আজ সারা দেশের করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
ঠিক তিন মাস আগে, ১৩ মার্চ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা বলেছিলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটি কোনও ‘স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা’ নয়। দেশে তখন কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮১।
সেই আশ্বাসের তিন মাসের মধ্যেই, আজ দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তিন লক্ষ পেরোল। মোট ৩,০৮,৮৯৩ জনের সংক্রমণের হিসেবে ভারত এখন বিশ্বে চতুর্থ। গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংক্রমিত ১১,৪৫৮ জন। আরও ৩৮৬ জনের মৃত্যুতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৮৮৪।
শুধু মহারাষ্ট্রেই আক্রান্ত ১,০১,১৪১ জন। তামিলনাড়ু দ্বিতীয়, আক্রান্তের সংখ্যা ৪০,৬৯৮। রাজধানী দিল্লিতে আক্রান্ত ৩৬,৮২৪ জন। দিল্লি-লাগোয়া গুরুগ্রামে শুধু ৩১ মে থেকে ১১ জুনের মধ্যে রোগীর সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে। ইতিবাচক পরিসংখ্যান একটাই। আজকের তারিখে দেশে ১,৪৫,৭৭৯ জন অ্যাক্টিভ রোগী। সুস্থের সংখ্যা বেশি— ১,৫৪,৩২৯ জন। সুস্থতার হার ৪৯.৯৪ শতাংশ।
আরও পড়ুন: আচমকা স্বাদ চলে যাওয়া, গন্ধ না পাওয়াও করোনার লক্ষণ, জানাল কেন্দ্র
আরও পড়ুন: করোনার ছোবল নয়, এ দেশে দরিদ্রতমদের ৩৯% মারা যান বিনা চিকিৎসায়
শনিবার দেশের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল ৩ লক্ষ।
আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন ও শীর্ষ আমলাদের নিয়ে সারা দেশের করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি প্রস্তাব দেন, দিল্লির উপ-রাজ্যপাল অনিল বৈজল এবং মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী। আগামিকাল সকাল ১১টায় সেই বৈঠক হবে। দিল্লি সরকার ইতিমধ্যেই তাঁবু খাটিয়ে ১০ হাজার শয্যার অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আজ প্রধানমন্ত্রীর পর্যালোচনা বৈঠকে নীতি আয়োগের সদস্য বিনোদ পাল ব্যাখ্যা করেন যে, মোট করোনা-আক্রান্তের দুই-তৃতীয়াংশ রয়েছেন পাঁচটি রাজ্যে। বড় শহরগুলিতে রোগীর বাড়বাড়ন্ত। হাসপাতাল ও আইসোলেশন বেডের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি নিয়ে রাজ্যগুলির সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্তাদের কথা বলার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি বর্ষার মুখে সুষ্ঠু ভাবে পরিস্থিতি সামলানোর জন্য তাঁদের প্রস্তুত থাকতেও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
১৬ ও ১৭ তারিখে আবার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে মোদীর। কংগ্রেসের বক্তব্য, ‘আনলক’ শুরুর পরেও এই বৈঠক আসলে সরকারের দিশাহারা অবস্থাটা বুঝিয়ে দিচ্ছে। চার দফা লকডাউনের লেখচিত্র টুইট করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী দেখিয়েছেন, ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখীই হয়েছে সংক্রমিতের সংখ্যা। সঙ্গে রাহুল লিখেছেন, ‘‘ভিন্ন ফলের আশায় একই কাজ বারবার করে যাওয়াই হল পাগলামি: বক্তা অজ্ঞাত।’’
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
রাহুলের দল আজ বলেছে, ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ থেকে ২ লক্ষে পৌঁছতে লেগেছিল ১৫ দিন। ২ থেকে ৩ লক্ষে পৌঁছেছে ১০ দিনে। পরপর দু’দিন প্রায় ১১ হাজার নয়া সংক্রমণ। অথচ নিজেদের ইচ্ছেমতো চলা মোদী সরকার দেশের নাগরিকদের বলছে আত্মনির্ভর হতে। অর্থাৎ তাঁরা যেন নিজেদের সমস্যা নিজেরাই মিটিয়ে নেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, করোনার বদলে বিজেপির নজর এখন পুরোপুরি রাজনীতিতে। মধ্যপ্রদেশের উপনির্বাচন, রাজ্যসভার আসন্ন নির্বাচনের জন্য বিধায়ক ভাঙাতেই ব্যস্ত মোদী-অমিতের দল।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy