ভারতীয় সেনাবাহিনীতে এই প্রথম সারমেয়র সাহায্যে কোভিড সংক্রমণ খোঁজার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
গন্ধ শুঁকে মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই কোভিডে আক্রান্তদের খুঁজে বার করছে ২ বছরের ক্যাসপার। ১ বছরের জয়াও কম যায় না। এ কাজে ক্যাসপারের মতোই সমান দক্ষ সে। শুধুমাত্র ঘ্রাণশক্তি দিয়েই এ কাজ করছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই দুই প্রশিক্ষিত সারমেয়।
ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ক্যাসপার এবং জয়াকে দিয়ে ৩ হাজার ৮০০ নমুনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। তার মধ্যে ২২ জনের সংক্রমণের কথা সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছে তারা। সংসদে পেশ করা একটি তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের সেপ্টেম্বরে দেশের সশস্ত্রকর্মীদের মধ্যে প্রায় ২০ হাজার কোভিড সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল। তার মধ্যে শুধুমাত্র সেনাবাহিনীতেই ১৬ হাজার আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল।
সংক্রমণের কথা কী ভাবে বোঝা যায়? ওই ২ সারমেয়র ট্রেনার জানিয়েছেন, কোভিড সন্দেহভাজনদের প্রস্রাব এবং ঘামের নমুনা সংগ্রহ করে একটি বাক্সে রাখা হয়। সেই নমুনার গন্ধ শুঁকে তা ‘পজিটিভ’ কি না, বলে দিতে পারে ক্যাসপার-জয়া। ‘পজিটিভ’ বোঝাতে নমুনার বাক্সের পাশে বসে পড়ে তারা। তাতেই বোঝা যায়, নমুনাটি ‘পজিটিভ। ভারতীয় সেনার এক পশু চিকিৎসক লেফ্টেন্যান্ট কর্নেল সুরিন্দর সাইনি বলেন, ‘‘দেহে প্রবেশের পর টিস্যুর ক্ষতি করে দেয় করোনাভাইরাস। ওই ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুগুলি থেকে মেটাবলিক মার্কার বিচ্ছুরিত হতে থাকে। মূত্র বা ঘামের মাধ্যমে তার নিঃসরণ ঘটে।’’
সেনা আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, অন্যান্য সারমেয়র তুলনায় ‘ককার স্প্যানিয়েল’ প্রজাতির কুকুর ক্যাসপার এবং ‘চিপ্পিপারাই’ প্রজাতির জয়া অতি দ্রুত কোভি়ড সংক্রমণ ধরে ফেলতে পারে। প্রথামাফিক আরটি-পিসিআরটি টেস্টের মাধ্যমে সংক্রমণ খোঁজার আগেই কোভিড রোগীদের চিহ্নিত করে তারা। চণ্ডীগড়ের এক সেনা শিবিরে, লাদাখ এবং কাশ্মীরে মোতায়েন সেনাকর্মীদের পরীক্ষার জন্য তাদের কাজে লাগানো হচ্ছে জানিয়েছেন ওই আধিকারিকেরা।
ভারতীয় সেনাবাহিনীতে এই প্রথম সারমেয়র সাহায্যে কোভিড সংক্রমণ খোঁজার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। যদিও ব্রিটেন, ফিনল্যান্ড, রাশিয়া, ফ্রান্স, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, জার্মানি এবং লেবাননে আগেই সারমেয়দের দিয়ে সংক্রমিতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। ওই দেশগুলিতে বিমানবন্দর ও রেল স্টেশনে এই ব্যবস্থা চালু রয়েছে। লেফ্টেন্যান্ট কর্নেল সুরিন্দর বলেন, ‘‘পূর্বে মেডিক্যাল পরীক্ষায় ক্যানসার, ম্যালেরিয়া, ডায়াবিটিস বা পার্কিনসন্সের মতো রোগ চিহ্নিত করতে সারমেয়দের ব্যবহার করা হয়েছে। তবে কুকুর দিয়ে কোভিড খোঁজা এই প্রথম।’’
ক্যাসপার এবং জয়ার সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে সেনাবাহিনী সংক্রমিতদের খোঁজার কাজে আরও ৮টি কুকুরকে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সাধারণত এক-একটি কুকুরকে এ কাজে দক্ষ করে তুলতে ৩৬ সপ্তাহ লাগে। তবে আমরা মাত্র ১৬ সপ্তাহের ট্রেনিংয়েই তাদের দক্ষ করে তুলতে পেরেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy