Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in India

মার্চেই দেশে ছিল দ্রুত গতির কোভিড স্ট্রেন, দাবি আইজিআইবি-র ডিরেক্টরের

আইজিআইবি-র ডিরেক্টরের মতে, দিল্লির মতো কিছু রাজ্যের রোগীদের পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছিল যে তাঁদের মধ্যে ওই প্রজাতির সংক্রমণ ছড়িয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:৫০
Share: Save:

শুধুমাত্র ব্রিটেন বা ফ্রান্সে নয়, চলতি বছরের মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে ভারতেও করোনাভাইরাসের নানা মিউটেশন হয়েছে। তার মধ্যে ভাইরাসের একটি প্রজাতি (স্ট্রেন) ওই সময় দেশে সংক্রমণের গতি বাড়ালেও জুনে তা নিজে থেকে মরে গিয়েছে। এমনটাই দাবি করলেন ইনস্টিটিউট অব জেনোমিক্স অ্যান্ড ইন্টেগ্রেটিভ বায়োলজি (আইজিআইবি)-র ডিরেক্টর অনুরাগ অগরওয়াল। তাঁর আরও দাবি, মার্চ থেকে মে-তে সে কারণে দেশে করোনার সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী ছিল। যদিও এ নিয়ে বর্তমানে ভারতের বাসিন্দাদের আশঙ্কার কারণ নেই বলেই মনে করেন তিনি।

একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য প্রিন্ট’-এ একান্ত সাক্ষাৎকারে আইজিআইবি-র ডিরেক্টর বলেন, “দেশে এখনও পর্যন্ত যত সংখ্যক কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে এখানেও হয়তো করোনাভাইরাসের অসংখ্য মিউটেশন হয়েছে।”

মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে ভারতে কোভিডের সংক্রমণকে অভূতপূর্ব আখ্যা দিয়েছেন অনুরাগ। কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চের অধীনস্থ সংস্থার ডিরেক্টর অনুরাগ জানিয়েছেন, ওই সময়ের মধ্যে করোনার যে স্ট্রেনটি ভারতে সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী, তাকে ‘এ-৪’ বলা হচ্ছে। তিনি বলেন, “দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে এ-৪ ছড়িয়েছে। এটা অত্যন্ত দ্রুত গতিতে সংক্রমণ ঘটায়। দিল্লি, হায়দরাবাদ এবং কর্নাটকের কোভিড রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে যে তাঁদের মধ্যে ওই প্রজাতির সংক্রমণ ছড়িয়েছে।”

আরও পড়ুন: ব্রিটেনের নতুন করোনা স্ট্রেনের খোঁজ ফ্রান্সে, সাময়িক বন্ধ ইংল্যান্ড সীমান্ত

আরও পড়ুন: মডার্নার প্রতিষেধকে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া, আমেরিকায় গুরুতর অসুস্থ চিকিৎসক

কী ভাবে ‘এ-৪’ তার গতি হারাল? এই প্রশ্নের উত্তরে অনুরাগ বলেন, “ভাইরাস হিসেবে এটি খুব একটা শক্তিশালী নয়। বহু বার মিউটেশন হওয়ার ফলে জুনেই এটি নিজে থেকে মারা যায়। যদিও তেমনটাই আশা করা হয়েছিল। ফলে এ নিয়ে অযথা আতঙ্ক তৈরি হয়নি। তাই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।”

ভারতে ‘এ-৪’ নিজের গতি হারালেও ব্রিটেনে এই মুহূর্তে করোনার যে নতুন স্ট্রেন পাওয়া গিয়েছে, তা ৭০ শতাংশ দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বলে দাবি। তবে তা নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সর্তক থাকা উচিত বলে মনে করেন অনুরাগ। এ নিয়ে তিনি কেরলের উদাহরণ টেনে এনেছেন। কেরলে জিন সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে ভাইরাসের উৎস খোঁজা হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, “ভাইরাসের মোকাবিলায় কেরল সরকারের উদ্যোগকে বাহবা দেব। প্রতিটি জেলার থেকে নমুনা সংগ্রহ করে অতিমারির উৎস সন্ধানের চেষ্টা করা হয়েছে ওই রাজ্যে। সেই সঙ্গে সংক্রমণ কী ভাবে ছড়াচ্ছে, তা বোঝার জন্য জিন সিকোয়েন্সিংয়ের সাহায্য নিয়েছিল কেরল সরকার।” তিনি জানিয়েছেন, কেরল সীমানার অপর প্রান্ত থেকে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে দেখে সেখান থেকে রাজ্যে প্রবেশকারীদের উপরেও কড়া নজর ছিল কেরল সরকারের। কেরলের পাশাপাশি পঞ্জাব এবং তামিলনাড়ু সরকারও তাঁদের সংস্থার সঙ্গে মিলিত হয়ে একই উদ্যোগ নিয়েছিল বলেও জানিয়েছেন এই গবেষক। তাঁর কথায়, “অতিমারি রুখতে অত্যাধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির সাহায্যে ভারতের প্রস্তুতিতে আমরা অভিভূত।”

ব্রিটেন বা ফ্রান্সের যে নয়া স্ট্রেনের সন্ধান মিলেছে, তাতে কি ভারতের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ রয়েছে? অনুরাগের মতে, “করোনা সংক্রমণের চূড়ান্ত পর্যায় বা ‘পিক’ পেরিয়ে এসেছে ভারত। সেরো সমীক্ষার রিপোর্ট বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে আমরা সংক্রমণের হাত থেকে মুক্তির পর্বে রয়েছি।” তা সত্ত্বেও অতিমারিকে অবহেলা না করার পরামর্শ দিয়েছেন অনুরাগ। কোভিডের সংক্রমণ এড়াতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা এবং হাত ধোওয়ার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা যে এখনও অত্যন্ত জরুরি, তা মনে করিয়ে দিয়েছেন আইজিআইবি-র ডিরেক্টর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy