মুকেশের পরিবারের সংস্পর্শে আসা এক ব্যক্তি এবং তাঁর সংস্পর্শে আসা চার জন ইতিমধ্যেই ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন। ফাইল চিত্র।
একই পরিবারের চার জন সদস্য ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন রাজস্থানে। তবে সেটা আর এখন বড় খবর নয়। কেন্দ্রকে চিন্তায় ফেলেছে ওই পরিবারটি সম্পর্কে সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসা একটি তথ্য। তাতে জানা গিয়েছে, ২৮ নভেম্বর চার জনই একটি বিয়েবাড়িতে গিয়েছিলেন। জয়পুরে আয়োজিত সেই বিয়েবাড়িতে উপস্থিত ছিলেন কম করে ১০০ জন অভ্যাগত। কাল বিলম্ব না করে তাই প্রশাসন এখন ওই বিয়েবাড়ির অতিথিতালিকা মেলাতে বসেছে। অতিথিদের করোনা পরীক্ষা করানোর প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে রাজস্থান সরকার।
রাজস্থানের ওই পরিবারটি গত ২৫ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশে ফেরে। পরিবারের সদস্য বলতে এক দম্পতি এবং তাঁদের দুই কন্যা। ৪৭ বছরের মুকেশের বাড়ি জয়পুরের দাদি কা ফটক এলাকায়। তাঁর স্ত্রী-র বয়স ৩৮। দুই মেয়ের এক জনের বয়স ৭ অন্য জন ১২। কর্মসূত্রে দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকেন মুকেশ। ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের বিয়েতে যোগ দিতেই সপরিবারে দেশে ফিরেছিলেন। বিমানে ওঠার আগে তিন বার করোনা পরীক্ষা করানো হয় তাঁদের। প্রত্যেক বারই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তার পরও চার জনের শরীরে করোনার ওমিক্রন রূপের সন্ধান পাওয়ায় বিশেষজ্ঞরা উদ্বিগ্ন।
উদ্বেগের আরও একটি কারণ ওমিক্রনের সংক্রমণের দ্রুততা। মুকেশের পরিবারের সংস্পর্শে আসা এক ব্যক্তি এবং তাঁর সংস্পর্শে আসা চার জন ইতিমধ্যেই ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন। মুকেশ দেশে ফেরার দিনই তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন এক আত্মীয়। মুকেশের সঙ্গে তাঁর আদর্শনগরের বাড়িতে ঘণ্টা খানেক ছিলেন তিনি। ১ ডিসেম্বর একটি অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল ওই ব্যক্তির। সেই সূত্রে করোনা পরীক্ষা করানো হলে দেখা যায়, তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এর পর জিনসজ্জা পরীক্ষার জন্য নিয়ে তাঁর নমুনা পাঠানো হলে দেখা যায়, তিনি করোনার ওমিক্রন রূপেই আক্রান্ত। এর পর ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা চার জনের শরীরে ওমিক্রন পাওয়া যায়। এঁর মধ্যে ওই ব্যক্তির ৭১ বছরের বৃদ্ধ বাবাও আছেন। এ ছাড়া রয়েছেন ৩৯ বছর বয়সি এক মহিলা, ৪৮ বছরের এক ব্যক্তি এবং ১৬ বছরের এক কিশোরী। প্রশাসন জানিয়েছে, ১৬ বছরের কিশোরী ছাড়া বাকিদের দু’টি টিকা নেওয়া ছিল।
দেশে এই মুহূর্তে মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ২১। এর মধ্যে রাজস্থানে ৯ জন। প্রশাসন জানিয়েছে, ওমিক্রন সংক্রমিতদের অধিকাংশই উপসর্গবিহীন। ৭১ বছরের বৃদ্ধ-সহ কয়েকজনের সামান্য সর্দি কাশি রয়েছে।
দেশের মধ্যে প্রথম ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল কর্নাটকে। সেখানে দুই ব্যক্তির শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়ে। তাঁদের মধ্যে এক জন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ওই রাজ্যে ফিরেছিলেন। এবং পরে তিনি দেশ ছেড়ে দুবাই চলে যান। দ্বিতীয় জন স্বাস্থ্যকর্মী। কিন্তু তিনি বিদেশে যাননি। কী ভাবে তিনি আক্রান্ত হলেন, তা খতিয়ে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। গুজরাতের জামনগরে আরও এক জনের দেহে ওমিক্রন পাওয়া যায় শনিবার। রবিবার সকালেই মুম্বইয়ে এক মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের দেহে এই ভাইরাসের হদিস মিলেছে। এর পর ধরা পড়ে দিল্লিতেও। আক্রান্ত ব্যক্তি তানজানিয়া থেকে দিল্লিতে ফিরেছিলেন।
কোভিড-এর এই নতুন রূপকে নিয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্ব জুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ভারত-সহ একাধিক দেশ আন্তর্জাতিক বিমানে আগত যাত্রীদের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন-সহ অনেক দেশ সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া শুরু করেছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ওমিক্রন নিয়ে এখনও স্পষ্ট করে বলার মতো পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই করোনার এই নতুন রূপ নিয়ে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy