গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
ফি-দিন বাড়ছে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। রোজ ১৫-১৬ হাজার করে বৃদ্ধিটা, ইদানিং ১৮-১৯ হাজারে এসে দাঁড়িয়েছে। ধারাবাহিক এই সংক্রমণ বৃদ্ধি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে চিকিৎসক থেকে বিশেষজ্ঞদের। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ হাজার ৬৫৩ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন পাঁচ লক্ষ ৮৫ হাজার ৪৯৩ জন। মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও তামিলনাড়ু— দেশের মোট আক্রান্তের প্রায় ৬০ শতাংশই এই তিনটি রাজ্য থেকে।
করোনায় আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুও বাড়াচ্ছে উদ্বেগ। করোনার থাবায় মৃত্যু সংখ্যা দেশে ১৭ হাজার পার করল। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত ১৭ হাজার ৪০০ জনের মৃত্যু হল করোনার কারণে। এর মধ্যে সাত হাজার ৮৫৫ জন মারা গিয়েছেন মহারাষ্ট্রে, যা দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দিল্লিতে প্রাণ হারিয়েছেন দু’হাজার ৭৪২ জন। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাতে মারা গিয়েছেন এক হাজার ৮৪৬ জন। তামিলনাড়ুতে মৃত্যু সংখ্যা হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। সেখানে মৃত এক হাজার ২০১। উত্তরপ্রদেশ (৬৯৭), পশ্চিমবঙ্গ (৬৬৮), মধ্যপ্রদেশ (৫৭২)-এ মৃত্যু সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে রাজস্থান (৪১৩), তেলঙ্গানা (২৬০), কর্নাটক (২৪৬), হরিয়ানা (২৩৬), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৮৭) ও পঞ্জাব (১৪৪)-র মতো রাজ্যগুলি। জম্মু ওক কাশ্মীরে করোনার কারণে মৃতের সংখ্যা বুধবার ১০১ ছুঁল।
আক্রান্ত ও মৃত্যু রোজদিন বাড়লেও সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটা স্বস্তি দিচ্ছে ভারতকে। এখন দেশে সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীর সংখ্যা সক্রিয় করোনা আক্রান্তের চেয়ে বেশি। মোট আক্রান্তের অর্ধেকেরও বেশি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ১৫৭ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট তিন লক্ষ ৪৭ হাজার ৯৭৯ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
কেরলে হয়েছিল শুরু। কিন্তু তার কিছু দিন পর থেকেই দেশে করোনা সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র।সেখানে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৭৪ হাজার ৭৬১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ৮৭৮ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সে রাজ্যে। শেষ কয়েক দিন নতুন আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাটা চার হাজার ছুঁইছুঁই তামিলনাড়ুতে। এ ভাবে বাড়তে বাড়তে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ হাজার ছিল। তামিলনাড়ুর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলা দিল্লিতে মোট আক্রান্ত ৮৭ হাজার ৩৬০ জন। ৩২ হাজার ৫৫৭ সংক্রমণ নিয়ে গুজরাত ও ২৩ হাজার ৪৯২ আক্রান্ত নিয়ে উত্তরপ্রদেশ চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে।
সংক্রমণ বাড়তে বাড়তে কুড়ি হাজারের দিকে ছুটছে পশ্চিমবঙ্গ (১৮,৫৫৯), রাজস্থান (১৮,০১৪)। তেলঙ্গানা (১৬,৩৩৯), কর্নাটক (১৫,২৪২), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৪, ৫৯৫), হরিয়ানা (১৪,৫৪৮), মধ্যপ্রদেশ (১৩,৫৯৩)-এও বেড়ে চলেছে সংক্রমণ। বিহারে আক্রান্তের সংখ্যা আজ ১০ হাজার পার করল। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে অসম, জম্মু ও কাশ্মীর, ওড়িশা, পঞ্জাব, কেরলের মতো রাজ্যগুলি।
পশ্চিমবঙ্গেও সংক্রমণ বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৫২ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ১৮ হাজার ৫৫৯ জন। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মোট ৬৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বাংলায়।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy