গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৭২ হাজার ৪৯ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
দেশের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা এক সময় বাড়তে বাড়তে ৯৫ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সাম্প্রতিক কালে তা ধীরে ধীরে কমছে এবং বর্তমানে তা ৭০ হাজারের গণ্ডিতে নেমে এসেছে। করোনার এই প্রবণতাতেই আশার আলো দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি দৈনিক মৃত্যু, যা ধারাবাহিক ভাবে এক হাজারের বেশি থাকছিল, তাও কমেছে। সঙ্গে সংক্রমণের হারও নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭২ হাজার ৪৯ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন সংক্রমণ যথাক্রমে ৪১ হাজার ৮৭১ ও ৪১ হাজার ৯০৬। ওই দুই দেশের তুলনায় ভারতে নতুন সংক্রমণ অনেক বেশি। গত দু’মাস ধরেই এই প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।
এখনও অবধি দেশে মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭ লক্ষ ৫৭ হাজার ১৩১ জন। বিশ্বের প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৭৪ লক্ষ ৯৯ হাজার ও তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে মোট আক্রান্ত ৪৯ লক্ষ ৬৯ হাজার।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
দেশে কোভিড আক্রান্তদের সুস্থ হওয়ার হার শুরু থেকেই আশাব্যাঞ্জক। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৫৭ লক্ষ ৪৪ হাজার ৬৯৩ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। যা গোটা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশের মোট আক্রান্তের ৮৫ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়েছেন ৮২ হাজার ২০৩ জন। নতুন আক্রান্তের থেকে সুস্থ বেশি হওয়ায় কমছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। এখন দেশে সক্রিয় রোগী রয়েছেন ন’লক্ষ ৭ হাজার ৮৮৩ জন।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। আজ তা ৬ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ১১ লক্ষ ৯৯ হাজার ৮৫৭ জনের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
শুরু থেকেই দেশে সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। এখনও অবধি ১৪ লক্ষ ৬৫ হাজার জন আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। কিন্তু গত মাসে মহারাষ্ট্র দৈনিক আক্রান্ত ২০ হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছিল। যদিও গত ক’দিনে তা ১২-১৩ হাজারে নেমে এসেছে। এই প্রবণতা অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুতেও। ওই দু’রাজ্যেই কমেছে দৈনিক সংক্রমণ। যদিও কর্নাটকে দৈনিক সংক্রমণ নয়-সাড়ে নয় হাজারের বেশি হচ্ছে। তবে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ দৈনিক সংক্রমণ গত মাসের তুলনায় কম। পশ্চিমবঙ্গেও সংখ্যাটা একই গণ্ডিতে রয়েছে। ওড়িশা, তেলঙ্গানা, বিহার, রাজস্থান, গুজারাতেও দৈনিক সংক্রমণ আর লাগামছাড়া ভাবে বাড়ছে না। তবে কেরলের সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তার ষথেষ্ট কারণ রয়েছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির তুলনায় ভারতে মৃত্যুর হার কম। কিন্তু বাড়তে বাড়তে ভারতে মোট মৃত্যু এক লক্ষ ছাড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৯৮৬ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট এক লক্ষ চার হাজার ৫৫৫ জনের প্রাণহানি ঘটিয়েছে করোনা। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ৩৮ হাজার ৭১৭ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট মৃত্যু ন’হাজার ৯১৭। তৃতীয় স্থানে থাকা কর্নাটকে মৃতের সংখ্যা ন’হাজার ৪৬১। অন্ধ্রপ্রদেশে করোনা প্রাণ কেড়েছে ছ’হাজার জনের। উত্তরপ্রদেশ (৬,১৫৩), দিল্লি (৫,৫৮১) ও পশ্চিমবঙ্গে (৫,৩১৮) মোট মৃত্যু বেড়ে চলেছে। গুজরাত (৩,৫১৯), পঞ্জাব (৩,৬৭৯) ও মধ্যপ্রদেশ (২,৪৮৮) মৃত্যু তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে। রাজস্থান, হরিয়ানা, তেলঙ্গানা ও জম্মু ও কাশ্মীরের মোট মৃত্যুও এক হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এর পর তালিকায় রয়েছে বিহার, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, অসম, কেরল, উত্তরাখণ্ড, পুদুচেরি, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলি।
পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই তিন হাজারের বেশি হচ্ছে। ইদানিং তা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে তিন হাজার ৩৭০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ৭৭ হাজার ৪৯ জন। যদিও এর মধ্যে দু’লক্ষ ৪৩ হাজার রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬৩ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ হাজার ৩১৮ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy