ছবি: পিটিআই।
যেখানে বাড়ি, সেই রাজ্য তেমন আগ্রহী নয় ঘরে ফেরাতে। যদি দ্রুত উৎপাদন শুরুর ছাড়পত্র মেলে, এই আশায় কাছছাড়া করতে চান না আপাতত মজুরি না-দেওয়া মালিক। আর আশ্রয় যে ত্রাণ শিবিরে, সেখানে থাকা-খাওয়া-চিকিৎসার অবস্থা তথৈবচ।
মূলত এই ত্র্যহস্পর্শেই পরিযায়ী শ্রমিকদের অসহনীয় কষ্টের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ একাধিক ট্রেড ইউনিয়নের। ওই কর্মীরা এক বার বাড়ি পৌঁছলে, খুব তাড়াতাড়ি কাজের জায়গায় ফেরা তাঁদের পক্ষে কঠিন হবে বলে মানছেন বিশেষজ্ঞরাও। যে কারণে কারখানা কিংবা নির্মাণস্থলের কাছাকাছি ওই শ্রমিকদের রেখে দিতে অনেক মালিকও মরিয়া বলে মনে করছেন তাঁরা।
শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক অমরজিৎ কউরের দাবি, “ভিন্ রাজ্যে আটকে থাকা পড়ুয়া, তীর্থযাত্রীদের ফিরিয়ে নিতে পদক্ষেপ করেছে (কিংবা নিদেন পক্ষে আগ্রহ দেখিয়েছে) উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড-সহ বিভিন্ন রাজ্য। কিন্তু অন্য রাজ্যের ত্রাণশিবিরে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে আগ্রহ দেখায়নি প্রায় কোনও রাজ্য সরকারই। ঘরে ফেরানোর বন্দোবস্ত করেনি কেন্দ্রও।”
আরও পড়ুন: সাংবাদিক-স্বাধীনতা: কাশ্মীর-পরিস্থিতির কারণেই আরও পতন ভারতের!
লকডাউনের জেরে কাজ যাওয়ায় হাতে টাকা নেই। ভাড়া না-মেলার আশঙ্কায় ঘরছাড়া করেছেন বাড়ির মালিকেরা। ত্রাণশিবিরে খাবার, পানীয় জল, এমনকি থাকার জায়গাও বাড়ন্ত। অথচ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, আপাতত যে যেখানে রয়েছেন, সেই রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সীমানা পার হওয়া যাবে না। শারীরিক পরীক্ষার পরে শর্ত এবং নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে সেই রাজ্যেই।
এই সিদ্ধান্তের জন্য মালিক পক্ষের তরফে সরকারের উপরে চাপ তৈরি করা হয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে। এক্সএলআরআই-এর অর্থনীতির অধ্যাপক কে আর শ্যামসুন্দর স্পষ্ট বলছেন, “সম্ভাব্য কর্মী-সমস্যা আঁচ করে শিল্পমহল প্রবল চাপ তৈরি করার কারণেই পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওই সিদ্ধান্ত।” সিটু-র তপন সেনের কথায়, “এখন শ্রমিকরা বাড়ি গেলে, উৎপাদন শুরুর অনুমতি মেলার পরেও কর্মীর অভাবে কাজ শুরু শক্ত হতে পারে। তাই কর্মীদের এখনই ফিরতে না-দেওয়ার জন্য মালিক পক্ষের তরফে চাপ তৈরির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।”
ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ-কলকাতার অধিকর্তা অচিন চক্রবর্তীরও বক্তব্য, “কর্মীদের পকেটে টাকা নেই। ঘরে ফিরে কোনও ক্রমে খেয়ে-পরে বাঁচতে চান তাঁরা। পরে উৎপাদন পুরোদমে শুরু হলে এবং পকেটে টাকা জমলে, তবে কাজে ফেরার প্রশ্ন। ফলে তাঁরা ঘরে ফিরলে কর্মী সমস্যা হতেই পারে।” এই অবস্থায় শ্রমিক সংগঠনগুলির প্রশ্ন, অর্থনীতির স্বার্থে যদি শ্রমিকদের ধরে রাখা জরুরি হয়, তবে তাঁদের কেন দেওয়া হচ্ছে না যথেষ্ট খাবার-ওষুধ-থাকার জায়গা? কেনই বা করোনা পরীক্ষা না-করে ত্রাণ শিবিরে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে রাখা হচ্ছে তাঁদের?
আরও পড়ুন: বড়মা এখন রোগী-শূন্য, শুরু লেভেল ৪-এর প্রস্তুতি
আরও পড়ুন: বাজেটের হিসেব ভেস্তে দিল করোনা
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy