পরিযায়ী শ্রমিকদের ইস্যুতে মুখ খুললেন নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্ত। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দেশের করোনা-পরিস্থিতি সামলাতে প্রশংসাযোগ্য কাজ হলেও পরিযায়ী শ্রমিকদের ইস্যুতে অত্যন্ত অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। এমনটাই মনে করেন নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্ত। তাঁর মতে, পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্কটমোচনে আরও যত্নশীল হওয়ার প্রয়োজন ছিল সরকারের। এই ইস্যুতে রাজ্য ও কেন্দ্র, দুই সরকারই আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারত।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ২৫ মার্চ থেকে দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণা করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এর ফলে রাতারাতি কাজ হারান অগণিত পরিযায়ী শ্রমিক। রুজিরুটির টানে ভিন্ রাজ্যে যাওয়া শ্রমিকরা প্রবল আর্থিক সঙ্কটের মুখোমুখি হন। এক ধাক্কায় সহায়সম্বলহীন হয়ে পড়েন দেশের অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিক। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সামনে দাঁড়িয়ে ভিন্ রাজ্য থেকে নিজেদের ঘরে ফিরতে শুরু করেন তাঁরা। করোনা-সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই লকডাউনের মাঝে হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক হাঁটা দেন বাড়ির পথে। বাড়ি ফেরার পথে কেউ দুর্ঘটনায়, কেউ বা ক্লান্তিতে প্রাণ হারান। দেশ জুড়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের সেই মর্মান্তিক দৃশ্য ভেসে উঠতে থাকে সংবাদ শিরোনামে। অমিতাভ কান্তের মতে, পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা ঘোচাতে কেন্দ্র ও রাজ্য— দুই সরকারের তরফেই আরও অনেক কিছু করা যেত।
শুক্রবার একটি সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, দেশ জুড়ে করোনা-সংক্রমণের মোকাবিলা সাফল্যের সঙ্গে করা গেলেও পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্কটমোচনের বিষয়টি অত্যন্ত অপটু ভাবে করা হয়েছে। তাঁর কথায়, “পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যুটি যে একটা চ্যালেঞ্জ, তা বোঝাটাও জরুরি। কারণ বছরের পর বছর ধরে আমরা এমন আইন তৈরি করেছি, যা অর্থনীতিতে বৃহৎ সংখ্যক অস্থায়ী শ্রমিক তৈরি করেছে।”
আরও পড়ুন: ক্ষতি অন্তত লক্ষ কোটি টাকা: মমতা ॥ হাজার কোটির প্রতিশ্রুতি মোদীর
আরও পড়ুন: ভোটের অঙ্কেই কি বঙ্গ-প্রীতি? মোদীর সফর ঘিরে জল্পনা
দেশ জুড়ে পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যুতে বিপুল সমালোচনার মুখে পড়ে তাঁদের ঘরে ফেরাতে উদ্যোগী হয় মোদী সরকার। শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন, বাসের ব্যবস্থা করা ছাড়াও তাঁদের জন্য আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, এর কোনও কিছুই যথেষ্ট নয়। এই আবহে এই প্রথম সরকারের ঘর থেকেই পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে সমালোচনার সুর শোনা গেল। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’ নীতি আয়োগের সিইও অবশ্য এ নিয়ে রাজ্য সরকারগুলিরও দায়িত্ব রয়েছে বলে মনে করেন। তিনি বলেন, “পরিযায়ীদের বিষয়টি যাতে আরও ভাল ভাবে নিষ্পত্তি করা হয়, সেটা নিশ্চিত করা রাজ্য সরকারগুলির দায়িত্ব।” তার কারণ হিসাবে অমিতাভ কান্ত বলেন, “ভারতের মতো এত বড় দেশে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের খুবই কম ভূমিকা থাকে। এটা একটা চ্যালেঞ্জ। আর আমার মনে হয়, প্রত্যেক শ্রমিকের বিষয়ে যত্নশীল হওয়ার বিষয়ে রাজ্য বা স্থানীয় অথবা জেলা স্তরে আরও ভাল কাজ করা যেত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy