গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬২ হাজার ৬৪ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।
গত তিন দিন ধরেই দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ হচ্ছে ৬০ হাজারেরও বেশি। আজও সেই ধারা অব্যাহত। নতুন করে চিন্তা বাড়াল সংক্রমণ হার। গত সপ্তাহ জুড়ে ৮-১০ শতাংশের ঘরে আটকে ছিল তা। আজ লাফিয়ে বেড়ে ১৩ শতাংশে পৌঁছে গেল সংক্রমণ হার। গত ২৪ ঘণ্টায়, দেশে করোনা পরীক্ষাও কম হয়েছে। সঙ্গে এক হাজারেরও বেশি জনের মৃত্যু হয়েছে। আশার খবর শুধুমাত্র সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যায়।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬২ হাজার ৬৪ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে, আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৭ হাজার ১১৬ ও ২৩ হাজার ১০ জন। এক দিনে আক্রান্ত বৃদ্ধির নিরিখে আজ আবার এক নম্বরে চলে গেল ভারত। এই বৃদ্ধির জেরে ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ২২ লক্ষ ১৫ হাজার ৭৪ জন। সেখানে বিশ্বে প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৫০ লক্ষ ৪৪ হাজার ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৩০ লক্ষ ৩৫ হাজার।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। দিন তিনেক ধরে দশ শতাংশের নীচেই রয়েছে এই হার। গত ২৪ ঘণ্টায় তা বেড়ে হয়েছে ১০.৮৮ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৪ লক্ষ ৭৭ হাজার ২৩ জনের। যা গত ছয় দিনের তুলনায় সবথেকে কম।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও শুরু থেকেই স্বস্তি দিয়ে আসছে। এখনও পর্যন্ত মোট ১৫ লক্ষ ৩৫ হাজার ৭৪৩ জন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের প্রায় ৬৯ শতাংশই সুস্থ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫৪ হাজার ৮৫৯ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
মৃত্যুর নিরিখে স্পেন, ফ্রান্স, ইটালিকে পিছনে ফেলে বিশ্বের পঞ্চম স্থানে রয়েছে ভারত। যদিও মৃত্যুর হার ওই সব দেশগুলির তুলনায় ভারতে অনেকটাই কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৭ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৪৪ হাজার ৩৮৬ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১৭ হাজার ৭৫৭ জন। দিল্লিকে পিছনে ফেলে মৃত্যু তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে তামিলনাড়ু। দক্ষিণের এই রাজ্যে মোট মৃত চার হাজার ৯২৭ জন। দেশের রাজধানীতে সেই সংখ্যাটা ৪ হাজার ১১১ জন।
জুলাই জুড়েই মৃত্যু বেড়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে কর্নাটক। সেখানে কোভিডের কারণে এখনও অবধি ৩ হাজার ১৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুজরাতে ২ হাজার ৬৫২ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনাভাইরাস। উত্তরপ্রদেশ (২,০৬৯), পশ্চিমবঙ্গ (২,০৫৯) ও অন্ধ্রপ্রদেশে (২,০৩৬) মৃতের সংখ্যা রোজদিন বেড়েই চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৯৯৬), রাজস্থান (৭৮৯), তেলঙ্গানা (৬৩৭), পঞ্জাব (৫৮৬), হরিয়ানা (৪৮৩), জম্মু ও কাশ্মীর (৪৭২), বিহার (৩৮৭), ওড়িশা (২৭২), ঝাড়খণ্ড (১৭৭) ও উত্তরাখণ্ড (১২৫)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
শুরু থেকেই মহারাষ্ট্র সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে। সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত ৫ লক্ষ ১৫ হাজার ৩৩২ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত ২ লক্ষ ৯৬ হাজার ৯০১ জন। সংক্রমণ তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১০ হাজার নতুন সংক্রমণের জেরে সেখানে এখন মোট আক্রান্ত ২ লক্ষ ২৭ হাজার ৮৬০ জন। সংক্রমণের নিরিখে চতুর্থ স্থানে থাকা কর্নাটকে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৭৮ হাজার ৮৭ জন। তবে জুলাই থেকেই রাজধানী দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধিতে বেশ খানিকটা লাগাম পড়েছে। রাজধানীতে এখনও অবধি মোট আক্রান্ত হয়েছেন এক লক্ষ ৪৫ হাজার ৪২৭ জন। উত্তরপ্রদেশেও মোট আক্রান্ত ১ লক্ষ ২২ হাজার ৬০৯ জন।
পশ্চিমবঙ্গ (৯৫,৫৫৪), তেলঙ্গানা (৮০,৭৫১), বিহার (৭৯,৪৫১), গুজরাত (৭০,৯৬৫), অসম (৫৮,৮৩৭), রাজস্থান (৫২,৪৯৭) ও ওড়িশাতে (৪৫,৯২৭) আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে হরিয়ানা (৪১,৬৩৫), মধ্যপ্রদেশ (৩৯,০২৫), কেরল (৩৪,৩৩১), জম্মু ও কাশ্মীর (২৪,৮৯৭), পঞ্জাব (২৩,৯০৩), ঝাড়খণ্ড (১৮,১৩৮) ও ছত্তীসগঢ় (১২,১৪৮)-এর মতো রাজ্য। উত্তরাখণ্ড, গোয়া, ত্রিপুরা, মণিপুর, হিমাচল প্রদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখনও দশ হাজারের কম।
পশ্চিমবঙ্গেও রোজদিন বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গড়ে তিন হাজার জন নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন রোজ। রবিবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, নতুন করে ২ হাজার ৯৩৯ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৯৫ হাজার ৫৫৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৪ জনের। করোনার কবলে পড়ে রাজ্যে এখনও অবধি মোট প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৫৯ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy