আক্রান্তের সঙ্গে সঙ্গে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যাও বেড়েছে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে। ছবি: রয়টার্স।
দেশে হু হু করে বাড়ছে করোনাভাইরাসের শিকার। সরকারি স্তরে করোনা-আক্রান্তের তথ্য সংগ্রহ করার প্রায় ৪৮ দিনের মধ্যেই এ দেশে প্রথম হাজার সংক্রমিতের মৃত্যু হয়। তবে সেই সংখ্যক আক্রান্তেরই মৃত্যু হয়েছে প্রায় চার দিনে। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই করোনায় মৃতের সংখ্যার পার করেছে ৬ হাজার। সেই সঙ্গে মাত্র চার দিনেই মৃত্যু হয়েছে ৯০০ সংক্রমিতের।
কত দ্রুত গতিতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ? তা বোঝা যাবে একটি পরিসংখ্যানেই। গত ২৬ এপ্রিল দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমিতের সংখ্যা ২৫ হাজার ছুঁয়েছিল। আর তার মাত্র ছ’সপ্তাহের মধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে যায় ২ লক্ষ ২৭ হাজারের কাছাকাছি। শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছুঁয়েছে ২ লক্ষ ২৬ হাজার ৭৭০-এ।
আক্রান্তের সঙ্গে সঙ্গে করোনায় মৃতের সংখ্যাও বেড়েছে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গত ১২ মার্চ। এর ৪৮ দিনের মাথায় সংখ্যাটা ছাড়িয়ে যায় হাজারের গণ্ডি। ২৯ এপ্রিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানায়, ভাইরাস-আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৮ জনের। এর ১১ দিনের মধ্যেই ২ হাজারের গণ্ডি অতিক্রম করে তা। তার পরের আট দিনে তা ৩ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর এক সপ্তাহের মধ্যে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ছা়ড়ায় ৪ হাজারের বেশি। পরের ছ’দিনে প্রথম বার তা পাঁচ হাজারের গণ্ডি পেরিয়ে যায়। ৪ জুনে দেখা যায়, তা ছাড়িয়েছে ৬ হাজারেরও বেশি। এ দিন সকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত দেশ জুড়ে করোনায় মৃত্যু হয়েছে মোট ৬ হাজার ৩৪৮ জনের।
আরও পড়ুন: বাড়ছে করোনা, কলকাতা পুরসভা বাড়ি বাড়ি দিচ্ছে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন
আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তাই এক বছর কোনও নতুন প্রকল্প নয়, জানাল অর্থমন্ত্রক
করোনাভাইরাসের গ্রাস থেকে মানুষজনকে বাঁচাতে লকডাউনের দাওয়াই দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। গত ২৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন, ২১ দিনের জন্য চলবে লকডাউন। এর পর বার বার লকডাউনের সময়সীমা বাড়ালেও দেশে কোভিড-আক্রান্তের সংখ্যা রাশ তো টানা যায়ইনি। উল্টে তার গ্রাফ ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রগুলিকে চাঙ্গা করতে লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্তের ফলে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যায় আরও কতটা বৃদ্ধি ঘটবে, তা নিয়েও চিন্তিত কেন্দ্র ও রাজ্য— দুই সরকার। এ নিয়ে পঞ্চম দফার লকডাউন বা ‘আনলক ১’ চলাকালীন বেশ কিছু নির্দেশিকাও জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
আগামী সোমবার থেকে ধর্মীয়স্থল, সিনেমা হল বা শপিং মলের মতো একসঙ্গে অনেক জনের জমায়েত হয়, এমন জায়গার দরজা খুললেও বেশ কিছু সতর্কতা মাথায় রাখতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। সেই সঙ্গে ওই সব জায়গায় যেতে ইচ্ছুকদেরও মেনে চলতে হবে বেশ কিছু নিয়ম। যদিও কন্টেনমেন্ট জোনে এ ধরনের কোনও ছাড়ই পাওয়া যাবে না। সেখানে লকডাউন চলবে আগের মতোই। লকডাউনে এই শিথিলতার জন্য আগামী কয়েক মাসে দেশে করোনা-আক্রান্তের গ্রাফ আরও ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পর্যবেক্ষকেরা। তাঁদের মতে, করোনার বাস্তবতাকে মাথায় রেখেই কী ভাবে একে এড়িয়ে জীবনযাপন করা যায়, তা-ই শিখতে হবে সকলকে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy