মৃত্যুর নিরিখে স্পেন ও ফ্রান্সকে আগেই পিছনে ফেলেছিল ভারত। আজ তা টপকে গেল ইটালিকেও। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
ভারতে দৈনিক নতুন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেশ কয়েক দিন ধরেই ৪৭-৪৮ হাজারের গণ্ডিতে ঘোরাফেরা করছিল। বৃহস্পতিবার তা বেড়ে হয়েছিল ৫২ হাজার। শুক্রবার ফের লাফিয়ে বেড়ে ৫৫ হাজারে পৌঁছে গেল। যার জেরে মোট আক্রান্ত ১৬ লক্ষ ছাড়াল। নতুন আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কায় রাখলেও আক্রান্তের সুস্থ হয়ে ওঠা বেশ স্বস্তি দিচ্ছে। পাশাপাশি গত দু’দিনের তুলনায় আজ বেশ খানিকটা কমেছে সংক্রমণের হার। তা নেমেছে দশ শতাংশের নীচে। আবার একদিনে দেশে করোনা পরীক্ষাও হয়েছে সর্বোচ্চ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৫ হাজার ৭৮ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। যার জেরে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১৬ লক্ষ ৩৮ হাজার ৮৭০ জন। অর্থাৎ গত দু’দিনে এক লক্ষেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন দেশে। গত ২৪ ঘণ্টায় যে হিসাব পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ভারতে নতুন আক্রান্ত ৫৫ হাজার, আমেরিকাতে ৬৭ হাজার ও ব্রাজিলে ৪৩ হাজার।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। এই সপ্তাহের শুরুতে তা দশ শতাংশের নীচে থাকলেও, গত দু’দিনে একটু হলেও বেড়েছিল।শুক্রবার তা আবার বেশ খানিকটা কমে গেল। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণের হার ৮.৫৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ছ’লক্ষ ৪২ হাজার ৫৮৮ জনের। যা এখনও অবধি সর্বোচ্চ। এক দিনে এত মানুষের টেস্ট করোনাকালে এই প্রথম বার হল।
আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। এখনও পর্যন্ত মোট ১০ লক্ষ ৫৭ হাজার ৮০৫ জন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের প্রায় ৬৪.৫৪ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩৭ হাজার ২২৩ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
মৃত্যুর নিরিখে স্পেন ও ফ্রান্সকে আগেই পিছনে ফেলেছিল ভারত। আজ তা টপকে গেল ইটালিকেও। যদিও মৃত্যুর হার ওই সব দেশগুলির তুলনায় ভারতে অনেকটাই কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৭৭৯ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৩৫ হাজার ৭৪৭ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস।এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১৪ হাজার ৭২৯ জন। মৃত্যুর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা দিল্লিতে প্রাণ গিয়েছে তিন হাজার ৯৩৬ জনের। তিন হাজার ৮৩৮ জনের মৃত্যু নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে তামিলনাড়ু।
গুজরাতে দু’হাজার ৪১৮ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনাভাইরাস। জুলাই জুড়েই কর্নাটকেও মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ল। দক্ষিণের এই রাজ্যে মোট মৃত দু’হাজার ২৩০ জন। উত্তরপ্রদেশ (১,৫৮৭), পশ্চিমবঙ্গ (১,৫৩৬) ও অন্ধ্রপ্রদেশে (১,২৮১) মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে রোজদিন বেড়েই চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৮৫৭), রাজস্থান (৬৬৩), তেলঙ্গানা (৫০৫), হরিয়ানা (৪১৭), পঞ্জাব (৩৭০), জম্মু ও কাশ্মীর (৩৬৫), বিহার (২৮২), ওড়িশা (১৬৯) ও ঝাড়খণ্ড (১০৩)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
শুরু থেকেই মহারাষ্ট্র সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে। বৃহস্পতিবার সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত চার লাখ ছাড়িয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত দু’লক্ষ ৩৯ হাজার ৯৭৮ জন। জুলাই জুড়েই রাজধানী দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধিতে বেশ খানিকটা লাগাম পড়েছে। সংক্রমণ তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকলেও স্বস্তি দিচ্ছে দেশের রাজধানী। সেখানে এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ৩৪ হাজার ৪০৩ জন।গত কয়েক দিনে দৈনিক সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে অন্ধ্রপ্রদেশও। কর্নাটকে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ছাড়িয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজারেরেও বেশি জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেনএক লক্ষ ৩০ হাজার ৫৫৭ জন। কর্নাটকে মোট আক্রান্ত হয়েছেনএক লক্ষ ১৮ হাজার ৬৩২ জন।
উত্তরপ্রদেশ (৮১,০৩৯), পশ্চিমবঙ্গ (৬৭,৬৯২), তেলঙ্গানা (৬০,৭১৭), গুজরাত (৬০,২৮৫)ও বিহারে (৪৮,৪৭৭) আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি দিন উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে রাজস্থান (৪০,১৪৫), অসম (৩৮,৪০৭), হরিয়ানা (৩৪,২৫৪), মধ্যপ্রদেশ (৩০,৯৬৮), ওড়িশা (৩০,৩৭৮), কেরল (২২,৩০৩), জম্মু ও কাশ্মীর (১৯,৮৬৯), পঞ্জাব (১৫,৪৫৬) ও ঝা়ড়খণ্ড (১০,১৬৭)। ছত্তীসগঢ়, উত্তরাখণ্
পশ্চিমবঙ্গেও রোজদিন বাড়ছে করোনা আক্রান্ত। নতুন সংক্রমণ ও মৃত্যু—গত ২৪ ঘণ্টায় দু’টোই হয়েছে রেকর্ড। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, নতুন করে দু’হাজার ৪৩৪ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৬৭ হাজার ৬৯২ জন।গত দু’দিনে রাজ্যেসংক্রমণের হারও একটু বেড়েছে। মৃত্যুর ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে রাজ্যে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের। এক দিনে মৃত্যুর নিরিখে এটাই এখনও অবধি সর্বোচ্চ। যার জেরে রাজ্যে করোনার কবলে পড়ে প্রাণ হারালেন মোট এক হাজার ৫৩৬ জন ।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy