লকডাউনের মধ্যে চলছে পণ্য পরিবহণ। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের কাছে জাতীয় সড়কে। ছবি: পিটিআই
কালোবাজারি, মজুতদারির বিরুদ্ধে রাজ্যগুলিকে কড়া আইন কার্যকর করার নির্দেশিকা পাঠাল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সচিব অজয় ভাল্লা সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিবদের চিঠিতে এই নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন। ওই বার্তায় বলা হয়েছে, বেশি দাম নেওয়া, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর কালোবাজারি বা মজুতদারির অভিযোগ পেলে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে ব্যবস্থা নিতে হবে। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব।
ওই চিঠিতে অজয় ভাল্লা জানিয়েছেন, বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে খাদ্যপণ্য, ওষুধ, চিকিৎসা সামগ্রী ও যন্ত্রপাতি উৎপাদন, পরিবহণ, সরবরাহ ও এই সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যকলাপে ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু বিভিন্ন রাজ্য থেকে এমন রিপোর্ট মিলেছে যে উৎপাদন কম হচ্ছে। তার অন্যতম কারণ, লকডাউনের জেরে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
আর সেই সূত্রেই কালোবাজারি মজুতদারির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রসচিব। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এমন পরিস্থিতিতে গুদামে বা বাড়িতে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য মজুত, কালোবাজারি, অত্যধিক মুনাফা, ফাটকা কারবার এবং তার জেরে মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’’ আর সেই কারণেই রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মুখ্যসচিবদের কাছে এই সব পণ্যের জোগান স্বাভাবিক রাখার কথা বলেছেন অজয় ভাল্লা।
আরও পড়ুন: আরও ১ মাস দেশ জুড়ে বন্ধ রাখা হোক স্কুল-কলেজ, মল, জমায়েত, সুপারিশ মন্ত্রিগোষ্ঠীর
পাশাপাশি কালোবাজারি, মজুতদারি রুখতে ১৯৫৫ সালের এসেনশিয়াল কমোডিটিজ অ্যাক্ট বা অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন কার্যকর করার কথা বলেছেন তিনি। এই আইনভঙ্গ ফৌজদারি অপরাধ। দোষী প্রমাণিত হলে সাত বছরের জেল অথবা জরিমানা অথবা উভয়ই হতে পারে। এ ছাড়া এই সংক্রান্ত ১৯৮০ সালের একটি আইনও রয়েছে। ভাল্লা লিখেছেন, ‘‘রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির প্রশাসন ‘প্রিভেনশন অব ব্ল্যাকমার্কেটিং অ্যান্ড মেনটেনেন্স অব সাপ্লাইজ অব এসেনশিয়াল কমোডিটিজ অ্যাক্ট’-এও অভিযুক্তদের গ্রেফতার বা আটক করতে পারে।’’ এই আইন কার্যকর করতে বিজ্ঞপ্তি জারির ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতেই।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লার পাঠানো চিঠি।
শুধু আইন কার্যকর করাই নয়, কী ভাবে কালোবাজারি, মজুতদারির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর কথাও বলেছেন স্বরাষ্ট্রসচিব। তাঁর পরামর্শ, প্রয়োজনে কত পরিমাণ পণ্য রাখা যাবে, তার সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেওয়া, সর্বোচ্চ দাম নির্দিষ্ট করে দেওয়া, নিয়মিত ব্যবধানে ডিলারদের মজুত পণ্যের হিসেব নেওয়া, অভিযান চালানোর মতো পদক্ষেপ করতে পারে রাজ্যগুলি। সরকারি নির্দেশিকার পাশাপাশি ওই চিঠিতে ভাল্লা বলেছেন, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে আমার আর্জি, সাধারণ মানুষের কাছে যাতে অত্যাবশ্যকীয় ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জোগান স্বাভাবিক থাকে এবং ন্যায্য দামে পান, সেটা আপনারা নিশ্চিত করুন।’’
আরও পড়ুন: এ বার হু-কে তোপ ট্রাম্পের, অর্থ সাহায্য বন্ধের হুঁশিয়ারি
গত ২৪ মার্চ সারা দেশে তিন সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফলে যাত্রীবাহী সমস্ত যানবাহন বন্ধ। তবে অত্যাবশ্যকীয় ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী পরিবহণকে লকডাউনের বাইরে রাখার ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দাম বেশি নেওয়া, পণ্যের জোগানের ঘাটতির অভিযোগ উঠছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy