ছবি: রয়টার্স।
আরও দু’সপ্তাহের জন্য বাড়ল লকডাউন। আজ তৃতীয় দফা লকডাউনের শেষ দিনে কেন্দ্র জানাল, রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ৩১ মে পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে শর্তসাপেক্ষে বেশ কিছু ছাড়ের ঘোষণাও থাকছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় বিধি মেনে সংক্রমণের জ়োন ভাগ করার ক্ষমতা রাজ্য প্রশাসনের হাতে ছাড়া হচ্ছে। নয়া জ়োন-বিধি এবং নয়া ছাড়ের ব্যাপারে সোমবার বিশদ নির্দেশিকা জানাতে পারে রাজ্য।
রবিবার রাত ৯টায় চতুর্থ দফা লকডাউন সম্পর্কে আলোচনা করতে সব রাজ্যের মুখ্য ও স্বরাষ্ট্রসচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা। তিনি রাজ্যগুলিকে অনুরোধ করেন, শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালানোর ব্যাপারে দ্রুত অনুমতি দিতে। যাতে রেল আরও ট্রেন চালিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে পারে।
চতুর্থ দফা লকডাউন ঘোষণা করে গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, এই দফায় ছাড়ের পরিধি বাড়ানোর কথা ভাবছে কেন্দ্র। রাজ্যগুলির সঙ্গে তাঁর আলোচনায় পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব, অসম, তেলঙ্গানা-সহ অধিকাংশ রাজ্যই ৩১ মে পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানোর পাশাপাশি কিছু বাড়তি ছাড়ের দাবি জানিয়েছিল। সেই প্রস্তাব মেনে আজ বাড়তি ছাড় হিসেবে আন্তঃরাজ্য বাস চলাচলে অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র।
রাজ্যকে ক্ষমতা
• রেড, অরেঞ্জ ও গ্রিন জ়োন চিহ্নিত করতে পারবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য
নতুন ছাড়
• একাধিক রাজ্য সমন্বয় রেখে বাস ও গাড়ি চালাতে পারবে। স্পোর্টস কমপ্লেক্স বা স্টেডিয়াম দর্শকশূন্য ভাবে খোলা যাবে। কন্টেনমেন্ট এলাকা ছাড়া দোকান, সেলুন ও পার্লার।
বন্ধই থাকছে
• মেট্রো রেল, স্কুল-কলেজ, কোচিং সেন্টার, শপিং মল, জিম, সুইমিং পুল, পার্ক, থিয়েটার, অডিটোরিয়াম, সব ধর্মের উপাসনাস্থল, জমায়েত। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উড়ান বন্ধ থাকলেও দেশের মধ্যে চলবে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স।
• সন্ধে ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত নৈশ কার্ফু।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লার স্বাক্ষরিত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এক বা একাধিক রাজ্যের মধ্যে পারস্পরিক সমন্বয়ের ভিত্তিতে চালু করা যেতে পারে যাত্রিবাহী বাস বা গাড়ি। ১২ মে থেকে দেশের ১৫টি গন্তব্যে বিশেষ এসি ট্রেন চালাচ্ছে কেন্দ্র। সেই ট্রেন এবং শ্রমিক স্পেশাল আপাতত চালু থাকছে। তবে বিমান পরিষেবা শুরু হচ্ছে না। আন্তঃরাজ্য সব ধরনের পণ্য পরিবহণেও ছাড়ের কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: মোদী-নির্মলার প্যাকেজ কি সত্যিই জিডিপি-র ১০ শতাংশ? নাকি ১?
Ministry of Home Affairs (MHA) issues guidelines on measures to be taken by Ministries/Departments of Government of India, State Governments/UT Governments & State/UT authorities for containment of COVID19. #LockDown4 will remain in effect till 31st May 2020. pic.twitter.com/10WnwnWfte
— ANI (@ANI) May 17, 2020
তৃতীয় দফা লকডাউনের শুরুতে জ়োন ভাগ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিল রাজ্যগুলি। এ বার পশ্চিমবঙ্গ ও ছত্তীসগঢ়ের মতো কিছু রাজ্য জ়োন চিহ্নিত করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট রাজ্যের হাতে ছাড়তে অনুরোধ করে। তা মেনে আজ নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এখন থেকে কোনও রাজ্যের কোন এলাকা রেড, অরেঞ্জ ও গ্রিন জ়োনে, তা ঠিক করার দায়িত্বে থাকবে রাজ্যই। তবে জ়োন চিহ্নিতকরণের প্রশ্নে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যে নিয়ম রয়েছে, তা মেনে চলতে হবে রাজ্যকে।
আরও পড়ুন: ঋণ দিতেও ৪ শর্ত রাজ্যগুলোকে
কেন্দ্রের মতে, যেহেতু বিভিন্ন রাজ্যে গ্রিন ও অরেঞ্জ জ়োনে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অল্প হলেও শুরু হয়েছে, সেই কাজে গতি আনতেই মূলত রেড জ়োনে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নে রাজ্যের হাতে অধিকার দেওয়া হল। ইতিমধ্যেই রেড জ়োনকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করে আর্থিক গতিবিধি চাঙ্গা করার নীতি নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর মধ্যে ‘এ’ এলাকায় ছাড় থাকবে না। ‘বি’ এলাকাগুলিতে সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে ছাড় দেওয়া হবে এবং ‘সি’ এলাকায় প্রায় সব কিছুতেই ছাড় দেওয়া হবে বলে ঠিক করেছে নবান্ন। আপাতত সেই নীতি মেনেই এগোতে চায় রাজ্য।
রবিবার বিকেলেই রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর টুইট করে, কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউন নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত বিকেল পর্যন্ত না জানানোর কারণে পরবর্তী নির্দেশিকা না বেরনো পর্যন্ত চালু ব্যবস্থাই রাজ্যে কার্যকর থাকবে। আজ, সোমবার রাজ্য সরকারের পদক্ষেপগুলি সবিস্তার প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতর।
বিভিন্ন রাজ্যের মতের ভিত্তিতে রবিবার রাতে এ ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। বলা হয়েছে, রাজ্যগুলি কেন্দ্রের নির্ধারিত মাপকাঠি মেনে হট স্পট, গ্রিন ও অরেঞ্জ জ়োন ভাগ করতে পারে। তবে বাছাইয়ের সময় খেয়াল রাখতে হবে, কোথায় কতগুলি কেস ছড়িয়েছে, সেই কেসের সংস্পর্শে এসেছেন ক’জন এবং সব মিলিয়ে রোগের প্রকোপ কতটা। নির্দেশিকায় কী ভাবে কন্টেনমেন্ট জ়োন চিহ্নিত করতে হবে, বিশদে বলা আছে। সঙ্গেই বলা হয়েছে বাফার জ়োনের কথা অর্থাৎ, যেখান থেকে প্রাথমিক ভাবে আক্রান্তের রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে।
জ়োনগুলি চিহ্নিত করার পর কন্টেনমেন্ট সংক্রান্ত বিধি মেনে রাজ্যকে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজন হলে রাজ্যগুলি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওয়েবসাইট থেকে তা যাচাই করে নিতে পারবে। বাফার জ়োন চিহ্নিত করবে জেলা প্রশাসন বা পুরসভা। স্থানীয় স্তরে এই চিহ্নিতকরণের কাজে জেলা প্রশাসন বা পুরসভাকে বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিতে হবে এবং এই বাফার জ়োনের উপরে বাড়তি নজরদারি চালাতে হবে। কন্টেনমেন্ট যথাযথ ভাবে কার্যকর করার স্বার্থে বাফার জ়োন যতটা সম্ভব বড় এলাকা জুড়ে তৈরি করতে হবে। কন্টেনমেন্ট এলাকায় যে কোনও ছাড় দেওয়া যাবে না, তা-ও স্পষ্ট করেছে কেন্দ্র। ওই সব এলাকায় চিকিৎসা পরিষেবা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ ব্যতীত সব ধাঁচের গতিবিধি আগের মতোই নিষিদ্ধ থাকছে। কন্টেনমেন্ট এলাকা চিহ্নিত করার ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের হাতে ছাড়া হয়েছে। রাজ্যগুলিকে অনুরোধ করা হয়েছে, রেড-অরেঞ্জ-গ্রিন-কন্টেনমেন্ট জ়োন এবং বাফার জ়োনের তালিকা জানিয়ে নির্দেশিকা প্রকাশ করতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy