Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
WHO

করোনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব, হু-র উদাহরণে ধারাভি মডেল

এই ‘যুদ্ধজয়’ সহজ ছিল না, বলছে বৃহন্মুম্বই পুরসভা।

মুম্বইয়ের ধারাবী বস্তি। ছবি: পিটিআই

মুম্বইয়ের ধারাবী বস্তি। ছবি: পিটিআই

সংবাদ সংস্থা
মু্ম্বই শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২০ ০৩:৩৬
Share: Save:

অধরা প্রতিষেধক। এ দিকে, গোটা বিশ্বেই হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। ৪০দিনের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবু হাল ছাড়তে নারাজ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। করোনা নিয়ন্ত্রণে ‘ধারাভি মডেলের’ উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে আজ এক ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে হু-র প্রধান টেডরস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস বললেন, ‘‘সংক্রমণ যে বেড়েছে এবং বেড়েই চলেছে, তা অস্বীকার করছি না। তবে এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে এমন অনেক উদাহরণ আছে, যেখানে সংক্রমণ বাড়াবাড়ির পর্যায়ে যাওয়ার পরেও পুরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।’’ এই প্রসঙ্গেই দেশ হিসেবে ইটালি, স্পেন, দক্ষিণ কোরিয়ার পাশাপাশি এশিয়ার বৃহত্তম বস্তি মুম্বইয়ের ধারাভি-র কথা উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর মতে, পরিস্থিতি যতই ভয়াবহ হোক না কেন, যথাযথ কন্টেমেন্ট স্ট্র্যাটেজিই জাদুর মতো কাজ করে। ‘‘ঘনবসতিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় ধারাভি নিশ্চিত একটা নজির।’’

১১ মার্চ প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল মুম্বইয়ে। তারও তিন সপ্তাহ পরে ১ এপ্রিল কোভিড আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ জনবসতির ধারাভি বস্তিতে। ক্রমে তা করোনা-হটস্পট হয়ে ওঠে। চিন্তা বাড়তে থাকে বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু এখন ওই আড়াই বর্গকিলোমিটারের বস্তি এলাকায় অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা মাত্র ১৬৬— জানাচ্ছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকুর। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৯৫২ জন। যেখানে শহর মুম্বইয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৮৮ হাজারেরও বেশি। মৃত্যু হয়েছে পাঁচ হাজারের।

আরও পড়ুন: চিন ফের সেনা সরাল, এখনও মুক্ত নয় প্যাংগং

কী ভাবে সম্ভব হল এই নিয়ন্ত্রণ? ইটালি-স্পেনের প্রসঙ্গ টেনে গেব্রিয়েসাস বলেন, ‘‘অনেক দেশেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে দিয়েছিল। কিন্তু ধারাবাহিক টেস্ট-ট্রেস-আইসোলেট-ট্রিটমেন্টেই সাফল্য সামাল দেওয়া গিয়েছে সংক্রমণকে। একই ভাবে ধারাভিতেও অসুস্থদের আইসোলেট করে এবং বাকিদের ঘন-ঘন পরীক্ষা করেই করোনার বাড়বাড়ন্ত ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। যে-হেতু টিকা এখনও আসেনি, তাই সহজ এই চারটি পন্থা ছাড়া পথ নেই।’’

হু-র ‘গুডবুকে’ ধারাভির নাম উঠতেই আসরে নামেন উদ্ধব। তিনি বলেন, ‘‘সংক্রমণ কী ভাবে ঠেকিয়ে রাখতে হয়, সে ক্ষেত্রে ধারাভি গোটা বিশ্বের কাছে রোলমডেল হয়ে উঠতে পারে।’’ গোটা দেশে সুস্থতার হার যেখানে ৬২ শতাংশের সামান্য বেশি, ধারাভি সেখানে ৮২ শতাংশের নজির গড়েছে বলে দাবি তাঁর। এই সাফল্যের জন্য বৃহন্মুম্বই পুরসভার পাশাপাশি ডাক্তার, বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং স্থানীয়দেরই কৃতিত্ব দিয়েছেন উদ্ধব। ধারাভির বিধায়ক তথা রাজ্যের স্কুল শিক্ষামন্ত্রীও আজ হু-র প্রশংসার পরে টুইটারে লেখেন, ‘‘ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমার প্রিয় ধারাভিবাসীরা যে ভাবে একজোট হয়ে বিশ্বের সামনে নজির গড়েছেন, তাতে আমি গর্বিত।’’ গোটা রাজ্যেই ‘ধারাভি মডেল’ চালুর দাবি তুলেছেন একাধিক শিবসেনা নেতা, সাংসদ।

তবে এই ‘যুদ্ধজয়’ সহজ ছিল না, বলছে বৃহন্মুম্বই পুরসভা। এক পুরকর্তার দাবি, এই বস্তি এলাকার ৮০ শতাংশেরও বেশি বাসিন্দা ৪৫০টি গণ-শৌচাগারের উপর নির্ভরশীল। এই শৌচালয়গুলিতে এখনও রোজ একাধিক বার করে জীবাণুনাশ করা হচ্ছে। একটা ১০ বর্গফুটের ঘরে যেখানে ১০ জন করে থাকেন, সেখানে দূরত্ববিধি মানাও সহজ ছিল না বলে দাবি করেন ওই কর্তা।

অন্য বিষয়গুলি:

WHO Dharavi Coronavirus in India Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE