Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus

সংক্রমণের শিখর পেরিয়ে এসেছে ভারত! অর্থ মন্ত্রকের দাবি ঘিরে প্রশ্ন

মন্ত্রকের যুক্তি, ১৭ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৪ দিনে সাত দিনের চলন্ত গড়ের হিসেবে দেখা যাচ্ছে, সংক্রমণ দ্রুত কমেছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০ ১৫:৩৯
Share: Save:

টিকা কবে বাজারে আসবে, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয় কেউ। তার মধ্যেই ভারতে করোনা-যুদ্ধে কি কিছুটা আশার আলো দেখাল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক? মন্ত্রকের দাবি, সেপ্টেম্বরেই সংক্রমণের সর্বোচ্চ শিখর পার করে এসেছে ভারত। ওই সময়ে প্রতিদিন নতুন আক্রান্তের সংখ্যার চলন্ত গড় যা ছিল, এখন তার চেয়ে অনেক কম। অথচ দৈনিক নমুনা পরীক্ষার গড় এখন ওই সময়ের চেয়ে অনেক বেড়েছে, যুক্তি দিচ্ছে অর্থমন্ত্রক। যদিও অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক নিশ্চিত করে কিছু বলেনি, বিজ্ঞানী-বিশেষজ্ঞরাও তেমন কোনও ইঙ্গিত দেননি, অথচ অর্থমন্ত্রক কী ভাবে সংক্রমণের চূডায় পৌঁছনোর কথা বলতে পারে? যদিও একই সঙ্গে অর্থমন্ত্রকের সাবধানবাণী, ‘অতিমারি এখনও শেষ হয়নি।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এক সময় বলেছিলেন যে, আমেরিকা সংক্রমণের শিখর পেরিয়ে এসেছে। কিন্তু তার পরেও ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা, শিখরে পৌঁছনোর যে হিসেব ধরা হয়েছিল, তার চেয়ে বেড়েছে। ট্রাম্প মুখে স্বীকার না করলেও কার্যত খারিজ হয়েছে সেই তত্ত্ব। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নিয়মিত বুলেটিনে মাঝে মধ্যেই এই প্রশ্ন ওঠে যে, ভারত কি সংক্রমণের শীর্ষে পৌঁছেছে। এই প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যকর্তারা অনেক বার বলেছেন যে, দেশের সর্বত্র এক সময়ে সংক্রমণ শীর্ষে পৌছবে, এমন নয়। বরং একেকটি সংক্রমণের এলাকাভিত্তিক শীর্ষে পৌঁছনোর তত্ত্ব সেই এলাকার পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে তার পর বলা যেতে পারে। তার মধ্যেও আবার কোনও এলাকায় আগে সংক্রমণ শুরু হয়েছে মানেই সেখানে আগে সংক্রমণ শিখরে পৌঁছবে, এমন তত্ত্বও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এখনও নিরন্তর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানী-বিশেষজ্ঞরা।

এমনই এক ঘোর অনিশ্চিত এবং ধোঁয়াশাময় পরিস্থিতির মধ্যেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক জানিয়ে দিল, নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের শিখর পেরিয়ে এসেছে ভারত। ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্তের পরিসংখ্যান, পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার, নমুনা পরীক্ষা— এই সব পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে এমন সিদ্ধান্তে আসা গিয়েছে বলে দাবি অর্থমন্ত্রকের। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট উল্লেখ করে মন্ত্রকের যুক্তি, ১৭ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৪ দিনে সাত দিনের চলন্ত গড়ের হিসেবে দেখা যাচ্ছে, সংক্রমণ দ্রুত কমেছে। এই সময়ের মধ্যে চলন্ত গড় ৯৩ হাজার থেকে কমে হয়েছে ৮৩ হাজার। অন্য দিকে, প্রতিদিন নমুনা পরীক্ষার সংখ্যার সাত দিনের চলন্ত গড় ১ লক্ষ ১৫ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ২৪ হাজার। অর্থাৎ প্রতিদিন বেশি মানুষের কোভিড-১৯ টেস্ট হচ্ছে, অথচ কম মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন।

আরও পড়ুন: দৈনিক সংক্রমণ নামল ৭৪ হাজারে, কমল সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও

আরও পড়ুন: কোভিডের চিকিৎসা চলাকালীন হাসপাতাল ছাড়ায় সমালোচনার মুখে ট্রাম্প

করোনা সংক্রমণের নিরিখে এই প্রবণতা সদর্থক হলেও, সেটা থেকেই দেশ সংক্রমণের শিখরে পৌঁছেছে-- এমন তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় না বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানী-বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অনেক দেশেই এমন নজির রয়েছে যে, সংক্রমণ ব্যাপক হারে কমার পরেও আবার বাড়তে বাড়তে আগের চেয়ে বেশি মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছে। অর্থাৎ, সংক্রমণের নির্দিষ্ট কোনও প্রবণতা এখনও স্থির করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। অর্থমন্ত্রকও অবশ্য সতর্ক করে বলেছে, ‘‘সারা ভারতে নিম্নমুখী সংক্রমণের হার আর্থিক গতিবৃদ্ধির পটভূমি তৈরি করেছে। তবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকেই প্রয়োজনীয় সাবধানতা বজায় রেখে কাজ করতে হবে। নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই মেনে চলতে হবে সামাজিক দূরত্ব বিধি। অতিমারি এখনও শেষ হয়নি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Coronavirus in India COVID-19 Coronavirus Peak
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy