লাইনে নেমে বিক্ষোভ। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে এ বার হয়রানির অভিযোগ করলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। তিনটি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে চেপে বিহার ও উত্তরপ্রদেশে ফিরছিলেন তাঁরা। দীর্ঘ যাত্রা পথে তাঁদের পচা খাবার খেতে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। ট্রেনে পরিচ্ছন্নতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। কোথাও আবার রাতভর একটি স্টেশনে ট্রেন দাঁড় করিয়ে রাখার অভিযোগও উঠেছে।
শনিবার সকালে উত্তরপ্রদেশে দীনদয়াল উপাধ্যায় জংশনের কাছে রেললাইনের উপর বিক্ষোভে শামিল হন একদল পরিযায়ী শ্রমিক। টানা ১০ ঘণ্টা সেখানে ট্রেন দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগানও দেন।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ধীরেন রাই নামের এক ব্যক্তি জানান, অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম থেকে বিহারে ফিরছিলেন তাঁরা। রাত ১১টা নাগাদ দীনদয়াল উপাধ্যায় স্টেশনে ঢোকার মুখে আচমকাই ট্রেন দাঁড়িয়ে যায়। তার পর থেকে এ দিন সকাল ৯টা-সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ট্রেন দাঁড়িয়েই ছিল। দেড় হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ট্রেনে উঠেছিলেন, কিন্তু গত দু’দিনে তাঁদের কিছু খেতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সংক্রমণে বড় লাফ, সওয়া এক লক্ষ ছাড়িয়ে গেল দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা
মহারাষ্ট্রের পানভেল থেকে উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের উদ্দেশে রওনা দেওয়া একটি ট্রেনে উঠেও পরিযায়ী শ্রমিকরা একই পরিস্থিতির শিকার হন বলে জানা গিয়েছে। বারাণসীর কাছে ১০ ঘণ্টা ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। শেষমেশ ট্রেন থেকে নেমে লাইনের উপর বসে বিক্ষোভ দেখান পরিযায়ী শ্রমিকরা। তার জেরে অন্য ট্রেনও আটকে পড়ে। রেল পুলিশের হস্তক্ষেপে শেষে বিক্ষোভ ওঠে। তার পর খাবার জোটে সকলের।
তারও বেশ খানিক ক্ষণ পর ট্রেন ছাড়ে বলে জানা গিয়েছে। সংবাদমাধ্যমে গোবিন্দকুমার রাজভর নামের এক যাত্রী বলেন, ‘‘সেই মহারাষ্ট্রে খাবার পেয়েছিলাম। তার পর আর কিছু দেওয়া হয়নি আমাদের। বারাণসীতে ৭ ঘণ্টা ট্রেন দাঁড়িয়েছিল। তার পর খানিকটা এগিয়ে আবার ২ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে যায়। তার পরেও বেশ কয়েক বার ট্রেন দাঁড়িয়েছে।’’
শুক্রবার গুজরাত থেকে বিহারের উদ্দেশে রওনা দেওয়া একটি ট্রেনেও বিক্ষোভ দেখান পরিযায়ী শ্রমিকরা। ট্রেনে পচা খাবার পরিবেশন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তাঁরা। ট্রেন কানপুর জংশনে ঢোকার পর সেই পচা খাবার ছুড়ে ফেলতে শুরু করেন অনেকে। এক যাত্রী জানান, পানীয় জল তো নেই-ই। জল নেই ট্রেনের শৌচাগারেও। তিন-চার দিন আগে ভেজে রাখা লুচি, যা কিনা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল, সেগুলি খেতে দেওয়া হয়েছিল তাঁদের।
আরও পড়ুন: লকডাউনে বেতন নেই, তেলঙ্গানায় কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে বাঙালি পরিবার সহ আত্মঘাতী ৯
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োয় শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনগুলিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের যে করুণ অবস্থা সামনে এসেছে, তাতে সমালোচনা ঝড় উঠেছে। তবে এ নিয়ে রেলের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও সাফাই দেওয়া হয়নি। বরং ৯৩০টি শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন চালিয়ে এখনও পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশে ১২ লক্ষ ৩৩ হাজার শ্রমিককে ফেরানো গিয়েছে বলে শুক্রবার রাজ্য সরকারের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy