দাবি করা হয়েছিল।
অম্বরীশ জানিয়েছেন, প্রথম দিকে যখন করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছিল তখন এই রক্ত জমাট বাঁধার বিষয় বোঝা যায়নি। কিন্তু পরবর্তীকালে করোনায় মৃতদের শরীরের ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে ফুসফুসের অবস্থা দেখে বিশেষজ্ঞদের মনে সন্দেহ তৈরি হয়। আরও গবেষণায় বোঝা যায় রক্ত জমাট বাঁধা মৃত্যুর এক অন্যতম কারণ। তবে রক্ত জমাট বাঁধলেও সবার ক্ষেত্রে তা সমান নয়। কোনও রোগীর ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বাঁধার পরিমাণ কম হয়। সে ক্ষেত্রে ওষুধে সেই সমস্যা দূর করা সম্ভব। কিন্তু রক্ত জমাট বাঁধার পরিমাণ বেশি হলে সে ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার করে তা বের করা ছাড়া উপায় থাকে না বলেই জানিয়েছেন অম্বরীশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy