ফাইল চিত্র।
কুম্ভ মেলায় ঠাসাঠাসি ভিড়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভারতে সুনামি তৈরি করেছে— গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এমন দাবি করছেন। দেশ জুড়ে কোভিড বিধি ও দূরত্ব বিধি কার্যকর থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্র ও উত্তরাখণ্ড সরকার কেন হরিদ্বারে এই মেলা করতে দিল, সেই প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু এই মেলা থেকে কেমন সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তার কোনও সুসংহত সরকারি হিসেব রাখা হচ্ছে না। অভিযোগ উঠেছে, মানুষ যাতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের দিকে আঙুল তুলতে না-পারে, সে জন্যই এ ব্যাপারে হিসেব কষেই ঢিলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেও চোখ কপালে উঠেছে মধ্যপ্রদেশে কুম্ভ ফেরতদের করোনা পরীক্ষার একটি খণ্ড-রিপোর্ট। কুম্ভ থেকে আসা ৬১ জনের একটি দলের করোনা পরীক্ষার পরে দেখা গিয়েছে, তাদের ৬০ জনই করোনা আক্রান্ত। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে সংক্রমণের হার ৯৯ শতাংশ।
কুম্ভ মেলার শাহিস্নানে যে ভিড় হবে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু তার পরেও সরকার কুম্ভের আয়োজন করে দাবি করেছিল, কোভিড-বিধি ও দূরত্ব বিধি মানার ব্যবস্থা করা হবে। বাস্তবে পুণ্যার্থীর ঢেউয়ে পুলিশ অসহায় হয়ে পড়ে। ভিড়ের ঠেলায় শিকেয় ওঠে সব বিধি। প্রশ্ন ওঠে, এক বছর আগে তবলিগি জামাতের কয়েকশো প্রতিনিধি একটি মসজিদে সম্মেলন করে যে ভাবে ‘সুপার স্প্রেডার’-এর তকমা পায়, পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে যে ভাবে হেনস্থা করে, কুম্ভে লাখো লাখো মানুষের জমায়েতের সময়ে কেন ভিন্ন অবস্থান হবে সরকারের? এর মধ্যেই বিভিন্ন আখড়ার সাধুরা করোনা সংক্রমিত হয়ে পড়ায়, অনেকে মারা যাওয়ায়, তাঁরা তাঁবু গুটিয়ে মেলা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার মেলা বন্ধ করে। কিন্তু তত দিনে যা হওয়ার
হয়ে গিয়েছে।
মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, মহারাষ্ট্র-সহ বেশ কিছু রাজ্য ঘোষণা করে— করোনা পরীক্ষা করে এবং বাধ্যতামূলক নিভৃতবাসের পরে ঘরে যেতে দেওয়া হবে কুম্ভ-ফেরত পুণ্যার্থীদের। কুম্ভে যোগ দেওয়ার জন্য ৭২ ঘণ্টা আগে করা করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট বাধ্যতামূলক করেছিল উত্তরাখণ্ড পুলিশ। অর্থাৎ যাঁরা ফিরছেন, করোনা সংক্রমিত না-হয়েই তাঁরা কুম্ভে গিয়েছিলেন। তবে ফেরার সময়ে তাঁদের পরীক্ষার ফল কী হচ্ছে, কোনও সরকারই সে ভাবে তা জানাচ্ছে না। অনেকে ঘুর পথে রাজ্যে ফিরে করোনা পরীক্ষা এবং নিভৃতবাসকে এড়িয়েও যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রদেশের দলটির পরীক্ষার ফলাফল সবাইকে চমকে দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি কুম্ভ থেকে ফেরা পুণ্যার্থীদের প্রায় সকলেই এ ভাবে সংক্রমিত হয়ে ফিরেছেন?
মধ্যপ্রদেশেও বিজেপি সরকার। কেন্দ্রের সরকারকে বিপাকে ফেলতে পারে এমন কোনও পদক্ষেপ তারা করতে নারাজ। স্বাভাবিক ভাবেই মুখে কুলুপ এঁটেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তাঁদের যুক্তি, নিভৃতবাস বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলে সংক্রমণ ছাড়ানোর ভয় কম। কিন্তু যাঁরা বিভিন্ন ভাবে পরীক্ষা এড়িয়ে রাজ্য ঢুকছেন, তাঁদের কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy