দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সাত লক্ষ ছাড়াল। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।
রাশিয়াকে পিছনে ফেলে কোভিড আক্রান্তের তালিকায় তৃতীয়স্থানে উঠে এসেছিল ভারত। মঙ্গলবার করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যাটা সাত লক্ষ ছাড়িয়ে গেল। দেশে লাফিয়ে লাফিয়েই বাড়ছে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২২ হাজার ২৫২ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল সাত লক্ষ ১৯ হাজার ৬৬৫ জন।
আক্রান্ত বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে বাড়ছে করোনার জেরে মৃত্যুও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪৬৭ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হল ২০ হাজার ১৬০ জনের। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে ন’হাজার ৬০ জনের। রাজধানী দিল্লিতে ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ১১৫-তে। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাতে মারা গিয়েছেন এক হাজার ৯৬০ জন। গত মাসের শেষ দিক থেকে তামিলনাড়ুতেও ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছে করোনার জেরে প্রাণহানি। যার জেরে দক্ষিণের এই রাজ্যে মোট মৃত এক হাজার ৫৭১ জন। উত্তরপ্রদেশ (৮০৯), পশ্চিমবঙ্গ (৭৭৯) ও মধ্যপ্রদেশে (৬১৭) মৃত্যুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে রাজস্থান (৪৬১), কর্নাটক (৪০১), তেলঙ্গানা (৩০৬), হরিয়ানা (২৭৬), অন্ধ্রপ্রদেশ (২৩৯), পঞ্জাব (১৬৯) ও জম্মু ও কাশ্মীর (১৩৮)।
আক্রান্ত দ্রুত হারে বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। এখন দেশে সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীর সংখ্যা সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যার চেয়ে বেশি। রবিবারই সুস্থ হওয়ার সংখ্যাটা চার লক্ষ ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ হাজার ৫১৫ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট চার লক্ষ ৩৯ হাজার ৯৪৮ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হলেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি রুখে দিয়েছিল কেরল। কিন্তু মহারাষ্ট্রে তা বল্গাহীন ভাবেই বেড়েছে। গোড়া থেকেই এই রাজ্য কার্যত সংক্রমণের শীর্ষে ছিল। তার পর সময় যত গড়িয়েছে, এই রাজ্য নিয়ে সারা দেশের শঙ্কা বেড়েছে। রবিবার সে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা দু’লক্ষ ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচ হাজার ৬৩৮ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। এ নিয়ে সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ১১ হাজার ৯৮৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি বেড়ে তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল এক লক্ষ ১৪ হাজার ৯৭৮ জন। দিল্লির আক্রান্তও মঙ্গলবার এক লক্ষ পেরলো। রাজধানীতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল এক লক্ষ ৮২৩ জন।
৩৬ হাজার ৭৭২ সংক্রমণ নিয়ে গুজরাত ও ২৮ হাজার ৬৩৬ আক্রান্ত নিয়ে উত্তরপ্রদেশ, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে। তেলঙ্গানা, কর্নাটক, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান ও অন্ধ্রপ্রদেশের মোট আক্রান্ত ২০ হাজারে গণ্ডি পার করে ছুটে চলেছে। তেলঙ্গানা (২৫,৭৩৩), কর্নাটক (২৫,৩১৭), পশ্চিমবঙ্গ (২২,৯৮৭), রাজস্থান (২০,৬৮৮) ও অন্ধ্রপ্রদেশে (২০,০১৯) জন আক্রান্ত হয়েছেন। হরিয়ানা (১৭,৫০৪), মধ্যপ্রদেশ (১৫,২৮৪), বিহার (১২,১২৫) ও অসমে (১২,১৬০) রোজ দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে ওড়িশা, জম্মু ও কাশ্মীর, পঞ্জাব, কেরল, ছত্তীসগঢ়, উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যগুলি।
লকডাউন উঠে যাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গেও নতুন করে অনেক বেশি সংক্রমণ হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৬১ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এ রাজ্যে। এই বৃদ্ধির জেরে মোট আক্রান্ত হলেন ২২ হাজার ৯৮৭ জন। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মোট ৭৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy