করোনাভাইরাসের আতঙ্কের প্রেক্ষিতে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি। ভারত-নেপাল সীমান্তে। ছবি- এএফপি।
করোনাভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেও। সোমবার কলকাতার হাসপাতালে তাইল্যান্ডের এক মহিলার মৃত্যুর পর ওই মারাত্মক চিনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সন্দেহে তিন জনকে মঙ্গলবার ভর্তি করানো হয়েছে দিল্লির রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে। ২৪ থেকে ৪৮ বছর বয়সী তিন জনেরই রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলে’।
সদ্য চিন ঘুরে পুণেয় ফিরে আসা এক ভারতীয়কেও এ দিন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সন্দেহ, তিনিও আক্রান্ত হয়েছেন ওই ভাইরাসে।
এ ছাড়াও মুম্বইয়ের বিভিন্ন জায়গায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে আরও ৫ জনকে ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে।
কেরলেও ৭ জনকে একই সন্দেহে ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে। সরকারি সূত্রের খবর, সোমবার পর্যন্ত চিন থেকে আসা ১৫৫টি বিমানের মোট ৩৩ হাজার ৫৫২ জন যাত্রীর রক্তপরীক্ষা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- চিনে মৃত্যু বাড়ছেই, ভারতীয় উদ্ধারে চাপ
আরও পড়ুন- মহিলার মৃত্যুতে কলকাতায় করোনা-আতঙ্ক
ও দিকে, চিনে ইতিমধ্যেই ওই মারাত্মক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে একশোরও বেশি মানুষের। আরও ১৩ হাজার মানুষের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। ভাইরাস যাতে অন্য দেশেও দ্রুত না ছড়িয়ে পড়তে পারে সে জন্য চিনা প্রশাসন দেশের নাগরিকদের আপাতত খুব প্রয়োজন না থাকলে বিদেশে যেতে নিষেধ করেছে।
চিনের এক তরুণী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না, তা নিয়ে রবিবার রাত থেকে প্রায় ১৫ ঘণ্টা টানাপড়েন চলে কলকাতায়। সোমবার সন্ধ্যায় তাতে নতুন মাত্রা যোগ করে শহরের একটি হাসপাতালে তাইল্যান্ডের এক মহিলার মৃত্যু। শেষ পর্যন্ত অবশ্য চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের লক্ষণ নেই চিনা তরুণীর শরীরে। তাইল্যান্ডের মৃত মহিলাও ওই ভাইরাসে আক্রান্ত নন বলেই মনে করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, রবিবার গভীর রাতে চিনের নাগরিক আঠাশ বছরের এক তরুণীকে নিয়ে তাঁর বন্ধুরা অ্যাপোলো গ্লেনেগলস হাসপাতালে যান। পত্রপাঠ তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নেপালে এক জন আক্রান্তের খোঁজ মেলার পর থেকে স্বাস্থ্যভবন একাধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কিন্তু চিনা নাগরিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এমন আশঙ্কায় ঘুম ছুটে যায় স্বাস্থ্যভবনের আধিকারিকদের।
চিনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্ক ছড়িয়েছে পঞ্জাবেও। জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভোগায় মোহালির এক ব্যাঙ্ককর্মী সোমবার ডাক্তার দেখাতে যান চণ্ডীগড়ের ‘পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (পিজিআইএমইআর)’-এ। সন্দেহ করা হচ্ছে, ওই ব্যাঙ্ককর্মী আক্রান্ত হয়েছেন করোনাভাইরাসে।
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্ক জোরালো হতেই সোমবার থেকে রাজ্যে রাজ্যে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দল পাঠাতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই তিনটি দল পাঠানো হয়েছে নেপাল সীমান্ত লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গের পানিট্যাঙ্কি এবং উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড় জেলার ঝুলাঘাট ও জাউলজিবিতে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে ভর্তি হওয়া রোগীদের জন্য রাজ্যের প্রতিটি জেলার হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে ১০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড অবিলম্বে চালুর নির্দেশ দিয়েছে সোমবার উত্তরপ্রদেশ সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy